বাংলা ক্যালেন্ডার আদিবাসী বিভিন্ন পরবের সংযোজন দাবি করলো “দিশারী”

Social

মলয় দে, নদীয়া :- আদিবাসী কথাতেই স্পষ্ট যে অধিকারের দিক থেকে অন্তত তারা এগিয়ে! সে জায়গায় , অধিকার তো দূরে থাক স্বাধীনতার এত বছর পার হয়ে যাওয়ার পরও আজও বিভিন্ন বিষয়ে তাঁরা রয়েছেন ব্রাত্য! ক্রমশ নিজস্বতা হারাচ্ছেন অতীত ঐতিহ্যের , বিশেষ শ্রেণীর প্রতি সকলের আবেগ পরিলক্ষিত হয় তবে বাস্তবায়ন খুব বেশি চোখে পড়ে না । তবে দিশারী সংস্থা তাদের স্বতন্ত্র সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নিয়মিত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সংস্থার পক্ষ থেকে উপলব্ধি করেছে, ভাদু টুসু মতো দু’একটি কথা সকলেরই জানা কিন্তু, সারা বছরে আরো বেশকিছু ধর্মীয় উৎসব তাদের উত্তরসূরি কাছেও ক্রমশ অম্লান হয়ে যাচ্ছে। পয়লা বৈশাখের পূর্ণ তিথিতে নদীয়া তথা বাংলার আদিবাসী সমাজের গুরুত্বপূর্ণ পরব গুলিকে তারা তুলে ধরতে চেয়েছে বাংলা ক্যালেন্ডারে। যা এর আগে কোনো বাংলা ক্যালেন্ডারে উল্লেখ পাওয়া যায়নি। অথচ বাংলার আদিবাসী সমাজ বাংলা থেকে আলাদা নয় আর এই সমাজ বাংলার শিকড়কে ধরে রেখেছে বলে মনে করা উচিত। এই ক্যালেন্ডারে লুপ্তপ্রায় বাংলার সংস্কৃতি তুলে ধরার চেষ্টা করার প্রচেষ্টা করছে দিশারী যা আজও বেশিরভাগ মানুষের কাছে অজানা। প্রচারের অভাবে বাংলার লোকসংস্কৃতি আজ প্রায় মাটির সাথে মিশে যেতে বসেছে। ঠিক এই ভাবনা নিয়েই প্রাচীন লোকসংস্কৃতি কে এই ক্যালেন্ডারে জায়গা করে দিলে সাধারণ মানুষ প্রাচীন পরবগুলো সম্বন্ধে জানতে পারবেন। ফলে এর প্রচার ও প্রসার দ্রুত হবে বলে মনে করেন দিশারী সদস্যরা। তাদের মতে লিপিবদ্ধ হয়েছে বহু ইতিহাস তবে শুধু লিপিবদ্ধ করলেই বাংলার শিল্প-সংস্কৃতি রক্ষা করা সম্ভব নয়। প্রচার ও প্রসার এর মাধ্যমেই প্রাচীন লোকসংস্কৃতিকে রক্ষা করা সম্ভব হবে। গত 24 বছর নদিয়ায় আদিবাসী সমাজের সাথে কাজ করতে গিয়ে নানা অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন বারবার সেই অভিজ্ঞতা থেকেই তারা লক্ষ্য করেছেন নদীয়ার আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ বহু বছর ধরে তাদের মূল জায়গা থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার ফলে তাদের নিজস্ব লোকসংস্কৃতি প্রায় হারাতে বসেছে এবং নতুন প্রজন্মের আদিবাসী ছেলেমেয়েরা তাদের পরব সম্বন্ধে সেভাবে অবগত নয়। তারা বিশ্বাস করেন এই ক্যালেন্ডার নদীয়ার আদিবাসী সমাজের মানুষের কাছে অত্যন্ত মূল্যবান সম্পদ হয়ে উঠবে এবং তারা তাদের পরব গুলো সময় মত উদযাপন এবং রক্ষা করতে পারবে।

এ বিষয়ে দিশারীর কর্ণধার মানসী দাস জানান “কাজটিতে যেই গুনি ব্যক্তিরা আমার সাথে আছেন তারা হলেন পুরুলিয়া থেকে লোকসংস্কৃতি গবেষক কিরীটি মাহাতো এবং নগেন পুনুরিয়ার , তথ্য সংগ্রহের সঠিক স্থানে এবং সঠিক মানুষের কাছে যে দুজন মানুষ আমাদেরকে পৌঁছে দিয়েছিলেন তারা হলেন দীপক কালিন্দী এবং দিশারী সংস্থার উৎপল মাহাতো। এই মানুষগুলো না থাকলে এই ঐতিহাসিক তথ্য সংগ্রহ কোনভাবেই সম্ভব হতো না।”

এখন এক ঝলকে দেখে নেব , বারো মাসে আরো কি কি অজানা পরব আছে তাদের ?

১)বৈশাখ মাস : ধর্মরাজ গাজন

২/জৈষ্ঠ মাস: জাতাল পূজা

৩/আষাঢ় মাস : ‌‌ ”

৪/শ্রাবণ মাস : মনসামঙ্গল

৫/ভাদ্র মাস : করম পরব

৬/আশ্বিন মাস : ছাতা পরব

৭/কার্তিক মাস : ‌‌ বাঁদনা পরব

৮/অগ্রায়ন মাস : ছোট মকর

৯/পৌষ মাস : মকর সংক্রান্তি

১০/মাঘ মাস : বুড়া ভান সিং

১১/ফাল্গুন মাস : সিঝান পরব

১২/ চৈত্র মাস: ‌ সারহুল পরব

Leave a Reply