মলয় দে, নদীয়া :- স্কন্দপুরাণ বলছে যে ভাদ্রমাসের শুক্লপক্ষের চতুর্থী তিথিতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন গণেশ।
আবার, বাকি সব পুরাণ, বিশেষ করে ব্রহ্মবৈবর্তের মত- মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের চতুর্থী তিথিটিকেই সাব্যস্ত করতে হবে গণেশের জন্মদিন রূপে। স্কন্দপুরাণ যেহেতু দাক্ষিণাত্য এবং মহারাষ্ট্রে জনপ্রিয়, সেহেতু দেশের ওই সব অঞ্চলে গণেশ চতুর্থী উদযাপিত হয় ভাদ্র মাসে। অন্য দিকে, ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণের রচনাস্থল এবং জনপ্রিয়তা বঙ্গদেশ, তাই এখানে মাঘ মাসের শুক্লপক্ষেই গণেশ চতুর্থী উদযাপনের প্রথা প্রচলিত।
তবে জন্মতিথি সংক্রান্ত মাসটি নিয়ে মতবিরোধ থাকলেও উপাসনার নিয়মে কোনও বিরোধ নেই। গণেশের গাত্রবর্ণ লাল, তাই এই রং তাঁর বিশেষ প্রিয় বলে বর্ণনা করা হয়ে থাকে। বলা হয়ে থাকে যে ৫ সংখ্যাটিও তাঁর অতীব প্রিয়। তাই এই দিন পাঁচটি লালরঙের ফুল, পাঁচটি লালরঙের মিষ্টি, পাঁচটি প্রদীপ সিদ্ধিদাতার উদ্দেশে নিবেদনের রেওয়াজ আছে।
পুজো করা হয় মহারাষ্ট্র, গুজরাট, কর্ণাটক, উত্তরপ্রদেশ সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পালিত হয় গণেশ চতুর্থী উৎসব। এই উৎসবে গৃহস্থের বাড়িতে গণেশের মূর্তি নিয়ে এসে পুজো করা হয়।
গণেশ চতুর্থীর শেষ দিনকে বলা হয়, ‘অনন্ত চতুর্দশী’। ওই দিন ভক্তরা গণেশের কাছে প্রার্থনা করেন, আগামী বছর যেন আবার তিনি ফিরে আসেন। অনেকে এই উৎসবটিকে দুই দিনের জন্য উদযাপন করেন। কেউ কেউ এটি পুরো দশ দিন ধরে উদযাপন করেন। একে গণেশ মহোৎসব বলা হয়। তবে ভাদ্র মাসের গণেশ চতুর্দশী বাংলায় ক্রমশ জনপ্রিয় হচ্ছে। আর তারই চূড়ান্ত প্রস্তুতি চলছে বিভিন্ন মৃৎ শিল্পীদের ঘরে। করোনা পরিস্থিতিতে ব্যবসা যাই হয়ে থাকুক রাত পোহালেই উৎসবের চেহারা নেবে এ বাংলাও।