অভিজিৎ হাজরা, শ্যামপুর, হাওড়া :- গ্ৰামীণ হাওড়া জেলার শ্যামপুরের যুবক অনিমেষ মাজী বাবার চা আর চানামশলার দোকানে বাবার সঙ্গে থাকতে থাকতেই নেশা চেপেছিল দেশ ঘুরে দেখার। সেই নেশাকে বাস্তবায়িত করতে তার কাছে হাতে থাকা আড়াই হাজার টাকা ও একটি সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়েছিল অজানা পথের উদ্দেশ্যে।প্রায় দেড় বছর সাইকেলে চেপে দেশের বিভিন্ন রাজ্যের সাড়ে পঁচিশ হাজার কিলোমিটার পথ পরিক্রমা করল গ্ৰামীণ হাওড়া জেলার শ্যামপুর থানার কাঁঠালদহ গ্ৰামের যুবক অনিমেষ মাজী।
শ্যামপুরের একটি সিনেমা হলের বিপরীত দিকে একটি চা আর চানামশলার দোকান আছে অনিমেষের বাবার। অনিমেষ বাবার সঙ্গে দোকানে থেকে বাবাকে দোকান চালাতে সাহায্য করত। দোকানে থাকতে থাকতে প্রচার মাধ্যম দেখে, দোকানে আসা বিভিন্ন লোকের আলোচনা শুনে নানান দেশ ঘুরে দেখার নেশা চেপেছিল। সেই নেশা ও ইচ্ছাশক্তিতে ভর করে একটি সাইকেল ও হাতে থাকা আড়াই হাজার টাকা নিয়ে ২০২১ সালের ৭ ই অক্টোবর বাড়ি থেকে বের হয় অনিমেষ মাজী।ছত্রিশগড়, উড়িষ্যা, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা সহ একের পর এক রাজ্যের সাড়ে পঁচিশ হাজার কিলোমিটার পথ পরিক্রমা করল।
এই প্রসঙ্গে অনিমেষ মাজী জানালেন, ‘ দেড় বছর ভ্রমণের বিভিন্ন দ্রষ্টব্য স্থান ঘোরাঘুরির পাশাপাশি প্রত্যন্ত রাস্তায় ঘুরেছি। সেখানকার মানুষের সঙ্গে খাওয়া দাওয়া করেছি। বিভিন্ন রাজ্যের বিভিন্ন স্থানের সেখানকার সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হয়েছি ‘ । অনিমেষ আরও বলেন,’ ভ্রমণের সময় জঙ্গলের পাশাপাশি পাহাড়,বরফ এমনকি খোলা আকাশের নীচে ঘুমিয়েছি। আমি আমার গ্ৰাম ও আশপাশ গ্ৰামের মানুষকে আমার ভ্রমণের অভিজ্ঞতা জানাতে চাই। বিভিন্ন রাজ্যের বিভিন্ন স্থান ঘোরার জন্য টাকার প্রয়োজন ছিল। আমার হাতে থাকা আড়াই হাজার টাকা প্রায় শেষ হতে বসলে টাকার প্রয়োজনে বিভিন্ন জায়গায় ছয় থেকে সাত দিন ধরে কাজ করেছি। বেশি টাকার প্রয়োজনের জন্য রাত জেগে ও কাজ করেছি’ ।
অনিমেষ কথা প্রসঙ্গে বলে, ‘ আমি দেশ ভ্রমণের জন্য প্রথম দিকে একটি বাইক কেনার পরিকল্পনা করেছিলাম। তারপর চিন্তা -ভাবনা করি বাইক কেনার জন্য যে টাকার প্রয়োজন সেটা জমাতে গেলে অনেক বছর লাগবে। সেই কারণে বাইক কেনার কথা মাথা থেকে সরিয়ে আমার নেশা ও ইচ্ছা কে বাস্তবায়িত করার জন্য সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়েছিলাম। আমার এই দেশ ভ্রমণে বিভিন্ন রাজ্যের মানুষ বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করেছে। উৎসাহিত করেছে। আমার পাশে থেকেছে।