মলয় দে নদীয়া :-টুসু উৎসব বা মকর পরব একটি লোকউৎসব, যা বাংলা অগ্রহায়ণ মাসের শেষ দিনে শুরু হয় আর শেষ হয় পৌষ সংক্রান্তি বা মকর-সংক্রান্তির পুণ্যলগ্নে। টুসু এক লৌকিক দেবী যাকে কুমারী হিসেবে কল্পনা করা হয় বলে প্রধানত কুমারী মেয়েরা টুসুপূজার প্রধান ব্রতী ও উদ্যোগী হয়ে থাকে।
অগ্রহায়ণ মাসের সংক্রান্তি থেকে পৌষ সংক্রান্তি পর্যন্ত একমাস টুসুর সঙ্গে নিজেদেরই সুখ-দুঃখের কথা ভাগ করে , গান বাজনা আনন্দকরে আগামীকাল মকর সংক্রান্তির দিনে দুপুরে টুসুকে বিদায় দিয়ে শ্বশুরবাড়ি পাঠানো।
আদিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে, বাদনা পরব, করম পুজো , ভাদু থাকলেও টুসু হঠাৎ আজকের দিনের অনুষ্ঠান সবচেয়ে বেশি। পরিবারের মহিলারা মাটির সরায় গুঁড়োসিঁদূর,কাজল ,বাঁদুফুল,ধান- দুর্বা,গাঁদাফুল,সরষে ফুল, কাঁইচ বীচ, গোবর ঢেলা সামনে নিয়ে
সন্ধ্যা বেলা গানের সুরে মাদলের তালে চিরাচরিত রীতি অনুযায়ী, বিভিন্ন পারিবারিক ঘরোয়া অনুষ্ঠান হয়ে থাকে।
নদীয়ার আসানগর, ভীমপুর, শান্তিপুর কৃষ্ণনগর সহ একাধিক জায়গায় আদিবাসীদের এই অনুষ্ঠান দেখা যায়।
শান্তিপুর শহরের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের মাহাতো পাড়ায়, এবং ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের রামনগর চর এলাকায় , যেখানে প্রতি ঘরে ঘরে অনুষ্ঠান উপলক্ষে দেওয়া হয়েছে আলপনা। ঢেঁকি যাঁতা এখন আর না থাকলেও নতুন কলাইয়ের ডাল , নতুন ধানের আতপ চাল, তিল, খেজুরের গুড় দিয়ে নানা পিঠে পুলি সামগ্রী তৈরি করে থাকেন গৃহিণীরা। যুবক যুবতীরা মাদলের তালে গান-বাজনা করে। সারারাত এভাবে গান বাজনার পর আগামীকাল টুসুর বিসর্জন।
কেন্দ্রীয় রাজ্য বর্তমান দুই সরকারই, আদিবাসীদের শিক্ষা সংস্কৃতি জীবন জীবিকা নিয়ে নানান প্রকল্প গ্রহণ করেছে। তাদের সংস্কৃতি, সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরার জন্য এবং তাদের উপার্জনের কথা মাথায় রেখে, বিভিন্ন সরকারি অনুষ্ঠানে তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়।
তবে এ সকল ব্যবস্থায় প্রয়োজনের তুলনায় যৎসামান্য।