মলয় দে নদীয়া :- গতকাল ছিল জাতীয় হস্তচালিত তাঁত দিবস। করোনা আতঙ্কে, স্বাভাবিক জনজীবন হয়ে গেছে এলোমেলো। কেন্দ্রীয় সরকারের বস্ত্রবয়ন দপ্তর অনুমোদিত এ বছর জাতীয় পুরস্কার পেতে চলেছেন নদীয়ার রানাঘাটের হবিবপুরের রঞ্জিত সরকারের স্ত্রী সরস্বতী সরকার।
৩৫ বছর আগে বিবাহ সূত্রে রানাঘাট পানপাড়ায় এসেই অসুস্থ স্বামীর চিকিৎসার তাগিদে শিখে নিয়েছিলেন তাঁত বোনা। স্বামী-স্ত্রী কেউই পড়াশোনা না জানায়, এক পুত্র ও কন্যা সন্তানের পড়াশোনার ব্যাপারে দৃঢ় সংকল্প করেছিলেন তিনি। যন্ত্রের মতো, তাঁতে কর্মরতা অবস্থায় সকাল সন্ধ্যা নিয়ম করে ছেলেমেয়েদের নিয়ে পড়তে বসাতেন। স্বপ্ন দেখছেন ছেলে যোগদান করবে দেশ সেবায় সৈনিক হিসেবে, মেয়ে শিক্ষাদান করবে।
প্রথমটি সফল হলেও দ্বিতীয় টির জন্য অপেক্ষায় রয়েছেন সরস্বতীদেবী। নিজের অজান্তেই অর্থ উপার্জনের প্রয়োজনে পেশার টানে কবে কবে হয়ে উঠেছিলেন দক্ষ তাঁত শ্রমিক।
প্রসিদ্ধ শিল্পী এবং প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী বীরেন বাবুর সান্নিধ্যে এসে হাতের কাজের শিল্প নৈপুণ্যতার দৃষ্টি আকর্ষন করাতে সক্ষম হন। এরপর বীরেন বাবুর যোগাযোগে বিভাগীয় সরকারি দপ্তরে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য পৌঁছান তিনি। লকডাউনের কিছুদিন আগে বাড়িতে চিঠি পৌঁছায় গতকাল অর্থাৎ ৭ ই আগস্ট তারিখটি জাতীয় তাঁত দিবসের দিন তিনি পেতে চলেছেন তাঁত শিল্পীর সর্বোচ্চ সম্মান। কিন্তু বর্তমান করোনা পরিস্থিতি ক্রমাগত ভয়াবহ হওয়ায় অনুষ্ঠানটি স্থগিত রাখা হয়েছে কিছুদিনের জন্য।
গতকাল আমাদের প্রতিনিধি তার বাড়িতে পৌঁছেছিলো এই বিশেষ দিনে। এ বিষয়ে তিনি জানান “সরকারকে ধন্যবাদ জানাই আমাকে সম্মান জানানোর মাধ্যমে বাংলার প্রত্যেক তাঁত শ্রমিককে শিল্পীর মর্যাদা দিতে চলেছেন সরকার। আজকের এই বিশেষ দিনে তাদের কাছে আমার করুন প্রার্থনা এই ক্ষুদ্র শিল্প টিকে রুগ্নপ্রায় অবস্থা থেকে আবারো গতিশীল করে তোলার।”