মলয় দে নদীয়া:-“উপর খেতে হাল দাদা নাম খেতে কামিনী রে ,কন্ খেতে লাগাবি দাদা কাজল কামিনী ধান রে”। আজ নদীয়ার শান্তিপুর এবং চাঁদপুর আদিবাসী গ্রামে দিশারীর ঝুমুরিয়া শাখার সদস্যরা করম পূজার সূচনা করে জাওয়া পাতলেন। করম পরবের সাতদিন,পাঁচদিন আগে মেয়েরা ভোরবেলায় শালের দাঁতন কাঠি ভেঙে নদী বা পুকুরে স্নান করে বাঁশ দিয়ে বোনা ছোট টুপা ও ডালায় বালি দিয়ে ভর্তি করে বিভিন্ন বীজ রোপণ করে অঙ্কুরোদগমের অপেক্ষায়। তারপর গ্রামের প্রান্তে একস্থানে ডালাগুলিকে রেখে জাওয়া গান গাইতে গাইতে তিন পাক ঘোরে। সাত দিন ধরে তাতে জল ঢালা হয়।এই জাওয়ার প্রচলন মেয়েরাই শুরু করে..
আগামী শুক্রবার করম গাছ কে সাক্ষী রেখে হবে করম পরব, এবার আর নদীয়ার বাইরে থেকে আর করম ডাল কেটে আনতে হবে না ,গতবছর তারা যে করম গাছ রোপন করেছিলো নদীয়ার বিভিন্ন প্রান্তে , এই বছর সেই গাছকে ঘিরেই হবে পরব।
এই বছরেও করম গাছ রোপণের পরিকল্পনা নিয়েছে দিশারী, নদীয়ার আদিবাসী সমাজের শিল্প-সংস্কৃতি রক্ষার ভাবনা থেকেই দিশারী র করম রোপন । উৎসবে করমসখীরা করম ডালে রাখী বাঁধবে। নদীয়ার আদিবাসী সমাজের নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের কাছে করম গাছ আজ অচেনা নয় তাদের বিশ্বাস এই করম গাছ রোপন নদিয়ার আদিবাসী সমাজে প্রচলিত প্রথা আবার ফিরিয়ে এনেছে। সেই বিশ্বাস থেকেই আগামী ১৭ই সেপ্টেম্বর ২০২১ শুক্রবার সকাল ৮:০০ আসাননগর চাঁদপুর গ্রাম ও শান্তিপুরের রামনগর চর পুরাতন পাড়া আদিবাসী গ্রামে পালিত হবে করম রোপণ কর্মসূচী।
দিশারী শুভাকাঙ্ক্ষী মৃণাল কান্তি মাহাতো এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের রেঞ্জ অফিসার লক্ষীকান্ত মাহাতো,ফরেস্ট কমিটি মেম্বার সুকদেব সিনহার প্রচেষ্টায় ১০০ টি করম চারা সংগ্রহ করে নদীয়াতে রোপন করা হবে। সন্ধ্যা ৬টায় শুরু হবে করম পূজা, নদীয়ার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ঝুমুর শিল্পীরা সেদিন উপস্থিত থাকবেন। পরব শেষে জাওয়ায় পোতা অঙ্কুর গ্রামের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পরবের সমাপ্তি ঘোষণা করা হবে।নদীয়া করম পরবের এই সবুজায়ন কর্মসূচিতে সকলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তারা।