মলয় দে, নদীয়া :-সম্প্রতি ইন্দিরা গান্ধী জাতীয় মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় সহ আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় তাদের উচ্চশিক্ষার পাঠক্রমে স্নাতকোত্তর ও ডিপ্লোমা কোর্স হিসেবে জ্যোতিষ শাস্ত্রকে অন্তর্ভুক্ত করার কথা ঘোষণা করেছে। জ্যোতিষশাস্ত্রের মতো একটি অবিজ্ঞান ও জালিয়াতি শাস্ত্রকে সরকারি শিলমোহর দেওয়ার অপচেষ্টার প্রতিবাদে আজ RSF, ISU, AISA, PDSF প্রমুখ ছাত্র সংগঠন এবং ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতি ও পশ্চিমবঙ্গ গণবিজ্ঞান সমন্বয় কেন্দ্র সহ আরও কয়েকটি সংগঠন গতকাল নদীয়া থেকে এবং অন্যান্য জেলা থেকে প্রতিনিধিরা কলকাতার করুণাময়ী বাসস্ট্যান্ডে পথসভা করে এবং বিকাশ ভবনে ইগনৌ-এর আঞ্চলিক কর্মকর্তার মাধ্যমে তার উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দেয়।
ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক দেবাশিস্ ভট্টাচার্য বলেন, ” শিক্ষাক্ষেত্রে জ্যোতিষের অন্তর্ভুক্তি ভারতীয় সংবিধানের ৫১এ(এইচ) ধারা অনুযায়ী বৈজ্ঞানিক মেজাজ ও অনুসন্ধিৎসা গড়ে তোলবার ঘোষিত মৌলিক কর্তব্যের পরিপন্থী।”
উচ্চশিক্ষার পাঠসূচি থেকে জ্যোতিষশাস্ত্র যাতে বাদ দেওয়া হয় তার জন্য ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই এক প্রতিবাদপত্র পাঠানো হয়েছে ইগনৌ-এর ভাইস চান্সেলর , ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডি পি সিংহ, কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী শ্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান এবং ভারতের রাষ্ট্রপতি শ্রী রামনাথ কোভিড মহাশয়কে।
ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য প্রতাপ চন্দ্র দাস বলেন, “সংবিধান অনুযায়ী জ্যোতিষচর্চা কোনও বৈধ পেশা নয়। বৃত্তিকর বিষয়ক আইন ১৯৭৯-এ আইনসম্মত পেশার তালিকায় জ্যোতিষ পেশার নাম নেই। আবার, যদি কেউ মন্ত্র-তন্ত্র, দোয়া-তাবিজ, কবচ-মাদুলি বা কোনও প্রলোভনের সাহায্যে মানুষের রোগ সারানোর দাবি করেন বা দাবিসহ বিজ্ঞাপন দেন, তাহলে ড্রাগস্ অ্যান্ড ম্যাজিক রেমিডিজ অ্যাক্ট, ১৯৫৪ অনুযায়ী তিনি আইনের চোখে অপরাধী গণ্য হবেন। জ্যোতিষীদেরও এই আইনে দোষী সাব্যস্ত করা যায়।”
কেন্দ্রীয় সরকার ও ইউজিসি উচ্চশিক্ষার পাঠ্যসূচিতে জ্যোতিষশাস্ত্র অন্তর্ভূক্ত করে দেশের মানুষের সাথে প্রতারণা করছে এবং সমাজে অন্ধবিশ্বাস ও অপবিজ্ঞানের প্রসার ঘটাতে চাইছে। জনবিরোধী শাসক সাধারণ মানুষের বঞ্চনাজনিত ক্ষোভ ও প্রতিবাদকে দমিয়ে রাখতে তাদের অদৃষ্টবাদী চিন্তায় আচ্ছন্ন করে রাখতে চাইছে। সেইজন্যই অপরাধমূলক এই শাস্ত্রকে বৈধতা দিয়ে জনমানসে বিভ্রান্তি ছড়াতে চাইছে এবং একই সঙ্গে তাদের দেশবিক্রির পরিকল্পনার রাস্তাকে মসৃণ করতে চাইছে।