মলয় দে নদীয়া:-কথায় বলে স্বাস্থ্যই সম্পদ। আর সেই কারণেই নিজেদের স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নশীল হওয়ার জন্যে বার্তা দেন বিভিন্ন চিকিৎসকেরা। আর তা যদি হয় স্বল্প খরচে এবং ফলপ্রসু তাহলে তো মানুষের আগ্রহ থাকবেই ।
ঠিক তেমনি স্বনামধন্য হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক ড: প্রতীপ ব্যানার্জির স্মৃতির উদ্দ্যেশ্যে ডক্টর প্রতীপ ব্যানার্জি মেমোরিয়াল হোমিও ক্লিনিক এন্ড সার্ভিসেস এর সৌজন্যে এবং তার সহধর্মিনী রিংকু ব্যানার্জির উদ্যোগে আয়োজন করা হল একটি মেগা হোমিওপ্যাথিক স্বার্থ শিবির। এই স্বাস্থ্য শিবিরটি আয়োজন করা হয় রবিবার শান্তিপুর সূত্রাগর পুলিশ ফাঁড়ির নিকটে একটি বেসরকারি লজে।
সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এই স্বাস্থ্য শিবিরের রোগী দেখতে এসেছেন স্বর্গীয় ডা: প্রশান্ত ব্যানার্জি ও ডা: প্রতিপ ব্যানার্জীর প্রশিক্ষিত এবং অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকেরা। যারা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সমস্ত রোগীদের চিকিৎসা করছেন। এই সমস্ত চিকিৎসকেরা এককালের ডাক্তার প্রতিপ ব্যানার্জির সঙ্গে পার্শ্ব চিকিৎসক হিসেবে চিকিৎসা করেছেন রোগীদের। তারা জানাচ্ছেন ঔষধের ব্যবহার পদ্ধতি মর্ডান হোমিওপ্যাথি সম্পূর্ণ তাদের নিজস্ব উপলব্ধি, রোগীর সাথে দীর্ঘ আলোচনা এবং তাদের মন মানসিকতা শুনে বুঝে আগে যে পদ্ধতিতে এই চিকিৎসা হতো তার অবসান ঘটিয়ে স্বল্প সময়ে ফলপ্রসূ চিকিৎসা পরিষেবা তারা দিয়ে থাকেন।
এই স্বাস্থ্য শিবিরে জটিল থেকে জটিলতম রোগ যেমন টিউমার, সিস্ট, ক্যানসার, চর্মরোগ, কিডনি রোগ, হরমোন জনিত রোগ, ক্রনিক রোগ, পেটের রোগ, মহিলাদের রোগ, পুরুষদের রোগ, শিশুদের রোগ, হার্টের রোগ, নাক কান গলা এমনকি মানসিক রোগ মোটামুটি সর্ব ধরনের রোগেরই চিকিৎসা করা হল এই দিন এই স্বাস্থ্য শিবিরে। ডাক্তার বাবুদের ফিজ সকলের জন্য ফ্রি থাকলেও অসহায় দুঃস্থ রোগীদের ঔষধ পর্যন্ত বিনামূল্যে দিয়ে এদিনের এই স্বাস্থ্য শিবিরে চিকিৎসা করলেন একের পর এক নামজাদা হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকেরা। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এই চিকিৎসা পরিষেবা পেয়ে খুশি একাধিক স্থানীয় মানুষেরা। অনেকেই জানাচ্ছেন তারা এ ধরনের ডাক্তারবাবুদের সান্নিধ্য পেতে বেশ সময় লাগে এবং সুদূর কলকাতায় যাওয়া ও সম্ভব হয় না কিন্তু তারাই আজ শান্তিপুরে উপস্থিত হওয়ার কারণে তারা উপকৃত।
স্বর্গীয় প্রতি ব্যানার্জির সহধর্মিনী রিঙ্কু ব্যানার্জি জানান, “শান্তিপুরে এই স্বাস্থ্য শিবির করা আমাদের বহুদিনের ইচ্ছে ছিল। প্রচুর লোক এখান থেকে উনার কাছে চিকিৎসা করাতে যেতেন। যদিও বাবা-মায়ের সাথে শান্তিপুরের নিবিড় সম্পর্ক তারা এখানেই থাকতেন পূর্বে তাই পূর্ব পরিচিত অনুযায়ী সেই সমস্ত রোগীদের আমাদের কাছে আবদার ছিল আপনারা এখানে একটি ক্লিনিক খুলুন। সেরকম ইচ্ছেও আমাদের ছিল। কিন্তু উনি চলে যাওয়াতে অনেকটা পিছিয়ে পড়ি আমরা। এরপর ওনার সাথে থাকা বিভিন্ন চিকিৎসকেরা মিলে উদ্যোগ নিয়ে আমরা এই স্বাস্থ্য শিবিরের আয়োজন করি শান্তিপুরের। এই শিবিরটার মূলত উদ্দেশ্যই ওনাকে অর্পণ করা এবং উনার কাজকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। ভবিষ্যতেও এই শিবির চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে রয়েছে আমাদের।”
সেকালের বিভিন্ন ডাক্তার তাদের অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করেন। সদা হাস্য সকাল দশটা থেকে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত দেড়শ জন রোগী দেখেও হাসিমুখে এ প্রজন্মের এক মহিলা ডাক্তার জানালেন এই সমস্যার সাথে যুক্ত হতে পেরে প্রকৃতপক্ষে মানুষের সেবা করতে পারছি। প্রবীণ ডাক্তারবাবু জানালেন প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকায় চিকিৎসা করাতে গিয়ে নিজেদের পারিশ্রমিক ও পাওয়া যায় না। কিন্তু যে কারণে একজন চিকিৎসক হয়ে ওঠা সেই রোগীর উপশম করতে পেরে মনে শান্তি মেলে।
হোমিওপ্যাথি পুরোপুরি বিজ্ঞান নয় এমন নানান তির্যক প্রশ্নের উত্তরও হাসিমুখে তারা বর্ণনা করে বলেন আয়ুর্বেদিক ইউনানী কবিরাজি হোমিওপ্যাথি এখন সকল সরকারি হাসপাতালেও উপলব্ধ। লক্ষ লক্ষ মানুষ এই পদ্ধতিতে উপকৃত । আসলে মতামত প্রকাশ করতে গেলে পড়াশোনা করতে হয় সেটা যারা না করেন তারাই হয়তো এমন ধারণা পোষণ করেন। এমন বেশকিছু রোগ আছে যা একমাত্র হোমিওপ্যাথিতেই নির্মূল করা সম্ভব।
রোগীরাই জানান চটজলদি রোগ সারাতে গিয়ে অন্য রোগ বাসা বাঁধতে শুরু করেছে শরীরে। তাই তারা মন থেকে ভালবাসেন হোমিওপ্যাথি। মূল্যবান ওষুধ সম্পর্কে তারা জানাচ্ছেন এখন ভারতেই সমস্ত ওষুধ তৈরি হয়। সস্তার চিকিৎসা সম্পর্কে জানান চিকিৎসা পরিষেবার মধ্যে পড়ে ব্যবসা নয় তাই ডাক্তার থেকে ওষুধ ম্যানুফ্যাকচারার হোলসেল থেকে রিটেলার সকলেই এই পরিষেবার কথা মাথায় রেখে চলেন।