মলয় দে নদীয়া:- গ্রীষ্মের তীব্র দাবদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত। স্কুল ছুটি সহ বেশ কিছু বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা নিয়েছে সরকার। প্রায় ভুলে যাওয়া লোডশেডিংয়ের তিক্ত অভিজ্ঞতা হচ্ছে সাধারণ মানুষের। বৈশাখ মাসের অর্ধেক দিন অতিক্রান্ত হলেও এখনো পর্যন্ত কালবৈশাখীর সাথে বৃষ্টি নেই এবারে। গতকাল এবং তার আগে একদিন বৃষ্টিতে ঠান্ডা হওয়া তো দূরে থাক ক্ষণিকের জন্য কালবৈশাখীতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি। ঝড় হীন-বৃষ্টির প্রত্যাশায় সকলে।
কিন্তু একশ্রেণীর শ্রমজীবী মানুষের কাছে লাগাতার বৃষ্টির থেকে রৌদ্রজ্জ্বল দিন অনেক বেশি প্রিয়। সূর্যের আলোই তাদের পেটের ভাত জোগায়। শান্তিপুর নৃসিংহপুর অঞ্চলে বেশ কয়েকটি ধান সেদ্ধ শুকনো করার পাড়ণে কাজ করা শ্রমিকদের হয়ে গঙ্গা বিশ্বাস বলেন, বৃষ্টি হলে ধান সেদ্ধ শুকনোর কাজ হবে কিভাবে? তাই রোদই ভালো, তবে শুধু আমাদের কথা ভাবলেই তো আর হবে না! মাঝেমধ্যে দু এক দিন বৃষ্টি হলে কৃষক এবং সাধারন মানুষের খুব উপকার হয়।
শান্তিপুরের মূল জীবিকা তাঁত শিল্পের সাথে সম্পর্কিত সুত রং করার কাজ অন্যতম। সেই রকমই এক শ্রমিক যদুনন্দন দাস বলেন, আমাদের জ্বালা সব সময়।
শীতকালে হিমশীতল বরফ জলে রং করার কাজ অত্যন্ত কষ্টদায়ক, অন্যদিকে গরমকালে রং করা আরামদায়ক হলেও প্রচণ্ড রোদে তা শুকানোর কাজ অত্যন্ত কষ্টকর, তবুও সূর্যই আমাদের মুখে ভাত তুলে দেয় তাই তাকেই আমাদের বেশি দরকার।
প্যান্ডেলের কাপড় সাধারণ মানুষের ব্যবহারিক জামা কাপড় কাচা ধোয়া করা সর্বোপরি তাঁত শাড়ির ধোয়া কাচা যা বর্তমানের লন্ড্রি নামে পরিচিত তা কলকাতা এবং আশেপাশের জেলাগুলোর মধ্যে কাজের নিরিখে নদীয়ার শান্তিপুর অত্যন্ত প্রিয় তাদের কাছে। বংশপরম্পরায় এ ধরনের কাজ করে আসা তাপস দাস শৈলেন দাসের জানাচ্ছেন, বর্ষা এসে গেলে তাদের উপার্জন বন্ধ হয়ে যায়, রোগের অভাবে কাস্টমারের অর্ডার ঠিকমতো সময়ে সাপ্লাই করা যায় না। তবে বৃষ্টি একেবারেই না থাকলে জলাশয়ের জল কমে গিয়ে কাচাধোয়া করার সমস্যা দেখা যায়।
বহুৎ পরিশ্রমের ফসল হিসেবে কুড়ো শেখ দের মতন অনেক কৃষক, পাকা ধান ঘরে তুলছেন এ সময়। তাদের কাছে বৃষ্টি এখনই নয়। তবে উভয় সংকটের মধ্যেই রয়েছেন তারা, ধান বাঁচাতে গেলে জলের অভাবে পাট নষ্টের মুখে।