বখতিয়ার খলজী’র দেওয়া ‘মঠ’ উপাধি পাওয়া মঠ বাড়িতে বেলোয়ারী ঝাড়বাতির মোমের আলোয় অসাধারণ রাধাকৃষ্ণের যুগল মূর্তি

Social

মলয় দে, নদীয়া : নদীয়া জেলার শান্তিপুরের বিগ্রহ বাড়ি গুলির মধ্যে অন্যতম শান্তিপুর মঠ বাড়ি । শান্তিপুরের সাধারণ মানুষের মধ্যে অনেকের মতে এই রাস যাত্রায় এই মঠ বাড়িতে বৈদ্যুতিক আলো বিহীন সম্পূর্ণ মোম বাতির সাজে সজ্জিত বাড়িটির মাঝে সুসজ্জিত রাধা রমনের যুগল মূর্তি না দেখলে পুরো রাসযাত্রার অনুষ্ঠানটি যেনো সম্পূর্ণ হয় না।

সাধারণভাবে তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে জানা যায় এই বিগ্রহ বাড়িটির বয়স প্রায় পাঁচশত বছর । কথিত আছে এই মঠ বাড়ির অষ্ট ধাতুর রাধা কৃষ্ণের যুগল মূর্তি গঙ্গার ধারে পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল । এই বাড়ির পূর্বপুরুষরা মূলত চালের ব্যাবসায়ী ছিলেন । এটাও জানা যায় যে এই বিগ্রহ প্রতিষ্ঠার পর তাদের ব্যাবসা আরো সমৃদ্ধশালী হয়ে উঠেছিল ।
আবার অন্য আর একটি সূত্রের খবর এই বাড়িকে কেন্দ্র করে রয়েছে ইতিহাসের এক স্মৃতি বিজড়িত কাহিনী । একটি যুদ্ধের সময় বখতিয়ার খলজি তার সেনা বাহিনী নিয়ে যথেষ্ট সমস্যায় পড়লে এই মঠ বাড়িতে তারা আশ্রয় নিয়েছিলেন , এই বাড়ির মানুষেরা বখতিয়ার খলজি কে যথেষ্ট পরিমাণে সমস্ত দিক দিয়ে সহায়তা করেছিলেন বলেই প্রাচীন ইতিহাস সূত্রে জানা যাচ্ছে । বিপদের সময় তাদের উপকারে সন্তুষ্ট হয়ে এই পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞতা বশে তাদের নবাবি “মঠ” উপাধি প্রদান করেন স্বয়ং বখতিয়ার খিলজী । সেই সময় থেকেই এই বাড়ির মানুষজনের পদবী হয়ে ওঠে ” মঠ ” । তবে এই বাড়িটিকে আরো খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছে দিয়েছিলেন বড়ো গোস্বামী পরিবারের মথুরেশ গোস্বামী । মথুরেশ গোস্বামীর উদ্যোগে শান্তিপুরে রাস যাত্রায় রাধা কৃষ্ণের বিশেষ পুজো শুরু হলে এই মঠ বাড়িকে প্রাধান্য দিয়ে তাদেরও রাস উৎসব এর সামিল করলেন । এই বাড়ির রাস উৎসব এর বিশেষত্ব হলো সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ বর্জিত বেলোয়াড়ি ফানুসের মোম বাতির আলোয় রাস অঙ্গন সেজে ওঠে এবং এই বাড়ির বিগ্রহ শ্রী শ্রী রাধারমন জিউ ভাঙা রাসের।পরিক্রমায় অংশ নেন না ।

Leave a Reply