মলয় দে নদীয়া:- বাউনি,সংক্রান্তি, উৎরায়ন! শেষের দিনটি মাঘ মাসের প্রথম দিন বিজ্ঞানের ভাষায় উত্তরায়ন! অর্থাৎ এই সময় সূর্য উত্তর দিকে গমন করে!মকর সংক্রান্তি কেই উত্তরায়নের সূচনাকাল হিসেবে পালন করা হয় ভারতবর্ষে। সেই উপলক্ষে নানান পূজো পার্বণ ধর্মীয় রীতিনীতি লক্ষ্য করা যায় !
বিভিন্ন জায়গায় বসে মেলা, খুশিতে পরিবার পরিবার গুলি মত্ত হয় চড়ুইভাতিতে। এমনই নদীয়ার শান্তিপুরের বিভিন্ন এলাকায় লক্ষ্য করা গেলো শুক্রবার। জনশ্রুতি অনুযায়ী তৎকালীন গঙ্গা অববাহিকা বাগআঁচড়া’র চরপানপাড়া এলাকায় শ্রীচৈতন্যদেব গঙ্গা বিহারে যাওয়ার সময় এই এলাকায় নেমে নিজে হাতে রন্ধন করে সেরেছিলেন মধ্যাহ্নভোজ ! তাই চড়ুইভাতির জন্য বছরের এই দিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আধুনিক প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা , অতশত না বুঝেই বেপরোয়া আনন্দে মেতে উঠেছেন! শান্তিপুর থেকে নৃসিংহপুর যাওয়ার মূল রাস্তার উপরেই চলছে শব্দের লড়াই। জেনারেটর ইঞ্জিন ভ্যানের উপর বসিয়ে অপর একটি ভ্যানে দশ-বারোটি বক্স , ডিজে বক্স মাইক একসাথে বাজিয়ে অদ্ভুত আনন্দে মত্ত হয়েছে তারা! অথচ ওই স্থান দিয়েই পার হতে হচ্ছে শিশু বৃদ্ধ অসুস্থ রোগী অ্যাম্বুলেন্সকে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই ব্যাপারে উদ্যোগ খুব একটা লক্ষ্য করা গেল না। আশেপাশে দু এক জন থানায় ফোন করে জানালেও, লিখিত অভিযোগের অভাবেই হয়তো তারা ব্যবস্থা নেননি ! প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে, আইন ভঙ্গকারির বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা না করলে কোন ব্যবস্থায় কি নেওয়া যায় না ?
অপর স্থান অর্থাৎ চর পান পাড়ার ওই একদিনের জন্য গড়ে ওঠে পিকনিক স্পটে অন্য আর সাধারন পাঁচটা পরিবার তাদের পরিবার সদস্য নিয়ে আনন্দে পিকনিক করতে এসে , শব্দ দানবের অত্যাচারে নিরানন্দে ফিরে যাচ্ছেন অনেকেই! তাঁদের মধ্যে একজন জানান “অভিযোগ করা কি খুবই গুরুত্বপূর্ণ! শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হচ্ছে কিনা তা দেখার কর্তব্যও কি, আবেদনের ভিত্তিতে পরিষেবা পাওয়া যাবে আগামীতে?”
কিছুদিন আগে মাইক লাইট ব্যবসায়ীরা জানিয়েছিলেন শব্দের তীব্রতা নিয়ন্ত্রণ বিধি মেনেই, তারা ভাড়া দেন মাইক সেট। এমনকি চোঙ মাইক বক্সের পরিমানও তারা নিয়ন্ত্রণ করেন অনেকটাই! তাহলে আজকে মানবিকতা হারিয়ে শুধুই কি ব্যবসায়িক মুনাফা লাভ?