মলয় দে নদীয়া :-বাংলা তথা বাঙালির বারো মাসে তেরও পার্বন। মকর সংক্রান্তির দিনেই পালিত হয় এই উৎসব পৌষ পার্বন উৎসব।
আর এই পৌষ মাস হচ্ছে বাঙ্গালীদের কাছে একটা বিশেষ মিষ্টি পূর্ণ উৎসব। মকর সংক্রান্তি মানেই পিঠেপুলি। সারা বছর এই দিনটার অপেক্ষায় থাকে যেমন বাড়ির ছোট থেকে বড় সকলেই ,তেমনি অপেক্ষায় থাকে মৃৎশিল্পীরা।
মৃৎ মানে মাটি, আর শিল্প মানে সুন্দর সৃষ্টিশীল পদার্থ। মাটি দিয়ে তৈরি এই শিল্পকর্মের মধ্যে রয়েছে এখন পিঠে তৈরির ছাঁচ।
আর এই ছাঁচ তৈরীর প্রধান শিল্পী হলো কুমোর সম্প্রদায়। প্রাচীন কাল থেকেই মৃৎশিল্প বিভিন্ন সভ্যতায় অনেক মর্যাদা লাভ করেছে। এদিন দেখা গেলো নদীয়ার শান্তিপুর নবদ্বীপ সহ বিভিন্ন শহর এবং গ্রাম এলাকায় বিভিন্ন এলাকায় কারিগরদের হাতের নৈপুণ্য জ্ঞানে মাটি দিয়ে তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের পিঠে তৈরির ছাঁচ। মাটির এসব তৈরিতে দরকার হয় এঁটেল মাটি। তবে এবছর ছাঁচের চাহিদা যথেষ্ট বেড়েছে বলে দাবী করেন নবদ্বীপের এক মৃৎশিল্পী গৌরী রানী পাল। তিনি আরও বলেন, এই লকডাউনের পর থেকে এ বছর চাহিদা বেড়েছে ছাঁচের। দামও ভালোই বেড়েছে। তবে কাঠ, মাটির সহ বিভিন্ন কাচামালের মূল্য অতিরিক্ত বাড়ায় ছাঁচের তেমন লাভ বাড়েনি। এবছর কমবেশি জোড়া ৪০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে এই ছাঁচ ।
তবে এখানেই সমাপ্তি নয়,কারন এই পিঠে পুলি তৈরী করতে যেসব উপাদান প্রয়োজন হয়,যেমন চালের গুঁড়ি , খেজুর গুড় ।আর এসব জিনিসের দাম এখন খুব বেশি।তাই ইচ্ছা থাকলেও গৃহস্থের পক্ষ এখন বেশি করে এইসব জিনিস তৈরি সম্ভব হচ্ছেনা।
কিন্তু নিয়ম রক্ষা করতে গিয়েও তাদের অনেক অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। যেমন খেজুরের গুড়ের দাম এবছর খুব বেশি তার কারন সময় মতো ঠান্ডা না পড়লে রস হয় না,এবছর প্রথম দিকে সেরকম শীত না পড়ায় গুড়ের যোগান কম থাকায় বাজারে গুড়ের দাম বেশি।
।এবিষয়ে একজন বিক্রেতার থেকে জানা গেল বাজারে চাহিদা থাকলেও জোগান কম থাকায় এবছর গুড়ের দাম একটু বেশি।
তবু ও পারিবারিক রীতি মেনে সকলের মনকে খুশি করতে পরিবারের কত্তা কে এইসব জোগাড় করতে নাজেহাল হতে হচ্ছে সকলকে।সব মিলিয়ে মজর সংক্রান্তির নিয়ম রক্ষাকরতে পকপট খালির জোগাড় মধ্যবৃত্তের। শান্তিপুরের শিল্পী বাপি পাল, জানালেন শুধু জনসংখ্যার নিরিখে নয় সৌখিনতার দিক থেকেও বেড়েছে পিঠে পুলি তৈরীর প্রবণতা। সাবেকীআনা ধরে রাখতে মরিয়া এ প্রজন্মও। তাই সারা পিঠে তৈরির ছাঁচ রেকর্ড বিক্রি হয়েছে এবছর।