সোশ্যাল বার্তা : করোনা সংক্রমণের জের পড়েছে রক্তদান শিবিরের ওপরে। বিশেষ করে করোনা’র দ্বিতীয় ঢেউ , সাথে নির্বাচন, রমজান মাস, গ্রীষ্মকাল এবং করোনার টিকা নেওয়ার কারণে রক্তদান শিবির সেভাবে হচ্ছে না, রাজ্যের প্রতিটি ব্লাড সেন্টার প্রায় রক্ত শূন্য। ফলে বিপদে পড়ছে থ্যালাসেমিয়া সহ মুমূর্ষ রোগীরা।
সেই সমস্ত কথা বিবেচনা করে নদীয়া জেলার মাজদিয়ার অঙ্ক শিক্ষক অরূপ বিশ্বাস তার মায়ের চতুর্থ মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার রক্তদান শিবির এর আয়োজন করেন এবং তিনি আর তার ভাই নিজেও রক্তদান করেন ও তার সমস্ত ছাত্র ছাত্রী কে রক্তদানে আগ্রহী করে তোলেন ।
এই রক্তদান শিবিরে মোট ৪০ জন ছেলে ও মেয়ে রক্তদান করেন, তাদের মধ্যে বেশির ভাগই প্রথম বারের মতো রক্তদান করেন।
আজকের রক্তদান শিবিরটি কে একটি বিশেষ রক্তদান শিবির বলা চলে , কারন আজকের শিবিরের শুভ সূচনা হয় এমন একজন রক্ত দাতাকে দিয়ে, ৬৪ বছরের বৃদ্ধ যার দুই চোখ ই অন্ধ, নাম সঞ্জিত সরকার, এবং সাথে তার পুত্র অঙ্কুশ সরকার ও রক্ত দান করেন।
সঞ্জিত বাবু জানান, ” ১৯৯৫ এ বাড়িতে চুরি করতে এসেছিল,তখন আমি জানালা দিয়ে টর্চ মেরে দেখতে যাওয়ায় রাইফেলের গুলি এসে বাম চোখে লাগে,পরে অপারেশন করতে গিয়ে আমার বাম চোখের রেটিনা ও নষ্ট হয়ে যায়। ওই অবস্থায় অনেক রক্ত লেগেছিল আমার, ব্লাড ব্যঙ্কের পাশাপাশি অনেক রক্তদাতা সরাসরি রক্ত দিয়েছিলন। ছেলের মুখে শুনেছি রক্ত সংকট এর কথা, তাই আমিও এলাম রক্ত দিতে, রক্ত দিয়ে খুব ভালো লাগলো, সবাই যেন এই মহান কাজে এগিয়ে আসে।
অরূপ বিশ্বাস জানান, ” সঞ্জিত বাবুর এই বয়সে, এত মনের জোড় দেখে , আমি আপ্লুত, আমি এর আগেও বৃষ্টি তে ভিজে গিয়ে করোনা পরিস্থিতি তে রক্ত দিয়েছি, এবার ও আমি দেখছি রক্তের খুব সংকট ,তাই মায়ের স্মৃতির উদ্দেশ্যে আয়োজন করেই ফেললাম , মোট ৪০ জন রক্ত দিয়েছে। আমি খুব খুশি ”
এই শিবিরে উপস্থিত ছিল কৃষ্ণগঞ্জের সেচ্ছাসেবী সংস্থা ইচ্ছেপূরণ, যারা সকল রক্তদাতা কে একটি করে গাছ উপহার দেয়।
এছাড়াও উপস্থিত ছিল, ইমারজেন্সি ব্লাড সার্ভিস, রুটি ব্যাংক , হেলপিং অভিজিৎ সহ বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা ।