মলয় দে, নদীয়া:- নদীয়ার শান্তিপুর শহরের আট নম্বর ওয়ার্ডের নিশ্চিন্তপুরের রিনা নন্দী ,মৌমিতা বাগ, চৈতালি নন্দী, সুস্মিতা প্রামানিক মন্ডল, বনানী পাল রা ১৩জন মহিলা মিলে মাস ছয়েক আগে তৈরি করেছিলো চিন্তন স্বনির্ভর মহিলা গোষ্ঠী। দীর্ঘ লকডাউনে পরিবার পরিবারের প্রধানের কাধ থেকে কিছুটা খরচের বোঝার ভাগ নিয়ে, সংসারকে একটি সচ্ছল করার স্বপ্ন দেখেছিলো দশোভূজারা। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির মধ্যে, কি ব্যবসা করা যায় তা মাথায় আসছিলো না গৃহিণীদের। অবশেষে পথ বাৎলালো গোপাল! লক্ষীর আগমন ঘটলো তার হাত ধরেই।
স্থির হল, ব্যবসা করার উদ্দেশ্যে স্বনির্ভর গোষ্ঠী হিসেবে সরকারি তহবিল থেকে প্রাপ্ত দশ হজার টাকা দিয়ে তারা তালের বড়া বিক্রি করবেন জন্মাষ্টমীতে। যেমন ভাবা তেমন কাজ! সারাদিন হেঁসেল স্বামী-সংসার ঘরদোর সামলে সন্ধ্যায় মিলিত হতেন তারা। চিনি, নারকেল, তাল, সুজি, রিফাইন তেল, নানান উপকরণ কিনে বসে পড়লেন উনুনের ধারে। তবে সংসারের রান্না সেরে দ্বিতীয়বারের এই রান্নায় আত্ম স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে পৌছানোর , কিছু করে দেখানোর তাগিদ তাদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল বলেই জানান গোষ্ঠীর সদস্যারা।
অবশেষে শান্তিপুর গোষ্ঠীর ব্যানার টাঙ্গিয়ে কাশ্যোপপাড়া মোড়ে প্যান্ডেল করে মাইক ফুকে শুরু হলো বিক্রি।
ঝড়ের গতিতে, নারকেল নাড়ু ,তালের বড়া, তালের পাটিসাপটা, তালের মালপোয়া বিকোতে থাকলো। পথচলতি ক্রেতারা জানান, ছোট ছোট সংসার তাল চাচা, বরা ভাজা এত হ্যাপা পোহাবে কে? তাই দোকানের উপর ভরসা করতে হয় জন্মাষ্টমীতে। অন্যান্য দোকানের গুণগত মান এবং দাম অনুযায়ী যথেষ্ট ভাল এই গোষ্ঠীর তাল বড়া।
গোষ্ঠীর উদ্যোক্তারা জানান, প্রথম বছর বুঝতে পারিনি, ক্রেতার চাহিদা সামান্য অংশ তৈরি করতে পেরেছি মাত্র, দুদিনে ৮০০০ টাকার বেচাকেনায় লাভ হয়েছে প্রায় ৩০০০ টাকা। প্রথম ব্যবসায়, লভ্যাংশ কেউ ভাগ নেব না এখন, আগামীতেও এ ধরনের নানান রকম ব্যবসা করে বছরের শেষে লভ্যাংশ নেব। তবে গোপালের ইচ্ছায় প্রথমেই লাভের মুখ দেখে, আগামীতে দ্বিগুণ অনুপ্রেরণায় কাজ করব সকলে একসাথে।