গতকাল মধ্যরাতে ছাড়লো অম্বুবাচী! তিথি অনুযায়ী বিভিন্ন কালীমাতার মন্দিরে অনুষ্ঠিত হলো পুজো ও উন্মোচিত হলো মায়ের মুখ

Social

মলয় দে, নদীয়া : সনাতন ধর্মাবল্বীদের মতে অম্বুবাচী হলো একটি বিশেষ তিথি । পঞ্জিকা মতে এবছর ২২শে জুন , মঙ্গলবার দুপুর ২.০৭ মিনিট থেকে শুরু হয়েছিলো, আর তা ছেড়েছে গতকাল ২৫ শে জুন শুক্রবার ২.৩০ মিনিট মধ্যরাতে।

এই বিশেষ তিথি । আষাঢ় মাসের মৃগোষিরা নক্ষত্রের তৃতীয় পদ শেষ হয়ে চতুর্থ পদের শুরুতে অম্বুবাচী শুরু হয় ।

শাস্ত্রমতে এই সময় ধরিত্রী মাতাকে ঋতুমতী হিসাবে কল্পনা করা হয় । আষাঢ় মাসের ৭ থেকে ১০ তারিখ পর্যন্ত এই রীতি পালন করা হয় । কামাখ্যা মন্দিরে এই তিথিকে কেন্দ্র করে এক বিশাল উৎসব পালন করার রীতি রয়েছে । সেখানকার স্থানীয় মানুষদের বিশ্বাস প্রতি বছর এই সময়ে দেবী ঋতুমতী হন । তাই অম্বুবাচী র সময়ে তিনদিন মন্দিরের দরজা বন্ধ থাকে ।
সনাতন ধর্মাবল্বীদের মতে বিশেষ কিছু রীতি এই সময় পালন করা বাঞ্ছনীয় । সেগুলি হলো প্রথমত, মনে করা হয় এই সময় ধরিত্রী মাতা ঋতুমতী হন তাই এই সময় ভূমিকর্ষণ ও বৃক্ষরোপণ নিষিদ্ধ । দ্বিতীয়ত , এই সময় গৃহ প্রবেশ , বিবাহ ও অন্যান্য মাঙ্গলিক ক্রিয়া কর্ম করা উচিত নয় ।

হিন্দু শাস্ত্রমতে এই সময়ে অন্য কোনো বিশেষ পুজোর আয়োজন না করাটাই ভালো । তবে কোনো বছর এই সময় রথযাত্রার উৎসব পড়লে সেটা নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে করা প্রয়োজন । কারণ রথ যাত্রাকে নিত্য কর্মের মধ্যেই ধরা হয় ।

চতুর্থত , যারা আদি শক্তির বিভিন্ন রূপের পূজা অর্চনা করেন , যেমন কালী , দুর্গা , জগদ্ধাত্রী, বিপত্তারিনি , মঙ্গল চণ্ডীর ঘট পুজো করেন । তারা এই সময় মূর্তি বা মূর্তির পট লাল কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখার রীতি রয়েছে ।

পঞ্চমত, এই বিশেষ তিথির দিনগুলোতে পুজোর সময় কোনো মন্ত্র পাঠ না করে কেবলমাত্র ধূপ ও দ্বীপের দ্বারা ঠাকুর প্রণাম করার রীতি রয়েছে । অম্বুবাচী তে দেবীর মূর্তি বা পট কখনোই স্পর্শ করা উচিত নয় বলে মনে করে হিন্দু শাস্ত্র ।

ষষ্ঠত, যারা শাক্ত মন্ত্রে দীক্ষিত তারা এই সময় গুরু মন্ত্রে জপ করতে পারবেন । হিন্দুশাস্ত্র মতে জপে কোনো দোষ নেই বলেই মনে করা হয় ।
এমনটাই ধর্মীও নীয়মাবলি রয়েছে অম্বুবাচী তিথির হিন্দু শাস্ত্র মতে ।

শান্তিপুর মহাশ্মশানের পূজারী অসীম ব্যানার্জি জানান, আনুমানিক ১৯৬০ সাল কিংবা তারও আগে থেকে তার পিতা ঈশ্বর শিবপ্রসাদ বন্দোপাধ্যায় পৌরসভার ট্যাক্স কালেক্টর পদের কাজ করা সত্ত্বেও পুরাতন গঙ্গা ঘাটে , মায়ের পূজা শুরু করেন। পরবর্তীতে স্যার অসম্মানী দে গঙ্গার ঘাটে মন্দির নির্মাণ করেন। ১৯৭৮ পিতার অসুস্থ হওয়ার পর থেকে পাকাপাকিভাবে নতুন মন্দিরের পুজোর দায়ভার তার উপর পরে। তবে অতীতে মাঝে মধ্যে মহোৎসবের সময় দুএক বস্তা চাল ডাল ছাড়া পৌরসভা থাকে খুব একটা সুবিধা পাননি তিনি। তবে বেশ কিছু ভক্তবৃন্দ এ ব্যাপারে অনেকটাই সহযোগিতা করে আসছেন । করোনা আবহে, লোক জামায়াতের সম্ভাবনা নেই তবে, মধ্যরাতেও এই শুভ ক্ষনে মায়ের মুখ দেখার জন্য হাজির থাকেন অনেকেই।

Leave a Reply