মলয় দে নদীয়া : ২০১১ সালের ১২ইএপ্রিল প্রতিষ্ঠিত হলেও, বিভিন্ন রকম সামাজিক দায়িত্ব পূরণে কাজ করতো শান্তিপুর মরমী।
জানা যায় নদীয়া জেলায় প্রথম এবং একমাত্র মৃত্যু পরবর্তী সময়ে কর্ণিয়া সংগ্রাহক সংগঠন হিসাবে “শান্তিপুর মরমী” কাজ করা শুরু ২০১৪ সালের মে মাস থেকে। তবে এতদিন যাবৎ দিশা এবং প্রভা আই ব্যাংকের সহযোগিতায় এবং অনুমতিক্রমে।
শান্তিপুর সুত্রাগরের বাসিন্দা, ঈশ্বর সর্বমঙ্গলা দে র প্রথম একজোড়া কর্নিয়া সংগ্রহের মধ্যে দিয়ে সেই সংখ্যাটি আজ দাঁড়িয়েছে ১৬৪ জোড়াতে। অর্থাৎ সংগ্রহীত কর্ণিয়া তে ২২৮ জন এ পৃথিবীর আলো দেখতে পেয়েছেন।
২০২২ সালের ১০ ই জানুয়ারি স্বয়ংক্রিয়ভাবে অনুমতি মেলে কর্ণিয়া সংগ্রহের। সমস্তরকম পরিকাঠামোর প্রস্তুত হওয়ার মাঝেই আজ শান্তিপুর তামাচিকা পাড়ার অবস্থিত একটি প্রতিবন্ধী সংগঠন অফিসের অনুরোধ আসে কর্ণিয়া সংগ্রহের জন্য।তাদের এক প্রবীণ সদস্য শিবতোষ বন্দোপাধ্যায় ৮৬ বছর বয়সে আজ ভোরে পরলোকগমন করেন।
নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের প্রাক্তন এই শিক্ষক এবং তাঁর স্ত্রী দুজনেই, শারীরিক প্রতিবন্ধকতা যুক্ত এবং নিঃসন্তান হওয়ার কারণে প্রতিবন্ধীদের মঙ্গলার্থে বাড়িতেই একটি অফিস চালাতেন এযাবৎকাল। অত্যন্ত উঁচু মনের, এই শিক্ষকের কবিতা প্রবন্ধ ছাপা হয়েছে নামি দামী প্রকাশনী থেকে। কর্মশিক্ষা তে পারদর্শী এই প্রবীণ ব্যক্তি নানারকম ওয়ার্কশপ করতেন মাঝেমধ্যেই। তাঁর ইচ্ছা অনুসারে, স্ত্রী চন্দ্রা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সংগঠনের সভাপতি সুজন দত্ত শান্তিপুর মরমী কে অনুরোধ জানান কর্নিয়া সংগ্রহের জন্য।
তাই আজ আট বছরের শৈশব কাটিয়ে, স্বয়ংসম্পূর্ণভাবে এই প্রথম সংগ্রহ। শোকস্তদ্ধ সংগঠনের পক্ষ থেকে শপথ নেওয়া হয় আগামী দিন, তারা মরমী সহযোগিতা করে যাবেন। অন্যদিকে শান্তিপুর পৌরসভা বেশ কিছু বছর বছর আগে থেকে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবেই সিদ্ধান্ত নেওয়া অনুযায়ী এই শুভ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাতে তাঁর সম্মানার্থে শববাহী গাড়ি এবং দাহ খরচ মুকুব করিয়ে দেওয়া হয়। সরকারী সমব্যথী প্রকল্পের তাঁর স্ত্রী যাতে পায় সে বিষয়েও সহযোগিতা করবেন বলে জানা গেছে পৌরসভার পক্ষ থেকে।
মরমী সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাদেরই একটি ইউনিট “অজয় দে মেমোরিয়াল আই কালেকশন সেন্টার” এভাবেই নতুন করে যাত্রাপথ শুরু করলো।