মলয় দে নদীয়া : কবিগুরুর ভাষায় ওঁরা কাজ করে নগরে প্রান্তরে। আজ প্রজাতন্ত্র দিবসেও। সংসারের খরচ চালাতে, সমাজের সকল ভার ওরা হাসিমুখে তুলে নিয়েছে মাথায়। ওঁরা কুলি, মুটে মজুর। ব্যবসায়ীদের লক্ষ লক্ষ টাকার আমানত ওদের মাথায়। রোদ জল ঝড় তুফান কাটিয়ে মালিকের দেওয়া আমানত বিশ্বাসের সাথে বয়ে নিয়ে যায়। কখনো বা মালিকের হারিয়ে যাওয়া , বোঝা নিজেরাই খুঁজে পৌঁছে দিয়ে আসে বাড়ি। ভিড় ট্রেনে অথবা বাসের মাথায় মালিকের ব্যবসায়িক পণ্যসহ বসার জায়গা নিশ্চিত করে দিয়ে আসো তারাই। মাথায় যত মূল্যবান জিনিসই থাকুক না কেনো লক্ষ্য স্থির, মালিকের হাতে তা পৌঁছে দিয়ে সামান্য অর্থ মজুরি বাবদ হাত পেতে নেওয়া।
ব্যতিক্রমী দুই একটি ঘটনা বাদে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তাদের কপালে জোটে না আপনি সম্বোধন, কখনো তুমি কখনোবা তুই! লক্ষ লক্ষ টাকার গাড়ি-বাড়ি সহায় সম্পত্তি ঐশ্বর্য সবই তাদের কৃপায়, অথচ তাদের বয়স জনিত কারণে ভারোত্তোলন কর্মক্ষমতা হারালে, চিকিৎসার ন্যূনতম খরচও জোটে না। পরিবারের ছোট্ট সদস্যটাও সংসারের খরচের অর্থ জোগাড়ের জন্য আবার তৈরি হয় কুলি মুটে মজুর।
ব্যবসায়ীদের মাথায় অবশ্যই লাভ লোকসানের হিসাব। অতশত বোঝার ফুরসৎ হয়তো তাদের নেই। তবে শান্তিপুরের সামাজিক সংগঠন সেতু, আজ প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন চেষ্টা করেছে স্বর্গ এবং পাতালের সেতুবন্ধন ঘটাতে।
তাদের সদস্যরা ব্যাচ উত্তরীয় ফুলের তোড়া মিষ্টির প্যাকেট নিয়ে হাজির হয়েছিলো শান্তিপুরের জগৎ বিখ্যাত চারটি তাঁত শাড়ির হাটে। যেখানে আনুমানিক প্রায় ৭০ জনেরও অধিক এ ধরনের সমাজের গুরুত্বপূর্ণ মানুষকে সংবর্ধিত করে। সম্মান এবং উৎসাহিত করে সমাজে তাদের কাজকে। মালিকপক্ষকেও এই সংবর্ধনার মধ্য দিয়েও চেতনার বিশেষ এক বার্তা প্রদান করে।
অন্যদিকে সংবর্ধনা পেয়ে মুটে মজদুরগণ, আপ্লুত তারা বলেন, আগামীতে ইউনিয়ন গঠনের মাধ্যমে সরকারি বিভিন্ন সহযোগিতা প্রয়োজন। এ বিষয়ে সেতু সংগঠনের পক্ষ থেকে জনপ্রতিনিধিদের ডেকে একটি সেমিনার করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে।