মলয় দে নদীয়া:- হাতে-কলমে না শিখেও শুধুমাত্র চোখে দেখেই অনেকে সুন্দর স্তাপত্য মূর্তি বানিয়ে ফেলেন, ভিন্ন পালবাড়ির সন্তানদের এমনটাই বংশগতভাবে শিল্পী হয়ে ওঠার চাবিকাঠি। তবে সবকিছুর পেছনেই রয়েছে অদম্য শেখার আগ্রহ।আর সেই ইচ্ছাশক্তি প্রবল হয় , কোনো বাধাই বাধা হয়ে দাড়ায় না।
নদীয়ার শান্তিপুর শহরে ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে, জগন্নাথ প্রামানিক পেশায় গৃহশিক্ষক, যেটুকু সময় মেলে তা ব্যয় করে ছোটবেলা থেকে শখ স্থাপত্য এবং মূর্তি বানানোর জন্য। বাবা রাম প্রামানিক তাঁত শ্রমিক ছিলেন, এখন বয়সের ভারে শাড়ির ছোট ব্যবসা করেন। মা মালতি দেবী সুতো পাকিয়ে সংসারে কিছুটা সহযোগিতা করেন।একমাত্র সন্তান জগন্নাথ, ইংরেজিতে অনার্স নিয়ে পাস করেও পায়নি চাকরি! তবে তা নিয়ে আক্ষেপ নেই তার। ছোট থেকে দুচোখ ভরে শিল্পের স্বপ্ন দেখেছিলেন তা বাস্তবায়িত করতে তিনি বেশি খুশি হবেন বলে জানিয়েছেন।
মালতি দেবী জানান, ছোটোবেলায় জগন্নাথ আটা, কাদা নিয়ে মূর্তি বানানোর খেলা করতো, ওর প্রতিভা বোঝা সত্বেও কিন্তু অভাবের সংসারে কোনদিন আলাদা ভাবে শেখানোর কোন ব্যবস্থা করে উঠতে পারিনি, তবে বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ার যেভাবে লাভ করছে তাতে মাধ্যমে অনেক বড় শিল্পী হবে।
জগন্নাথ বলে,কয়েক বছর আগে ঢাকুরিয়া এক বাসিন্দা তার বানানো একটি সরস্বতী মূর্তি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করার পর তা উপযুক্ত পারিশ্রমিক দিয়ে কিনে নেন, এর পর থেকে একইভাবে কৃষ্ণ মূর্তি আসামে, সিংহবাহিনী মূর্তি উড়িষ্যায়, গৌরনিতাই মূর্তি মহারাষ্ট্রে পৌঁছেছে। তবে দুর্গা মূর্তি গতবছর বাঁশদ্রোনী, হাতিবাগান হাওড়ায় বিক্রি হয়েছিলো। এ বছরে ছয় মাস আগে, বাঙালোরে এক প্রবাসী বাঙালির পরিচয় হয় সোশ্যাল মিডিয়ায় মাধ্যমেই, তিনি দুর্গা প্রতিমা বাড়ানোর জন্য কিছু এডভান্সও করেন। এক ভাবে কাজ করলে কুড়ি দিন লাগতো তবে টিউশন এবং অন্যান্য শিল্প কর্মের ফাঁকে ফাঁকে করার জন্য দুই মাস ধরে ভর্তির কাজ শেষ হয়েছে আজ।আকাশ পথে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে, ব্যাঙ্গালোর পৌছে চলেছে মূর্তিটি তাই সতর্কতার সাথে বিশেষভাবে প্যাকেজিং করা হচ্ছে, মূল কাঠামো নাট-বোল্ট দিয়ে লাগানো থাকছে বাক্সের সাথে, বাক্সের মধ্যে চারিপাশে বিচুলি কাগজ এবং বাবল প্লাস্টিক দিয়ে মোড়ানো হচ্ছে ।