মলয় দে নদীয়া:- কারোনার ভয়াল গ্রাসে সারা পৃথিবী আজ টালমাটাল । করোন সংক্রমণ ঠেকাতে সারা দেশজুড়ে চলছে লকডাউন । পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মিত সাধারণ মানুষকে বাড়িতে থাকার আবেদন জানানো হচ্ছে । তবুও রাস্তাঘাট বা বাজারে অকারনে ঘুরে বেড়ানোর চিত্র দেখা যাচ্ছে সাধারণ মানুষকে । অথচ এই নাগরিক সমাজের লোকেদের হাতে অপদস্ত লাঞ্ছিত হতে হলো সন্তানসম্ভবা এক মহিলার।
নদীয়া শান্তিপুর শহরের ২ন ওয়ার্ডের বাগানে পাড়া অঞ্চলের গোবিন্দ বিশ্বাসের কন্যা বাসনার ৮ বছর আগে বিয়ে হয় কলকাতার টালিগঞ্জ অঞ্চলে। দ্বিতীয়বারের জন্য অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার কারনে ও বাবা-মার সান্নিধ্য পেতে গতকাল বিকাল চারটে নাগাদ তার স্বামী শান্তিপুরের বাপের বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে যান ভাড়া করা গাড়ি নিয়ে।
অন্যদিকে এলাকাবাসীর বক্তব্য অনুযায়ী ৪-৫ জন ওই বাড়িতে আশ্রয় নেয়। এলাকার কাউন্সিলকে বিষয়টি জানালে তিনি ১৪ দিন গৃহবন্দী থাকার পরামর্শ দেন। আগতদের সংখ্যা নিয়ে ক্রমাগত জল্পনা বাড়তে থাকে এলাকাবাসীর।
এমনকি বাড়ির সদর দরজা কাটা দিয়ে ঘিরে দেয়া হয় গৃহবন্দী করানোর উদ্দেশ্যে, ভয়ে আতঙ্কে দিশাহীন হয়ে কারো সাথে কথা বলেন না ওই পরিবার, ফলে সমস্যা আরো জটিল হতে থাকে। অবশেষে সংবাদকর্মীদের উপস্থিতিতে শান্তিপুর থানার ওসি সুমন দাস কে জানানো হয় । সঙ্গে সঙ্গে এই বিষয়ে শান্তিপুর থানার পক্ষ থেকে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় ।
পুলিশ অফিসার অশোক ঘোষের মানবিকতায় ভ্রম ভাঙ্গে এলাকাবাসীর। পুলিশের পক্ষ থেকে সম্পূর্ণ নিজেদের তত্ত্বাবধানে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে স্ক্রিনিং করিয়ে নিয়ে এসে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয় অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে । এলাকাবাসীকে সতর্ক করে বলে দেন অন্য আর পাঁচটি স্বাভাবিক পরিবারের মতো আগামীকাল থেকে এই পরিবারও বসবাস করবে সকলের সাথে।
নাগরিক সমাজের কাছে একটি প্রশ্ন রাখতেই হয় আর কত করবে পুলিশ ? সমাজের প্রতি আমাদের নিজেদেরকে কি কোন দায়বদ্ধতা নেই ?