মলয় দে নদীয়া:-করোনার প্রভাবে বহু অতীতকাল থেকে চলে আসা আশ্রম গুলির অবস্থা শোচনীয়। জেল গুলি আজ সংশোধনাগার হলেও, সে আমলে অন্যায় অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত সমাজচ্যুত মানুষগুলির মানসিক সংশোধন হত ধর্মীয় গুরুদেব সংস্পর্শে এসে। নিউক্লিয়ার পরিবারের অসম প্রতিযোগিতায় এমনিতেই তলানীতে ধর্মীয় রীতিনীতি আদব কায়দা। তার উপর করনার থাবা।
বহু প্রাচীন কাল থেকে এ রকমই এক আশ্রমে আশ্রিত হতো বিভিন্ন কারণে গৃহহীনরা। ৭১ সালে দেশ ভাগের পর নদীয়া জেলার শান্তিপুর এর তিন নম্বর রেল গেট পার্শ্বস্থ রাধারমন আশ্রম। রাধাকৃষ্ণের পূজারী রাধারমণ গোস্বামী এই আশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা। পরবর্তীতে তাঁর যোগ্য উত্তরসূরী হিসেবে একমাত্র সন্তান হরি দাস বৈরাগ্য (গোস্বামী) দায়িত্ব নিয়ে চালান এই আশ্রম। কণ্ঠমালা চন্দন বিনিময়ে বিবাহ করলেও, আধ্যাত্মিক কারণে সন্তানের জন্ম দেননি তিনি। তবে তার হাজার বারোশো ভক্তের মধ্যে কন্যাসম মুর্শিদাবাদের মিনতি দাস স্বামী সন্তান সংসার ত্যাগ করে ৪০ বছর আগে চলে আসেন আশ্রমের দায়িত্ব পালন করতে।
সেই থাকে ভক্তবৃন্দের আসা যাওয়া চলতেই থাকে, তাদের দেওয়া সহযোগিতায় চলে আশ্রম। বর্তমানে দুজন শারীরিক প্রতিবন্ধী, দুজন স্বামী হারা সন্তান পরিত্যক্ত, এবং পাঁচজন ভিক্ষুককে নিয়ে গড়া মিনতিদেবীর ভাঁড়ার আজ শুন্য। পরিবারের সদস্যদের খাবার যোগাবেন কি করে? সবই তো বন্ধ! ভিক্ষা মিলবে কোথা থেকে? ৫ বিঘা জমির উপরে গড়া এই আশ্রমের কিছু আমগাছের ফল বিক্রি একমাত্র উপায়! তাও তো দেরি বহুদিন। অপেক্ষা করা, আর গুরুর উপর ভরসা রাখা ছাড়া কোন উপায় দেখছেন না তিনি।