খুচরোর আকাল ! ভিক্ষুকদের খুচরোতে সচল হাসপাতালের আউটডোর রোগী পরিষেবার টিকিট

Social

মলয় দে নদীয়া:- ভিক্ষুকদের সংগৃহীত খুচরো পয়সাই সচল রেখেছে নদীয়া জেলার শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালের আউটডোর রোগী পরিষেবা। শুনতে খারাপ লাগলেও, বাস্তব এমনটাই। বিষয়টা বুঝতে গেলে যেতে হবে গভীরে।

সোম থেকে শনি সকাল নটা থেকে দুপুর দুটো পর্যন্ত শয়ে শয়ে রোগী দু টাকা মূল্যে সরকারি পরিষেবা দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালেও। প্রায় সমস্ত বিভাগেই অভিজ্ঞ চিকিৎসক ফলে রোগীদের আনাগোনাও অনেক বেশি এই হাসপাতালে। কিন্তু সমস্যা খুচরো পয়সায়। .

জানা যায় ডাক্তার দেখাতে গিয়ে সরকার নির্ধারিত দু টাকার টিকিট কাটতে হিমশিম খাচ্ছেন রোগীর পরিবার, নাজেহাল কাউন্টারের সমনে বসা স্বাস্থ্যকর্মীরাও। টিকিটের মূল্য দুই টাকা , কিন্তু প্রায় সকলেই ৫ টাকার কয়েন অথবা দশ টাকার নোট বা কয়েন দিয়ে থাকেন, আর তাতেই প্রতিদিন লেগেই থাকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং রোগীর পরিবারের মধ্যে বাগবিতণ্ডা।
রোগীর পরিবারের খুব যুক্তিসংগত কথা, দু টাকার কয়েন থাকবেই এমন কোন মানে নেই, একশ বা পঞ্চাশ টাকার নোট তো নয়! মাত্র পাঁচ অথবা দশ টাকার নোট বা কয়েন।অনেকেই জানালেন পাঁচ টাকার পরিবর্তে প্রয়োজনে তিন টাকা নিয়ে দু টাকা ফেরত দিক কর্তৃপক্ষ।

কিন্তু সততা রাখতে স্বাস্থ্যকর্মীরা তা মানতেও নারাজ। ২ টাকা ফেরত দেওয়া যদিও বা সম্ভবপর হয়ে ওঠে সাথে আর একটি টাকা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।
“পাঁচ টাকার বদলে দু টাকার টিকিট দেওয়ার পর তিন টাকা খুচরো দিতে পারবো না।”একই বুলি প্রতিদিন আওড়াতে আওড়াতে কখনো কখনো ধৈর্যহীন হয়ে পড়েন স্বাস্থ্য কর্মীরা। তারা বলেন, রোগীর পরিবারদের দেওয়া খুচরো যতক্ষণ থাকে, ততক্ষণ দেওয়া সম্ভব হয় তারপরেই তৈরী হয় সমস্যা।

তবে সমস্যা সমাধানের জন্য, মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হয় রবিবারে ভিক্ষুকদের আগমনের প্রতীক্ষায়। ঐদিন পথের পাশে দোকানগুলি থেকে ভিক্ষুকরা, যে অর্থ সংগ্রহ করে তাই কাগজের নোটের সাথে বদল করে থাকেন কর্তৃপক্ষ। তারা জানান সহযোগিতা নিতে হয়, বিভিন্ন ধরনের হকারদের কাছ থেকেও। আর এভাবেই আপাতত চলছে শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালের আউটডোর পরিষেবা।

খুচরো সমস্যা হওয়ার কারণ হিসেবে অনেকে মনে করছেন ,খুচরো বিশেষত এক টাকার কয়েন, অনেকেই ভান্ডারে জমিয়ে থাকেন, যার ফলে হস্তান্তর হয় না বছরের বেশিরভাগ সময়। তবে বিষয়টি এখনো পর্যন্ত চরম সংকটময় মুহূর্ত হয়ে না ওঠার কারণে হাসপাতাল সুপারেন্টেন্ড জানলেও, তা নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত নন। তবে পরিস্থিতি যেদিকে এগোচ্ছে, তাতে স্বাস্থ্যকর্মীদের মতে আগামীতে যথেষ্ট মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে সামান্য এই বিষয়টি।

Leave a Reply