পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্তে পালিত হলো আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস

Social

সোশ্যাল বার্তা: বাঙালি নিজেদের মায়ের ভাষা রক্ষা করার জন্য এবং বাংলায় কথা বলার জন্মগত অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রাণ উৎসর্গ করেছিলেন।

ভারত বাংলাদেশ পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্তে পালিত হলো আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। একুশে ফেব্রুয়ারি শুক্রবার সকাল থেকেই দুই বাংলার কবি, সাহিত্যিক, শিল্পী, রাজনীতিবিদ ও সীমান্তবর্তী গ্রামের মানুষের সমরোহে মুখর হয়ে উঠে ভারত বাংলাদেশের পেট্রাপোল ও বেনাপোল সীমান্ত।

ভারত বাংলাদেশ যৌথভাবে গঙ্গা পদ্মা ভাষা ও মৈত্রী সমিতির উদ্যোগে সীমান্তবর্তী প্রায় ২৫টি সংগঠন শুক্রবার সীমান্তের পেট্রাপোল ও বেনাপোলের এই মিলন মেলার সূচনা করে।

বাংলাদেশের বেনাপোল পৌরসভা আর এদেশের বনগাঁ পৌরসভার বেনাপোলের শূন্য রেখা থেকে মাত্র ২০০ মিটারের দূরত্বে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একুশে মঞ্চ’। ভারত ও বাংলাদেশের শিল্পীরা এই দুই মঞ্চে বসে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন।

কড়া নিরাপত্তার মধ্যেও কয়েক ঘণ্টার জন্য যেন উধাও হয়ে যায় সীমান্তের কাঁটাতার। দুই বাংলার মানুষ সীমান্তে মিলিত হয় আলিঙ্গনে। মেতে ওঠেন আড্ডা ও স্মৃতিচারণে।

এদিন সকালে আয়োজকরা আগে থেকেই নিজ নিজ ভূখণ্ডে অপেক্ষায় ছিলেন। ভারতের সীমানা পেরিয়ে বাংলাদেশে পা রাখেন বাংলার প্রশাসনিক কর্তা, কবি, শিল্পী, সাংবাদিক ও সাহিত্যিকদের একটি প্রতিনিধিদল। তাদের অভ্যর্থনা জানান ওপার বাংলার যশোরের শার্শা আসনের এমপি শেখ আফিল উদ্দিনসহ আরও অনেকে।
জয়ন্তিপুর বাজার থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা করে সীমান্তে যান বনগাঁর স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী থেকে বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যরা।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাঠানো পুষ্পস্তবক তাঁর হয়ে শহিদ বেদিতে অর্পণ করেন বনগাঁ পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার জয়িতা বোস। সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফে শহিদ বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বনগাঁ পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল শেঠ। এছাড়াও পেট্রাপোল থানার ওসি গণেশ বাইন, ছয়ঘরিয়া পঞ্চায়েতের প্রধান প্রসেনজিৎ ঘোষ, বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস সহ অন্যান্যরা।

উদ্যোক্তারা জানান, ২১শে ফেব্রুয়ারি বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার ভাবি জানিয়ে পূর্ববঙ্গের রাজধানী ঢাকায় ১৯৪৭ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বরে ভাষা-বিক্ষোভ শুরু হয়। ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি তার চরম প্রকাশ ঘটে।

ঐদিন সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা ১৪৪ ধারা অমান্য করে রাজপথে বেরিয়ে এলে পুলিশ তাদের ওপর গুলি চালায়। এতে আবুল বরকত, আবদুল জব্বার,রফিক, আবদুস সালামসহ ছাত্রযুবা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন অনেকেই আহত হন।

১৯৯৮ সালে কানাডাতে বসবাসরত দুই বাঙালি রফিকুল ইসলাম এবং আব্দুস সালাম প্রাথমিক উদ্যোক্তা হিসেবে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণার আবেদন জানিয়েছিলেন জাতিসংঘের মহাসচিব কফি আনানের কাছে । ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ই নভেম্বর অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর প্যারিস অধিবেশনে প্রস্তাব উত্থাপন করা হয় ও এতে ১৮৮টি দেশ সমর্থন জানালে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

Leave a Reply