শীতের পাতাঝরা ,ডালে ডালে পলাশ জানান দিচ্ছে , বসন্ত এসে গেছে

Social

মলয় দে নদীয়া :-নজরুল গীতি তে হলুদ গাঁদার ফুল/পলাশ রাঙা ফুল….

কবিগুরুর লেখায়, ওরে পলাশ! ভরে পলাশ রাঙা রঙের শিখায় শিখায় দিকে দিকে আগুন জ্বলাস।
শীতের শেষে যখন পাতারা ঝরে যায়! রিক্ত পলাশ গাছের কোলজুড়ে তখন আসে সহস্ত্র রক্তিম পলাশ ফুল। দেবকাঞ্চনের বেগুনি আভা শিমুলের রক্তবর্ণ এবং পলাশের অগ্নিবর্ণ দেখে মনে হয় ওরে ভাই ফাগুন লেগেছে বনে বনে…..
কালী পূজার জবা দুর্গাপূজার পদ্ম ঠিক তেমনি সরস্বতী পুজোয় পলাশ। তাই বাসন্তী পঞ্চমী দে শ্বেতশুভ্রাদেবী মাতৃশ্রেষ্ঠা প্রজজন এবং উর্বরতা বৃদ্ধির কারণে ঋতুবতী নারীর গর্ভধারণের উদ্দীপ্ত কারি সরস্বতী দেবী, রক্তবর্ণ পলাশ প্রিয়া হয়ে ওঠেন। ঠিক পূজার পরের দিন শীতল ষষ্ঠী তে মা ষষ্ঠীর পূজার রীতি, আজব বাঁকুড়া বীরভূম পুরুলিয়া লালমাটির দেশের মহিলারা পলাশ পাতা বেটে খান পুত্র সন্তান লাভের আশায়।

হিন্দু মতে পলাশ গাছের ত্রিপদ ব্রহ্মা বিষ্ণু ও শিবের প্রতীক।মহাভারতের সভাপর্ব ইন্দ্রপ্রস্থ নগরের বর্ণনায় কৃত্রিম জলাধার এর পাশে ছিলো পলাশের বন। দুই হাজারেরও বেশি বছর আগে লেখা কালিদাসের সংস্কৃত নাটক শকুন্তলা বর্ণিত প্রমোদ উদ্যানে পলাশের উল্লেখ পাওয়া যায়। বাংলাদেশ ভারত ছাড়াও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া কম্বোডিয়া থাইল্যান্ড ইন্দোনেশিয়া মালয়েশিয়া শ্রীলঙ্কা নেপালে জন্মে দীর্ঘ মন্থর গতিতে বৃদ্ধি পাওয়া বহুবর্ষজীবী পর্ণমোচী এই বৃক্ষ। শুধুমাত্র মনের স্বাস্থ্য নয় শরীরের ক্ষেত্রে যথেষ্ট উপকারী ! বাকল থেকে প্রাপ্ত আঠা বেঙ্গল কিনো নামে বিখ্যাত, বীজের বুড়ো কীটপতঙ্গ নাশক হিসেবে ব্যবহৃত হয়, এই গাছের কাঠ নিম্নমানের হলেও জলে অত্যন্ত টেকসই। ভালো কাঠ কয়লা তৈরি হয় গাছ থেকেই। পেটের নানা সমস্যায় ,কৃমি নিবারণে, শুক্রতারল্য, বারবার প্রস্রাবের প্রবণতা বন্ধ করতে, ঘুমের মধ্যে অস্বাভাবিক ঘাম কমাতে, হাইড্রোসিল বা একশিরা রোগে, বিছার দংশনে, দেহের লাবণ্য ফেরাতে এই গাছের জুড়ি মেলা ভার।

Leave a Reply