দেবু সিংহ,মালদা: আজ থেকে চালু হয়ে যাচ্ছে রাধিকাপুর হাওড়া এক্সপ্রেস। দিনের বেলা কোলকাতা অভিমুখে যাওয়ার জন্য প্রতিদিনের ট্রেনের দাবি বরাবর জানিয়ে আসছিল হরিশ্চন্দ্রপুর বাসি। আশা ছিল এই নতুন ট্রেনের স্টপেজ পাবে হরিশ্চন্দ্রপুর। কিন্তু রেল দপ্তর থেকে স্টপেজ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হতেই দেখা যায় হরিশ্চন্দ্রপুর নাম নেই। যথারীতি সামসি স্টেশনে এই ট্রেনের স্টপেজ দেওয়া হয়েছে। এই নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়ছে হরিশ্চন্দ্রপুর এর নিত্যযাত্রী থেকে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়।
হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকার এক নিত্যযাত্রী সাদিয়া সুলতানা জানালেন আমরা মাঝে মাঝে মালদা যাওয়ার জন্য সকালের ট্রেন এর উপর নির্ভর করতে হয় কিন্তু কোন কারনে সকালের ট্রেন ধরতে না পারলে একদম বিকেল অব্দি বসে থাকতে হয়। আমরা ভেবেছিলাম এই ট্রেনটা এই হরিশ্চন্দ্রপুর স্টপেজ পাবে। এখানে স্টপেজ হলে আমাদের মালদা , ও দক্ষিণবঙ্গের কিছু জেলায় যাওয়ার সুবিধা হত। কিন্তু স্টপেজ না মেলায় আমরা হতাশ। এ বিষয়ে আমরা মাননীয় সংসদ কে আবেদন করব যাতে হরিশ্চন্দ্রপুর ট্রেন স্টপেজ দেওয়া হয়।
একটা সময় হরিশ্চন্দ্রপুর এ স্টেশনে বিভিন্ন ট্রেনের দাবিতে অনশন আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া এলাকার বাসিন্দা চন্দ্রনাথ রায় জানালেন একটা সময় আমি হলদিবাড়ি সুপার ফাস্ট এক্সপ্রেস এর স্টপেজের দাবিতে লাগাতার অনশন আন্দোলন চালিয়ে গেছিলাম হরিশ্চন্দ্রপুর স্টেশনে। আন্দোলনের কাছে নতি স্বীকার করেছিল ভারতীয় রেল। তারা স্টপেজ দিয়েছিল। হরিশ্চন্দ্রপুর বাসীকে এই ট্রেন স্টপেজ এর জন্য সংগঠিত আন্দোলনে নামতে হবে। আমরা প্রয়োজনে দপ্তরে যোগাযোগ করব। যাতে হরিশ্চন্দ্রপুর ট্রেন স্টপেজ পাওয়া যায়।
হরিশ্চন্দ্রপুর প্রাক্তন বিধায়ক তথা তৃণমূলের জেলা সহসভাপতি তাজমুল হোসেন জানান তিনি দীর্ঘদিন ধরে হরিশ্চন্দ্রপুর এ কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টপেজের জন্য দাবি করে আসছিলেন এ নিয়ে বিগত বিধানসভা তিনি বিষয়টি উত্থাপন করেছিলেন কিন্তু আজও এর সুরাহা হলো না। এবার নতুন যে রাধিকাপুর থেকে হাওড়া ট্রেনটি শুরু হল এরা স্টপেজ হরিশ্চন্দ্রপুর পেল না। নিয়ে তিনি সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছেন অবিলম্বে হরিশ্চন্দ্রপুর এর স্টপেজ দেওয়া হোক এর জন্য তিনি লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
হরিশ্চন্দ্রপুর মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য তারকেশ্বরে রায় জানালেন কলকাতা কিংবা রায়গঞ্জ যাওয়ার জন্য ট্রেন টি হরিশ্চন্দ্রপুর এর বুকে স্টপেজ এর খুব প্রয়োজন ছিল। কিন্তু রেল কর্তৃপক্ষ হরিশ্চন্দ্রপুর স্টপেজ দিল না। ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে আমরা বহুবার হরিশ্চন্দ্রপুর স্টেশনে কাঞ্চনজঙ্ঘা সহ অন্যান্য দিনের ট্রেনের স্টপেজ এর দাবি করেছিলাম। ভেবেছিলাম এই ট্রেন স্টপেজ পাওয়া যাবে। কিন্তু বাস্তবে তা হলো না। ট্রেনটি স্টপেজ পাওয়া গেলে ব্যবসায়ী থেকে সাধারণ মানুষের খুব উপকার হত।
এ প্রসঙ্গে উত্তর মালদার বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু জানালেন আমি হরিশ্চন্দ্রপুর স্টপেজের ব্যাপারে মাননীয় রেল মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি এবং ডিআরএম জানিয়েছি। তারা বলেছেন এই ট্রেনটি আগে চালু হোক তারপরে হরিশ্চন্দ্রপুর স্টপেজের ব্যাপারে ভেবে দেখা যাবে। ট্রেনের টাইমিং এর হিসাব করে আগামীতে হরিশ্চন্দ্রপুর স্টপেজের সম্ভাবনা রয়েছে।
ভারতীয় রেলের কাঠিয়ার ডিভিশনের ডিআরএম রবীন্দ্রনাথ বর্মা জানিয়েছেন সিউড়ি হাওড়া এক্সপ্রেস টি এক্সটেনশন করে রাধিকাপুর থেকে চালানো হচ্ছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে হাওড়া পৌঁছানোর একটা ব্যাপার আছে। তাছাড়া রেলওয়ে ট্রাফিকিং এর একটা সমস্যা থাকে। সমস্ত দিক বিচার করি আমরা স্টপেজ গুলো দিয়ে থাকি। সব জায়গায় স্টপেজ হলে দূরপাল্লার ট্রেনের সমস্যা হতে পারে।