মূলোষষ্ঠী ! আধুনিকতার ছোঁয়ায় ম্লান হয়েছে সাবেকি রীতিনীতি, মূলোষষ্ঠী হওয়া সত্বেও দাম পাচ্ছেন না চাষিরা

Social

মলয় দে, নদীয়া:- আজ ষষ্ঠী।যাদের সন্তান হয়না সেসকল মহিলা সন্তান লাভের আশায় এবং যাদের সন্তান আছে তারা সন্তানের মঙ্গলার্থে মূলত ষষ্ঠী পূজা করে থাকেন।

হিন্দু শাস্ত্রানুসারে প্রতিমাসের শুক্লাষষ্ঠী তিথিতে বিভিন্ন নামে ষষ্ঠীদেবী পূজিতা হন।
জৈষ্ঠ মাসে: অরণ্যষষ্ঠী,
শ্রাবণ মাসে: লুণ্ঠন বা লোটনষষ্ঠী,
ভাদ্র মাসে : চাপড়া বা মন্থনষষ্ঠী,
আশ্বিন মাসে: দুর্গাষষ্ঠী বা বোধনষষ্ঠী,
অগ্রহায়ণ মাসে: মূলাষষ্ঠী,
পৌষ মাসে: পাটাইষষ্ঠী,
মাঘ মাসে : শীতলষষ্ঠী,
চৈত্র মাসে: অশোকষষ্ঠী এবং নীলষষ্ঠী;
বৈশাখ, আষাঢ়, কার্তিক ও ফাল্গুন মাসের ষষ্ঠী অপ্রচলিত)।
এছাড়া, শিশুর জন্মের পর ‘সূতিকাষষ্ঠী , ষষ্ঠ দিনে ‘ঘাটষষ্ঠী’, একুশদিনে ‘একুশে’ এবং শিশুর বারো বছর বয়স পর্যন্ত প্রতি জন্মতিথিতে ‘জলষষ্ঠী’ দেবীর পৃূজা হয়ে থাকে।

অগ্রহায়ণ মাসে মূলো ষষ্ঠী। মূলা ষষ্ঠী কে মূলকরূপিণী ষষ্ঠীও বলা হয়। সংখ্যা অত্যন্ত অত্যন্ত অল্প হলেও হিন্দু সনাতন ধর্মাবলম্বীরা প্রাচীন প্রথা মেনে আজও মূলা ষষ্টি পালন করে আসছেন । বেশকিছু ষষ্ঠীব্রত পালন করতেও দেখা যায় হিন্দুদের মধ্যে। এর মধ্যে মূলা ষষ্ঠী অন্যতম। অশোকা ষষ্ঠী, লুন্ঠন ষষ্ঠী, জামাই ষষ্ঠী, পাটাই ষষ্ঠী, শীতল ষষ্ঠীও পালন করতে দেখা যায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের। বিশেষত কার্তিক অগ্রহায়ণ মাসে যখন নতুন ফসল ঘরে ওঠে তখন এই পূজার আয়োজন করা হয়। তবে সাবেকি রীতিনীতি অনেকটাই ম্লান হয়েছে আধুনিকতার ছোঁয়ায়, আর তাতেই আজ মূলো ষষ্ঠী উপলক্ষে কৃষকরা বাজারে যথেষ্ট পরিমাণে মজুদ করলেও উপযুক্ত দাম পাচ্ছেন না। পাইকারি বাজারের ৩ থেকে ৫ টাকা কেজি।

যাদের সন্তান হয়না সেসকল মহিলা সন্তান লাভের আশায় এবং যাদের সন্তান আছে তারা সন্তানের মঙ্গলার্থে মূলত ষষ্ঠী পূজা করে থাকেন। বিশেষ করে শুভ সূচী ও মঙ্গল কামনার জন্য এই পূজা করা হয়।

এতোগেলো ধর্মকথা! তবে বিজ্ঞানেও মুলোর গুরুত্ব অপরিসীম। মুলায় প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম এবং ভিটামিন সি রয়েছে। এতে থায়ামিন,নিয়াসিন,রিবোফ্লাভিন, ফলিক এসিড এবং ভিটামিন বি ৬, এ এবং কে রয়েছে।এছাড়া এটি আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস এবং জিঙ্কেরও ভাল উৎস। তাই প্রস্রাবের সমস্যা, ক্ষুধামন্দা অর্শ ,আমাশয়, রক্তচাপ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ, হার্ড সুস্থ রাখা ওজন হ্রাস করা ক্যান্সার নিরাময়, শীতকালীন জ্বরের প্রকোপ কমাতে হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে গ্যাস অম্বল থেকে মুক্তি পেতে এই আনাজের জুড়ি মেলা ভার। বর্তমান প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা এত গুণাবলী জেনেও নাক সিঁটকিয়ে থাকেন পাতে যদি মুলোর তরকারি পরে।

Leave a Reply