নদীয়ার শান্তিপুরের বিখ্যাত পুঁটোপুঁটির দোল

Social

মলয় দে নদীয়া:- উৎসবের শহর শান্তিপুরে উৎসব শেষ হয়েও যেনো শেষ হতে চায় না । একটির পর একটি উৎসব আনে বৈচিত্র্য , বর্ণময়তা ও যথেষ্ঠ আরম্বরতা । পঞ্চম দোল , অর্থাৎ সাধারণ ভাবে দোল পূর্ণিমার পাঁচ দিন পরে এই দোল উৎসব অনুষ্ঠিত হয় বলে একে পঞ্চম দোল বলা হয় । মূলত এই পঞ্চম দোলের প্রাধান্য লক্ষ্য করা যায় গোপাল পুর ও নতুন পাড়া অঞ্চলে । এখানে উল্লেখযোগ্য ভাবে প্রথমেই নাম বলা যেতে পারে জেঠা গোপীনাথ এর দোল বা জ্যাঠা জেঠির দোলের । মূলত দোল উৎসব কে কেন্দ্র করে এই অঞ্চলে সুবিশাল একটি মেলার প্রাধান্য পরিলক্ষিত হয় । শান্তিপুরের রাস বিগ্রহ সমন্বয় সমিতির সুত্রে জানা যায় শান্তিপুরের সমস্ত বিগ্রহের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রাচীন এই বিগ্রহ । সেই কারণেই এই বিগ্রহের নামকরন করা হয়েছে জ্যাঠা জেটি । সাধারণ ভাবে এটাও পরিলক্ষিত হয় যে এই বিগ্রহের আকার আকৃতি প্রায় তিন থেকে চার ফুটের কাছাকাছি এবং সর্বাঙ্গ সুন্দর এবং যথেষ্ঠ দৃষ্টিনন্দন ।

শান্তিপুর রাস বিগ্রহ সমন্বয় সমিতির সুত্রে জানা যাচ্ছে সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিম চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এর ভাইপোর সাথে বিবাহ হয়েছিল এই বাড়ীর অর্থাত্ মুখার্জী পরিবারের কর্মকর্তা শ্রী দামোদর মুখোপাধ্যায় এর কন্যার । দামোদর মুখোপাধ্যায় একজন ওপ্যনাসিক ছিলেন । কাজেই বেয়াই সম্পর্কে আবদ্ধ হবার পড়ে বঙ্কিম চন্দ্র বেশ কয়েক বার শান্তিপুরে এসেছিলেন এই দামোদর মুখোপাধ্যায় এর বাড়িতে । দামোদর মুখোপাধ্যায় এর মৃত্যুর পরে এই বিগ্রহ দেখাশোনার দায়িত্ব পড়ে দামোদর মুখোপাধ্যায় এর স্ত্রী মৃণালিনী দেবির ওপর । আবার মৃণালিনী দেবীর অবর্তমানে এই বিগ্রহের দেখাশোনার জন্য এলাকায় একটি কমিটি তৈরি হয় যেটা আজও অব্যাহত আছে । এই বিগ্রহ সম্পর্কে বহু রূপ কথার গল্প বা কাহিনী প্রচলিত আছে , তবে জানা যায় এই বিগ্রহ স্বপ্নের মাধ্যমে জানিয়েছিলেন তিনি রাস উৎসবে বেরোতে চান না , তার খুব কষ্ট হয় । এই কথা শোনার পরও দায়িত্ব প্রাপ্ত এলাকা বাসী সেটা অগ্রাহ্য করে বিগ্রহ বের করলে শোভাযাত্রা আয়োজনকারী এক সদস্যের মৃত্যু ঘটে । এবং তারপরের বছর থেকেই রাসের শোভা যাত্রায় বিগ্রহ কে বার করা হয় না । কিন্তু দোল উৎসব করা হয় যথেষ্ঠ আড়ম্বরের সাথেই ।

তবে এই অঞ্চলের দোল বা অন্যতম উৎসব হলো গোপালপুরের পুঁ টো পুঁটির দোল । কত বছর থেকে এই দোল উৎসব তার কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায় না ,তবে দুই বৃদ্ধ দম্পতি এই দোলের সূচনা করেছিলেন । এছাড়া বলা যেতে পারে সাহা বাড়ীর দোল বিশেষ উল্লেখযোগ্য। এই সমস্ত দোল উৎসব কে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষ তাদের বাড়ীতে পূজা অর্চনা করেন এবং ক্লাব বারোয়ারী গুলিও আনন্দে মেতে ওঠে ।

Leave a Reply