অভিজিৎ হাজরা *আমতা *হাওড়া :- সরকারি কর্মচারীবৃন্দ নিজ নিজ কর্মস্থলে যাওয়া-আসার পথে বিভিন্ন কর্মস্থলের কর্মচারীবৃন্দের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। নিজেদের সুখ-দুঃখ, সমস্যা নিয়ে আলোচনা করে।একে অপরের বিপদে -আপদে পাশে দাঁড়ায়।একে অপরের সঙ্গে যোগসূত্র তৈরী হয়।এক সময় সরকারি কর্মচারীবৃন্দ কর্মস্থল থেকে অবসর নেয়। তারপর তারা নিঃসঙ্গ হয়ে পড়ে।পেনশন সংক্রান্ত যাবতীয় সমস্যায় পড়ে, পারিবারিক সমস্যায় পড়ে। পূর্বের তুলনায় টাকা কম পাওয়ায় সংসারে খাতির যত্ম কমে যায়। কোন বিষয়ে মতামতের মূল্য থাকে না। কর্মস্থলে যাতায়াতের পথে যাদের সঙ্গে দেখা হতো, কথা হতো, তাদের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ ও কথা হয় না বললেই চলে।
এই সমস্ত অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের কথা চিন্তা-ভাবনা করে আমতা-জয়পুর থানা-পেনশনার্সরা পেনশনার্সদের সুখ-দুঃখের সাথি হওয়ার জন্য বেশ কয়েক বৎসর আগে গঠন করেন স্টেট গভ:পেনশনার্স ফেডারেশন (পঃবঃ) । সিদ্ধান্ত হয় একটি অরাজনৈতিক সংগঠন হিসাবে থাকবে। প্রথমে এই সংগঠনের আত্নপ্রকাশ মুষ্টিমেয় কয়েকজনকে নিয়ে হলেও বর্তমানে তা মহীরুহে পরিণত হয়েছে।
এই সংগঠনের কর্মকর্তাবৃন্দ পেনশনার্সদের পেনশন সংক্রান্ত যাবতীয় সমস্যা যেমন সমাধান করে থাকেন, তেমনি পেনশনার্সরা যদি কোন বিপদে পড়ে অন্যান্য পেনশনার্সরা তার সমস্যার সমাধানে ঝাঁপিয়ে পড়ে।তা পারিবারিক, শারীরিক, মানসিক মা সমস্যাই হোক না কেন।এই সংগঠনের কর্মকর্তাবৃন্দ, সদস্য-সদস্যারা শুধুমাত্র পেনশনার্সদের ও তার পরিবারের সদস্য-সদস্যাদের সমস্যা সমাধানে পাশে থাকে নি।করোনা মহামারির প্রকোপে লকডাউনের সময়ে হতাশা গ্রস্ত পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে যথাযথ সাহায্য কোরেছে। করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিদের ও তার পরিবারবর্গের পাশে দাঁড়িয়েছে।মুখ্যমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে উলুবেড়িয়া উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক ডাঃ নির্মল মাজী-র মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী ত্রাণ তহবিলে ৫৭ হাজার টাকা দান করেছেন।
সম্প্রতি স্টেট গভঃ পেনশনার্স
ফেডারেশন(পঃবঃ) আমতা- জয়পুর থানা কমিটি বিজয়া সম্মীলনী-র আয়োজন করেছিল আমতা”আনন্দ নিকেতন” ভবনে। এই বিজয়া সম্মীলনী-তে উপস্থিত ছিলেন তপন ব্যানার্জী, সুনীল চক্রবর্তী, সংগঠনের সভাপতি ডাঃ সনৎ গুছাইত,সহঃসভাপতি অশোক ধাড়া, সহঃসভাপতি গৌতম ধাওয়া, কোষাধ্যক্ষ অদ্ধেন্দু সাউ,সম্পাদক তপন সাহা।
এই বিজয়া সম্মীলনী-তে উপস্থিত সদস্য-সদস্যারা তাদের সমস্যা ও সমাধানে এই সংগঠনের কর্মকর্তাদের কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেন। সংগঠনের সদস্য-সদস্যারা বলেন, সংগঠনের কোন নির্দিষ্ট বসার ঘর না থাকার কারণে অনেক সময়ে সংগঠনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হয় তাদের বসত বাড়ি তে গিয়ে। সদস্য-সদস্যারা সংগঠনের কর্মকর্তাদের অনুরোধ করেন এই বিষয়ে কর্মকর্তাগণ যেন চিন্তা-ভাবনা করে একটি নির্দিষ্ট অফিস গৃহের ব্যবস্থা করেন।এর পাশাপাশি সদস্য-সদস্যারা বলেন, সংগঠনের সব সদস্য-সদস্যাদের ফোন নাম্বার সবার কাছে না থাকার কারণে সবার সমস্যা সবাই জানতে পারেন না।ব্যক্তিগত ভাবে কয়েকজনের ফোন নাম্বার থাকায় তারাই একে অপরের সমস্যা জানতে পারেন। সংগঠন যেন সব সদস্য-সদস্যাদের ফোন নাম্বার, ঠিকানা সবার কাছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।
এই প্রসঙ্গে সংগঠনের সভাপতি ডাঃ সনৎ গুছাইত, সহঃসভাপতি অশোক ধাড়া, সম্পাদক তপন সাহা বলেন, সংগঠনের সব সদস্য-সদস্যাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার জন্য সংগঠনের নিজস্ব একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্ৰুপ চালু করার চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে।এর পাশাপাশি সংগঠনের বাৎসরিক অনুষ্ঠানে প্রতি বৎসর সংগঠনের একটি মুখপত্র (পত্রিকা) প্রকাশ করার চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। সেই মুখপত্রে সংগঠনের নানান কর্মকান্ডের কথা যেমন থাকবে, তেমনি পেনশনার্সদের ব্যক্তিগত সমস্যা লেখা হবে।পেনশনার্স ফেডারেশনের আমতা- জয়পুর থানার সমস্ত সদস্য-সদস্যাদের নাম, ঠিকানা, ফোন নাম্বার দেওয়া হবে।এর পাশাপাশি থানা, সরকারি দপ্তর, হাসপাতাল,নাসিং হোম, ঔষধের দোকান নাম, ঠিকানা ফোন নাম্বার দেওয়া হবে। সংগঠনের একটি নির্দিষ্ট অফিস গৃহ নেওয়ার পরিকল্পনা হয়েছে। যেখানে সপ্তাহে অন্তত একদিন সদস্য-সদস্যারা আলাপ-আলোচনা করার জন্য বসতে পারেন।
সম্মেলনে উপস্থিত সদস্য-সদস্যারা সংগঠনের এই সিদ্ধান্তে খুশি হন।