দেশের বাইরেও সমাদৃত কুশমন্ডির কাঠের মুখোশ

Social

ওয়েব ডেস্ক: দক্ষিণ দিনাজপুরের উত্তরাংশে ছোট্ট জনপদ কুশমণ্ডি। এই ব্লকের অখ্যাত গ্রাম মহিষবাথান ক্রমশ জনপ্রিয়তা লাভ করছে তার ‘মুখা শিল্পের’ জন্য। এই গ্রামের শিল্পীদের তৈরি কাঠের রংবেরঙের মুখোশ বাংলার গন্ডি ছাড়িয়ে সারা ভারতে প্রসারতা লাভ করেছে।

এমনকি বেশ কয়েক বছর হল কুশমণ্ডির মুখোশ পাড়ি দিচ্ছে বিদেশেও। ফ্রান্স, ব্রিটেন, জার্মানি, আমেরিকার উৎসাহী মানুষদের ঘরের দেওয়ালে শোভা পাচ্ছে এখানকার মুখোশ। এতদিন প্রচারের আলোকে না থাকলেও গত দুই-তিন বছরে আমাদের বাংলায়ও বেশ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে কুশমণ্ডির এই মুখোশ। বাড়ির বসার ঘরে বা বারান্দায় এই মুখোশ যে আলাদা করে দৃষ্টি আকর্ষণ করবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার একটি প্রাচীন সংস্কৃতি হল মুখোশ। বহু প্রাচীন এই শিল্প কয়েক শতাব্দী ধরে প্রবাহমান। অতীতে স্থানীয় অধিবাসীদের মধ্যে প্রচলিত গম্ভীরা নাচ বা মুখা খেলা এর প্রয়োজনে প্রচলিত হলেও বর্তমানে ঘর সাজানোর উপকরণ হিসেবে অত্যন্ত জনপ্রিয় এই মুখোশ । কাঠের সঙ্গে ইদানিং বাঁশের মুখোশও তৈরি হচ্ছে। দেওয়ালে টাঙানোর জন্য কালী, নরসিংহ , রাক্ষস , বাঘ, মাছ, সর্প, গণেশ ইত্যাদি মুখোশের পাশাপাশি তৈরি হচ্ছে ফ্রিজ ম্যাগনেট, অর্থাত ফ্রিজে কিংবা আলমারির গায়ে সহজে আটকে রাখা যায় এমন মুখোশো। জেলার বা রাজ্য স্তরের পুরস্কার ও পেরেছেন এই শিল্পীরা ।শুধু দেশে নয বিদেশেও পাড়ি দিয়েছে এই সব শিল্পীদের তৈরি মুখোশ। একটি ভাল মুখোশ তৈরিতে সময় লাগে দিন তিনেক। মন ভোলানো রঙের বৈভব ,নজর-কাড়া কারুকার্য আর ঐতিহ্যবাহী বিমূর্ত শৈলি- এই তিন মিলেই কুশমণ্ডির মুখোশ নজরকাড়া।

মুখোশ শিল্পের প্রচার ও আধুনিকরণের উদ্দেশ্যে গত চার বছর ধরে মহিষবাথানের শিল্পীরা ক্রমাগত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আমাদের রাজ্য সরকারও এই মুখোশ শিল্পের প্রচার ও প্রসারে নানান রকম ভাবে উদ্যোগ নিয়েছেন। ‘বাংলার হস্তশিল্প’ পোর্টালও তাদের ক্ষুদ্র সামর্থ্যে কাজ শুরু করেছে কুশমণ্ডির মুখোশ শিল্পীদের সাথে। তাদের বানানো মুখোশ সরাসরি পৌঁছে দেবার পরিকল্পনা রয়েছে উৎসাহীদের কাছে।

কুশমণ্ডি যাবেন কিভাবে
কলকাতা ষ্টেশন থেকে রাধিকাপুর এক্সপ্রেসে রায়গঞ্জ পৌঁছে সেখান থেকে গাড়ি করে কুশমণ্ডি যেতে পারেন। এ পথের দূরত্ব ৩৮ কিমি। আবার শিয়ালদা থেকে গৌড় এক্সপ্রেসে বুনিয়াদপুরে নেমে সেখান থেকেও কুশমণ্ডি যেতে পারেন। এ পথের দূরত্ব ১৮ কিমি।

‘বাংলার হস্তশিল্প’ পোর্টালের উদ্যোগে
কুশমণ্ডিতে গিয়ে নিজেদের পছন্দমত মুখোশ কিনে আনতে পারেন। কিন্তু সকলের পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠেনা সময়ের অভাবে। কয়েকদিনের মধ্যেই ‘বাংলার হস্তশিল্প’ পোর্টাল থেকেও নিজেদের পছন্দসই কুশমণ্ডির কাঠের মুখোশ ও ঘর সাজাবার বহু সামগ্রী পেয়ে যাবেন একেবারে ঘরে বসে একেবারে সাধ্যের মধ্যে। ব্যবহার করুন নিজের জন্য, উপহার দিন প্রিয়জনেদের। বাঙালীর মধ্যে বেঁচে থাক কুশমণ্ডির মুখোশ, বেঁচে থাক কুশমণ্ডির মুখোশ শিল্পীরা।

কৃতজ্ঞতা , তথ্য ও ছবি: বাংলার হস্তশিল্প

Leave a Reply