মলয় দে নদীয়া :-নদীয়ার শান্তিপুর বাজারের নিকট সিদ্ধেশ্বরী তলার অন্নপূর্ণা পূজো এ বছর ১৭০ তম বর্ষে পদার্পণ করলো । পুজো আগামীকাল ষষ্ঠী থেকে সূচনা হয়ে সপ্তমী অষ্টমী এবং নবমী প্রতিদিনই চলবে পুজো এবং ভোগ বিতরণ। দশমীতে বিসর্জনের অপরূপ শোভাযাত্রা দেখতে উপস্থিত হন সমগ্র শান্তিপুরবাসী।
জানা যায়, বহু পূর্বে শান্তিপুর গোপালপুর সাহা এস্টেটের বেশ কিছু দোকান ছিল ওই অঞ্চলে, তাদেরই পূর্বপুরুষ কুঞ্জ বিহারী সাহা অন্নপূর্ণা পূজোর সৃষ্টি করেন। পরবর্তীতে, স্থানীয় স্বর্ণকার ও কাঁসারীরাও অংশগ্রহণ করে। কালক্রমে জমিদারি প্রথার বিলোপ হলে সাহাদের কাছ থেকে পুজোর কর্তৃত্ব স্বর্ণকারদের পরিচালনায় যায়। বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পী সমিতি শান্তিপুর শাখার তত্ত্বাবধানে বহু বছর ধরে পূজিত হয়ে আসছেন মা অন্নপূর্ণা।
আজ পঞ্চমীর শুভ লগ্নে আনুমানিক ৫০ টি প্রান্তিক পরিবার কে শীতবস্ত্র প্রদান, করেএই পুজোর শুভ সূচনা করেন, বিধায়ক ব্রজ কিশোর গোস্বামী। উপস্থিত ছিলেন শান্তিপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান সুব্রত ঘোষ , ভাইস চেয়ারম্যান কৌশিক প্রামানিক, স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রশান্ত গোস্বামী সহ বঙ্গীয় স্বর্ণ শিল্পী সমিতির রাজ্য ও জেলা নেতৃত্ব।
উদ্যোগীরা জানান, সম্প্রতি ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং পৌরপতি মন্দিরের সামনের অঙ্গন বাঁধাই, হাইমার্স লাইট এবং সামনে অবস্থিত সিদ্ধেশ্বরী মন্দিরে পানীয় জলের ব্যবস্থা করেন। এবারে পুরসভার কাছে, মায়ের নামে থাকা পুকুরের পাড় বাঁধিয়ে সৌন্দর্যায়নের ব্যবস্থা, এবং বিধায়কের কাছে স্বর্ণ শিল্পীদের বিশেষ সুযোগ সুবিধার দাবি রাখেন।
পূরাণ মতে দেবাদিদেব মহাদেবের সঙ্গে মতবিরোধের জেরে একবার দেবী পরিত্যাগ করেন কৈলাস। তারপরই শুরু হয় মহামারি, হাহাকার। সেই সময় যে দেবীর কাছ থেকে শিব ভিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন, ও ধরিত্রীকে রক্ষা করেছিলেন, তিনিই হলেন অন্নপূর্ণা। দেবী কেবল মহাদেবের ঝুলি পূর্ণ করেছিলেন তাই নয়, তাঁর কৃপায় ধরায় ঘুচে যায় খাদ্যাভাব। ধরিত্রী পূর্ণতা পায় অন্নে! এভাবেই পুজোর ব্যাখ্যা করলেন বিধায়ক ব্রজ কিশোর গোস্বামী। চেয়ারম্যান সুব্রত ঘোষ জানালেন, মায়ের ইচ্ছাতেই মা আমাদের দিয়ে করিয়ে নিয়েছেন বেশ কিছু কাজ, আগামীতেও তিনিই করিয়ে নেবেন ।
আজ থেকেই, ক্ষুদে শিল্পীদের নাচ গান আবৃত্তি শুরু হয়েছে। গৃহিণীরা কাল থেকে থাকবেন পুজোয় ব্যস্ত। পাড়ায় বসেছে মেলা, চলবে দশমী পর্যন্ত।