মলয় দে, নদীয়া: ধর্মীয় পীঠস্থান নদীয়ার পুণ্যভূমিতে জন্মেছেন বহু কৃতি সন্তান। যার মধ্যে নদীয়া শান্তিপুর অন্যতম। সুপ্রাচীন এই শহরে, সাহিত্য, কাব্য চর্চা, চিত্রাংকন, বিভিন্ন যন্ত্র সঙ্গীতবাদক এবং শাস্ত্রীয় সংগীতের ধারাবাহিকতা আজও অব্যাহত।
রানাঘাট ঘরানার নগেন্দ্র নাথ দত্তের সুযোগ্য শিষ্য তারা পদ দাস শান্তিপুরের এই সুসন্তানের দেশব্যাপী পরিচিত ছিল শাস্ত্রীয় সংগীতে। শান্তিপুরের রেবা মুহুরীর নামও স্বর্ণাক্ষরে লেখা আছে শাস্ত্রীয় সংগীতের ইতিহাসে। কৃষ্ণনগরের অমিয় নাথ সান্যাল শাস্ত্রীয় সংগীত হিসেবে লিখে গেছেন বেশকিছু বই , সে সময় গবেষণার বিষয়ে তাঁকে সহযোগিতা করেছিলেন শান্তিপুরের বিভিন্ন কণ্ঠশিল্পী বাদ্য শিল্পীগণ। বেহালা বাদক ভি ভি যোগীর সুযোগ্য ছাত্র ড: সীতানাথ ইন্দ্র এই শহরেরই সুসন্তান। সেই ধারাবাহিকতা আজও বয়ে নিয়ে চলেছেন, তবলা ও সন্তুর বাদক সুবীর মুখার্জি,তবলা ও কণ্ঠশিল্পী সন্দ্বীপ সেন, সীতানাথ সেন, পরমানন্দ রায় সহ বেশ কিছু সঙ্গীতপ্রিয় শিল্পী। এবং নিয়মিত শিক্ষা দানের মাধ্যমে গড়ে তুলেছেন শাস্ত্রীয় সংগীতের আগামীর প্রজন্ম।
স্বর্গীয় দেবু সান্যালের উদ্যোগে বেশ কিছুবছর আগেও সারারাত ব্যাপী শাস্ত্রীয় সংগীত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতো শান্তিপুরে। তার মৃত্যুর পর তা বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় সে সময় থেকেই শাস্ত্রীয় সংগীতের এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য শান্তিপুরের এবং রাজ্য বা দেশের বাইরেরও বেশ কিছু সংস্কৃতিপ্রবন মানুষের সহযোগিতায় গড়ে ওঠে রাগিনী।
এ বছর তাদের দু’দিনব্যাপী ১৭তম বার্ষিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হলো শান্তিপুর পাবলিক লাইব্রেরী হলে। ৬ই ফেব্রুয়ারি এবং ৭ই ফেব্রুয়ারি। অন্যান্যবার দেশ-বিদেশে থাকা রাগিণীর শুভাকাঙ্খীরা এসে পৌঁছাতেন শান্তিপুরে। এবছর হয়তো করোনা পরিস্থিতির জন্যই নিজেদের ছাত্র-ছাত্রীরাই মঞ্চস্থ করলেন তাদের নিবেদন।
তবে সংস্থার উদ্যোগীরা জানান, সুদূর কানাডা থেকে মেঘমল্লার সহ বেশকিছু সহৃদয় মানুষের সহযোগিতায় শান্তিপুরের বেশ কিছু আর্থিক দিক থেকে অভাবী অথচ মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের স্কলার্শিপ দেওয়ার ব্যবস্থা চালু হয়েছিল গত বছর থেকে। এ বছরও সেই ধারাবাহিকতা ক্ষুন্ন হয় নি এতোটুকু! এবং মূলত তাদেরই সহযোগিতায় রাগিণীর অফিসে নিয়মিত ইংরেজি শিক্ষা দেওয়া সম্ভবপর হচ্ছে বেশকিছু ছাত্র-ছাত্রীদের।