মলয় দে নদীয়া :-বেথলেহেমে যীশুর জন্ম। মা মেরি এবং বাবা জোসেফ। এই সময়ের গ্রেগোরিয়ান ক্যালেন্ডার তখন ছিল না, বাইবেলেও সুনির্দিষ্ট করে বলা নেই যীশুর জন্মের দিন। রোমের প্রথম খ্রিস্টান রাজা কনস্ট্যানটাইন এই দিনটি যীশুর জন্মদিন হিসেবে পালন করার প্রথম নির্দেশ দেন। কয়েক বছর পরে পোপ জুলিয়াস মেনে নেন কনস্ট্যানটাইনের বিধান। সেই থেকে ২৪ ডিসেম্বর ক্রিসমাস ইভ, ২৫ ডিসেম্বর ক্রিসমাস এবং ২৬ ডিসেম্বর বক্সিং ডে হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। যদিওযিশু খ্রিস্টের জন্মদিন হিসেবে বেশ কয়েকটা তারিখ শোনা যেত। যেমন – ২০ মে, ১৯ এপ্রিল, ১৭ নভেম্বর, ২৮ মার্চ, ২৫ মার্চ এবং ৬ জানুয়ারি। অনেক বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন যে ২৫ ডিসেম্বর সূর্যের জন্মদিন পালন করার রীতি প্রচলিত ছিল খৃস্ট পূর্বাব্দে। তখনও এই দিনে আলো দিয় বাড়ি সাজানো হত, ক্রিসমাস ট্রি সাজানো হত।
সে যাই হোক, প্রভু যীশুর নেয় নীতি নিষ্ঠা মানবতা এবং ভালোবাসায় মুগ্ধ হয়ে গোটা পৃথিবী পঁচিশে ডিসেম্বর উৎসব আকারে পালিত হয় জাতি-ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে। এ বাংলায় পঁচিশে ডিসেম্বর বনভোজন চার্চ গির্জায় বেড়াতে যাওয়া, কেক খাওয়া নিয়ে মেতে থাকেন সকলেই। নদীয়ার শান্তিপুরের একমাত্র পবিত্র ক্রুশের গির্জা অবস্থিত আরবান্দি 1 নম্বর পঞ্চায়েতের চাঁদড়া গ্রামে। শোনা যায় দেশভাগের পর বাংলাদেশ থেকে কুড়িঘর খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী পরিবার নদীয়ার বিভিন্ন প্রান্তে বসবাস শুরু করেন। তখন কৃষ্ণনগর ক্যাথিড্রাল চার্চ এর অন্তর্গত মাটির এবং খড়ের চালে নির্মিত হয় এই উপাসনা কেন্দ্র। তার কুড়ি বছর বাদে ইঁট বালি সিমেন্ট এবং তারও 70 বছর বাদে মুক্তিনগর ধর্মপল্লীর পুরোহিতরা রাজকীয় ভাবে এই উপাসনা গৃহ নির্মাণ এবং নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন আজ অবধি। বর্তমানে এই এলাকায় প্রায় 200 খ্রিস্টান পরিবারের বসবাস, জীবনযাত্রা ভাষা পদবী সবটাই সম্প্রীতির বাতাবরণে মিলে মিশে একাকার তবে প্রতি সপ্তাহে একদিন প্রার্থনা এবং 25 শে ডিসেম্বর নিজস্ব ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন করে থাকেন, এবং তাতে সামিল হন জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সকলে। হাতে মাত্র কয়েকদিন সময় তাই, বড়দিন উপলক্ষে নতুন করে সেজে উঠছে গোটা উপাসনালয়। আমাদের ক্যামেরায় ধরা পড়েছে এমনই চিত্র।