পূর্ব মেদিনীপুর জেলা জুড়ে চলছে মাইক প্রচার, দিঘা উপকুল এলাকায় জারি সতর্কতা, খোলা হচ্ছে কন্ট্রোল রুম !

Social

মদন মাইতি, পূর্ব মেদিনীপুর: ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় “গুলাব”।আলিপুরের তরফ থেকে থেকে জারি হয়েছে সতর্কতা। বর্তমানে বঙ্গোপসাগরে গভির নিম্নচাপের আকারে অবস্থান করছে “গুলাব”। আগামী ১২ ঘন্টার মধ্যে তা ভয়াল আকার ধারন করতে পারে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস। যার জেরে হলুদ সতর্কতা জারি হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সহ সমুদ্র উপকুলবর্তী এলাকাগুলিতে। তারই আগাম সতর্কতা হিসেবে জেলা জুড়েই শুরু হয়েছে চূড়ান্ত তৎপরতা। দিঘা সহ জেলার উপকুলবর্তী এলাকার পাশাপাশি প্রায় সব জায়গাতেই শুরু হয়েছে মাইক প্রচার।

রবিবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত সবাইকেই সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে। সমুদ্রে মাছ শিকারে যাওয়া মৎস্যজীবিদের দ্রুত ফিরে আসতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে। মৎস্যজীবীদের ফিরে আসার জন্য সাহায্য করছে উপকূলীয় রক্ষাবাহিনীর জাহাজ। যেসমস্ত ট্রলার উপকূলে ফিরে আসতে পারবে না তাদের নিকটবর্তী নিরাপদ স্থানে পৌঁছানোর কথা বলা হয়েছে।

ইতিমধ্যে বিশেষ সতর্কতা জারি হয়েছে উপকুল এলাকাগুলিতেও। রামনগর ১ ব্লকের সভাপতি শম্পা মহাপাত্র জানান, আসন্ন আবহাওয়ার অবনতির খবর পেয়েই দ্রুত প্রশাসনিক বৈঠক সারা হয়েছে। যে সমস্ত সমুদ্র উপকুলবর্তী এলাকা বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয় সেগুলিতে বিশেষ নজরদারী চালানো হচ্ছে।

শম্পা মহাপাত্র জানান, গোটা এলাকাতেই মাইকিং করা শুরু হয়েছে। প্রতিটি এলাকায় আইলা সেন্টার, স্কুলগুলিকে তৈরি রাখা হয়েছে। বিশেষ করে শংকরপুর, গঙ্গাধরপুর, দত্তপুর এলাকাগুলি বেশী বিপজ্জনক হওয়ায় এই জায়গাগুলির আইলা সেন্টার, স্কুল ও পাকাবাড়ীগুলিকে তৈরি রাখা হয়েছে। সেই সঙ্গে পর্যাপ্ত শুকনো খাওয়ারও মজুদ রাখা হয়েছে। তিনি জানান, ইয়াসে সমূদ্রের ভয়াবহ জলোচ্ছ্বাসের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সমুদ্র তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের প্রয়োজনে সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রস্তুতিও সেরে রাখা হয়েছে।

শম্পা মাহাপাত্র আরও জানান, পরিস্থিতি বিপজ্জনক হলেই এলাকাবাসীদের অপেক্ষাকৃত সুরক্ষিত জায়গায় সরিয়ে আনা হবে। সেই সঙ্গে সমুদ্র বাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত জায়গাগুলিতে বেশী পরিমানে ব্ল্যাকস্টোন ফেলা হয়েছে। এছাড়াও দিঘা সহ রামনগর ১ পঞ্চায়েত সমিতির অফিসের পাশাপাশি পদিমা ১ ও ২, তালগাছাড়ি ২ গ্রাম পঞ্চায়েতেও কন্ট্রোলরুম খোলা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

তবে অতিভারী বৃষ্টিপাতের খবরে ইতিমধ্যে আতংকের প্রহর গুণছেন পটাশপুর, ভগবানপুর, এগরা, চন্ডীপুরের বিস্তীর্ণ বানভাসি এলাকার লক্ষাধিক মানুষ। এই এলাকাগুলি বেশ কয়েকদিন ধরেই কেলেঘাইয়ের জলে ডুবে রয়েছে। তারওপর আবার মাথার ওপর ঝুলছে অতিভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস। এর জেরে চূড়ান্ত উদ্বিগ্ন এলাকাবাসীরা। যদিও জেলা শাসক পূর্ণেন্দু কুমার মাজী আশ্বস্ত করে জানিয়েছেন, কেলেঘাই নদীর যে জায়গায় বাঁধ ভেঙেছে তা দ্রুত মেরামতি হচ্ছে। এছাড়াও বানভাসি এলাকাগুলিতে পর্যাপ্ত ত্রাণ পাঠানোর ব্যবস্থা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

Leave a Reply