নিউজ সোশ্যাল বার্তা: যুব সমাজই দেশের ভবিষ্যৎ। আর সেই যুব সমাজের জন্যই স্বামী বিবেকানন্দের ১৫৭ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ১২ ই জানুয়ারি ২০২০ যুব দিবস উৎযাপনের সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয় ২৩ তম জাতীয় যুব উৎসব। উত্তর প্রদেশের রাজধানী লক্ষ্ণৌ শহরের ইন্দিরা গান্ধী প্রতিষ্ঠানে কেন্দ্র সরকার ও উত্তর প্রদেশ সরকারেরর যৌথ উদ্যোগে এই জাতীয় যুব উৎসব। এই উৎসবের মূল আকর্ষণ ছিল সারা ভারতের নানান সংস্কৃতির মিলনোৎসব।
১২-১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত এই উৎসব চলে। যাতে জাতীয় সেবা প্রকল্প এবং নেহরু যুব কেন্দ্র সংস্থান ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের প্রায় সাত হাজার সেচ্ছাসেবক অংশগ্রহণ করে।
১২ জানুয়ারি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অনুপস্থিতিতে উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মাননীয় যোগী আদিত্যনাথ মহাশয় এই উৎসবের শুভ উদ্বোধন করেন। উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় যুবকল্যান মন্ত্রকের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী কিরেন রিজিজু, উত্তর প্রদেশ সরকারের বিশিষ্ট মন্ত্রীবর্গ ও বিভিন্ন রাজ্য থেকে আগত জাতীয় সেবা প্রকল্প এবং নেহরু যুব কেন্দ্র সংস্থানের বিশিষ্ট অধিকারিকবৃন্দ। ১২ জানুয়ারি, রবিবার সকালে এই অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয় বিভিন্ন রাজ্য থেকে আগত জাতীয় সেবা প্রকল্পের স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে পরিচালিত এক রাজ্যভিত্তিক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মাধ্যমে। আর শোভাযাত্রার পরেই মূল অনুষ্ঠানের সূচনা হয়।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী বক্তব্য হিসেবে একটি ভিডিও বার্তায় দেশের যুব সমাজের প্রতি বেশ কিছু অনুপ্রেরণামূলক কথা বলেন। তিনি বলেন, “আজকের দিনে স্বামী বিবেকানন্দের রূপে ভারতবর্ষ পেয়েছিল এমন একজন ব্যক্তিত্বকে, যিনি আজও আমাদের শক্তি প্রদান করে চলেছেন। যিনি আজও আমাদের কাছে প্রেরণাদাতা। আজও আমাদের কাছে পথপ্রদর্শক।” এর পর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সারা ভারত থেকে আগত যুব সমাজকে ভারতের শক্তি ও সামর্থের কথা মনে করিয়ে বলেন, “আজ ভারতই সারা বিশ্বকে নতুন পথ দেখিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, বিশেষ করে আধুনিক প্রযুক্তি এবং স্পেকট্রামের ক্ষেত্রে।“ তিনি আরও বলেন, – “বন্ধুগন, ২৩ হাজার নতুন স্টার্টআপ যেকোনো দেশের কাছেই স্বপ্নের বিষয়, কিন্তু সেই কাজ আজকে ভারত করে দেখিয়েছে, এর পেছনে তো আপনাদেরই সহযোগিতা রয়েছে।” – এভাবেই তিনি উপস্থিত সকল যুবক যুবতীদের উৎসাহ ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। এরপর উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মাননীয় যোগী আদিত্যনাথ যুবদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন। আর এভাবেই শুরু হয় ২৩তম জাতীয় যুব উৎসবের।
এই উৎসবে বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। উৎসবের দ্বিতীয় দিনে একাঙ্ক নাটক, লোকনৃত্য, লোকগান, হিন্দুস্থানী সঙ্গীত, ধ্রুপদী নৃত্য, ভারত নাট্যম ইত্যাদিরও আয়োজন করা হয়েছিল, একইসঙ্গে যুব কৃতি, সম্মাননা প্রদান, পুরস্কার প্রদান, ফুড ফেস্টিভ্যাল, যুব সম্মেলন, ইয়াং আর্টিস্ট ক্যাম্পসহ অনেক কিছুই।
এই উৎসবে ভারতবর্ষের অন্যান্য রাজ্যের অংশগ্রহণকারীদের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মোট ৫০ জন জাতীয় সেবা প্রকল্পের স্বেচ্ছাসেবক যোগদান করে, যার নেতৃত্বে ছিলেন নওপুকুরিয়া জে. জে. হাই স্কুলের শিক্ষক মাননীয় অমিত কুমার মণ্ডল এবং শ্রীরামপুর কলেজের অধ্যাপিকা ডঃ স্নিগ্ধা ভট্টাচার্য মহাশয়া। পশ্চিমবঙ্গের অংশগ্রহণকারীরা বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, যুব সম্মেলন, লোকনৃত্য, ভারত নাট্যম ইত্যাদিতে অংশগ্রহনের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতিকে সুচারুভাবে সকলের সামনে তুলে ধরে। প্রোগ্রাম অফিসার অমিত কুমার মন্ডল বলেন, সাংস্কৃতিক অংশগ্রহন আমাদের সকলের মধ্যে উৎসাহের সঞ্চার করেছিল সত্যি, তবে পুরুলিয়ার বিখ্যাত ছৌ নাচ যেন লক্ষৌতে সকল রাজ্য থেকে আগত মিনি ভারতবর্ষে অন্যমাত্রা এনে দিয়েছিল। অংশগ্রহনকারী সকলেই এই উৎসবে যোগদান করতে পেরে যথেষ্টই আনন্দিত। তাদের মধ্যে মাম্পি,মেহেলী, কৃষ্ণেন্দু, বিকাশদের কথায়, বাংলার সংস্কৃতির কোনো তুলনা হয় না, বাংলা এক মিশ্র সংস্কৃতির রাজ্য, যার সঙ্গে কোনো তুলনা করা যায় না। এমনকি তারা সকলের পক্ষ থেকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে পশ্চিমবঙ্গ জাতীয় সেবা প্রকল্পের আঞ্চলিক আধিকারিক মাননীয়া শরিতা পাটিল সহ অন্যান্য আধিকারিদের যারা এরকম একটা সুন্দর অনুষ্ঠানে অংশগ্রহনের সুযোগ করে দিয়েছেন।