দিল্লির দুর্গাপুজোতে বাংলার সাজ ! 

Social

মলয় দে, নদীয়া :- দিল্লিতে বিভিন্ন বাড়ি এবং বারোয়ারী মিলিয়ে আনুমানিক দু হাজার দুর্গাপুজো হয়। কিন্তু সকলের নজর থাকে দক্ষিণ দিল্লির জিকে টু সি আর পার্কের পাশে ব্যানার্জি বাড়ির দিকে। শতবর্ষ প্রাচীন ওই প্রতিমার বিশেষত্ব হলো বাংলার খাস সাজ। মৃৎশিল্পী থেকে ঢাকি পূজোর উপকরণ যাবতীয় সবই পাওয়া যায় দিল্লিতে। কিন্তু বাংলার রীতিনীতি ঐতিহ্য পরম্পরা আবেগ ধরে রাখতে ব্যানার্জি পরিবারের সদস্যরা দশকর্মার বাজার পর্যন্ত করে থাকেন এই বাংলা থেকে।

পরিবার সদস্য সম্রাট বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা অনুযায়ী, কৃষ্ণনগরের মৃৎশিল্পী মানিক পাল এবং সাজসজ্জা শিল্পী নরেন মালাকার দীর্ঘদিন যাবত রথের আগে পৌঁছান, রথের দিন পাট পুজো করে সেখানে প্রায় ৩০-৪০ টি দুর্গা ঠাকুর প্রস্তুত করার পর কালীমাতা জগধাত্রী প্রতিমা নির্মাণ এবং সাজসজ্জা সেরে বাড়ি ফেরেন প্রায় তিন মাস বাদে। এরমধ্যে সাজসজ্জাশিল্পীর আকস্মিক মৃত্যু ঘটে গত বছর। তারপরে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে যোগাযোগ শান্তিপুর বৈষ্ণব পাড়া অমল কুন্ডুর সাজসজ্জা কারখানায় শিল্পী প্রীতম খাঁর সাথে। ৮ ফুট লম্বা চৌদ্দ ফুট চওড়া প্রতিমা প্রস্তুত হওয়ার পর দুমাস আগে শিল্পী প্রীতমকে প্রতিমার প্রয়োজনীয় সাজ সরঞ্জাম অর্ডার দেন তারা। গতকাল সমাপ্ত হওয়ার পর, দিল্লি থেকে তিন গুরুভাই প্লেনে রওনা দেন , রাতে কলকাতায় থাকার পর আজ এসে পৌঁছান শান্তিপুরে। তবে আগত সম্রাট বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, যাওয়ার সময় তারা দুরন্ত এক্সপ্রেস বাড়তি একটি সিট বুকিং করিয়েছেন, সাজসজ্জা রাখার জন্য।

তার কাছ থেকেই জানা গেলো, পূর্ববঙ্গ থেকে ১৯১১ সালে তাদের পূর্ব প্রজন্ম এসেছিলেন দিল্লিতে, সেই থেকেই এই পুজোর প্রচলন। বাংলা ঘরানার নাচ গান বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে পুজোর এই কটা দিন মেতে থাকেন তারা। যদিও লক্ষী কালী জগদ্ধাত্রী সরস্বতী সমস্ত পুজোই অনুষ্ঠিত হয় এ বাংলার মতো তবে দূর্গা পুজো উৎসবে পরিণত হয়েছে সেখানেও। আগে যমুনা নদীতে বিসর্জন দেওয়া হলেও বর্তমানে খাল কেটে একটি জলাশয় সমস্ত প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া সরকারি নিয়ম হয়েছে।

শিল্পী প্রীতম খাঁ সংবাদ মাধ্যমের প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে বলেন, বাংলার বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন শিল্পকর্ম সংবাদমাধ্যমে উঠে আসার জন্যই অন্যান্য রাজ্যের মানুষ আগ্রহী হয়ে উঠছেন, তবে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও উন্নত হলে প্রচুর পরিমাণে শিল্পকর্ম ভিন রাজ্যে যাবে। এর আগেও তাদের কাজ বাংলাদেশ উত্তর প্রদেশ বিহার গিয়েছে বাংলার বাইরে। তবে এই কাজটি অত্যন্ত সূক্ষ্ম এবং মূল্যবান সামগ্রী দিয়ে প্রস্তুত করা হয়েছে অর্ডার অনুযায়ী।

Leave a Reply