বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্যে স্থান না পেলেও যিনি দেখবেন তিনি আশ্চর্য হবেন

Social

নিউজ সোশ্যাল বার্তা, ১৩ই নভেম্বর ২০‍১৯: সূর্য মন্দির সূর্যের উদ্দেশ্যে গুজরাটের মাহেসেনা জেলায় নির্মিত একটি মন্দির। এটি আহমেদাবাদ থেকে ১০২ কি মি দূরে পুষ্পবতী নদীর তীরে নির্মিত। ১০২৬ সালে

সোলাঙ্কি রাজত্ব কালে রাজা ভীমদেব ১ এর আমলে মন্দিরটি নির্মিত হয়। বর্তমানে মন্দিরটি উপাসনার কাজে ব্যবহৃত না হলেও এটি ভারতীয় প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অধীনে রয়েছে ।

জৈন লিপিতে মধেরাকে ‘ভগবত গ্রাম’ বলা হয়েছে। পুরাণে মাধেরার উল্লেখ রয়েছে ‘মোধেরক’বা ‘মোহেরক’ নামে। মধেরা বিখ্যাত তার সূর্য মন্দিরের জন্য। মধেরা ছাড়া ভারতের অন্য তিনখানি বিখ্যত সূর্য মন্দির হল – কোনারক, মার্তণ্ড আর খাজুরাহো। আমেদাবাদ থেকে ট্রেনে ৬৮ কিমি দূরে মাহেসানা। সেখান থেকে সড়কপপথে পাটান হয়ে মধেরা। আমেদাবাদ থেকে মধেরা অবধি পুরো পথটাই সড়কপথে আসা যায়। দূরত্ব,প্রায় ১৫০ কিমি।

অতীতের গুজরাটের রাজধানী ছিল পাটান। পাটান থেকে পঁচিশ কিমি দূরে পুষ্পাবতী নদী তীরে মধেরা। শোনা যায় ১০২৬ সালে সোলাঙ্কি রাজবংশের রাজা ভীমদেব নির্মান করান মধেরা সূর্য মন্দির। ঐতিহাসিকদের মতে গুজরাটের স্বর্ণযুগের সাক্ষী মধেরা। যে সময় মধেরার সূর্য মন্দির নির্মাণের কাজ চলছে তখন গুজরাটের অন্যপ্রান্তে সোমনাথ মন্দির লুন্ঠন করছেন সুলতান মামুদ। মধেরা ধ্বংস করেন আলাউদ্দিন খিলজি। মন্দিরের ভেতরে সভামণ্ডপে রয়েছে ১২টি স্তম্ভে সূর্যদেবের ১২টি মূর্তি, যা বারো মাসে সূর্যদেবের বারোটি রূপের পরিচয়বাহী। আর রয়েছে অপূর্ব ৫২টি কারুকার্য করা স্তম্ভ। যা ৫২ সপ্তাহের প্রতীক। স্তম্ভে খোদাই করা রয়েছে রামায়ণ, মহাভারত, কৃষ্ণলীলার নানান অধ্যায়।

মন্দিরের অতীত ইতিহাস অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানা গেল, একসময় এখানে ছিল সূর্যদেবের এক বিশালাকার স্বর্ণমূর্তি। সারথী অরুণ এবং সাতটি ঘোড়াও ছিল নিরেট সোনায় তৈরি। সূর্যের উত্তরায়ণের ওপর নির্ভর করে বিশেষ বিশেষ সময় যখন স্বর্ণমূর্তিতে আলো পড়ত তখন সকলেরই মনে হত যেন সূর্যদেব স্বয়ং নেমে এসেছেন। সুলতান মামুদ নিজের দেশ গজনী ফিরে যাওয়ার আগে মূর্তিটি সাথে করে নিয়ে যান।

রয়েছে সুবিশাল জলাধার । জলাধারের কেন্দ্রে পৌছাতে চারটি দেইলি পার করতে হয়। ছোট পিরামিড আকৃতির ধাপ দিয়ে এই দেইলি গুলো বিন্যস্ত। বিভিন্ন দেব দেবীর ভাস্কর্য দিয়ে এই দেইলি গুলোর গায়ের পাথরে বিন্যস্ত যাতে পাথর গুলো অমরত্ব লাভ করতে পারে। সোলাঙ্কি রাজত্ব কালে ভগবান বিষ্ণু, ভগবান নটরাজ(শিব), দেবী শীতলমাতার বিস্ময়কর সুন্দর ভাস্কর্য তৈরি হয়েছিল।

মন্দির সংলগ্ন সূর্যকুণ্ডটিরও কারুকার্য অসাধারণ। সিঁড়িগুলি পিরামিড আকারের। রয়েছে দুটি তোরণ। জানুয়ারি মাসে এখানে হয়,’মধেরা নৃত্য উৎসব’। শাস্ত্রীয় সঙ্গীত ও নৃত্য পরিবেশিত হয়। সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনার দায়িত্বে থাকেন গুজরাটের পর্যটন বিভাগ ।