মলয় দে নদিয়া:- জামাই ষষ্ঠী।ধর্মীয় বেড়াজাল পেরিয়ে জামাই ষষ্ঠী এখন উৎসবের আঙিনায় । রীতি রীতি উপাচার যাই হোক তবে খাদ্য খাবারের ধরন বদলেছে বেশ কিছুটা তবে আদর আপ্যায়ন জামাই আদর কিন্তু কমেনি এতোটুকু।
আগে যেমন আম কাঁঠাল লিচু তাল শাঁস মন্ডামিঠাই ওই মিষ্টি মাছ মাংস কেনার হিরিক ছিলো এখন তা একটু কমে যুক্ত হয়েছে হোম ডেলিভারির মাধ্যমে ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত এমনকি বিদেশেরও নানান খাদ্য খাবার বাড়িতে এনে খাওয়া। প্রচন্ড গরমে শাশুড়িদের রান্নাঘর থেকে মুক্তি দিতেই হয়তো জামাইদের এই মহানুভবতা। তবে মূল খাদ্য খাবারের থেকেও বেশি প্রিয় মুখরোচক। এই লম্বা তালিকায়, রয়েছে স্যান্ডউইচ, পিজ্জা, বার্গার বিরিয়ানি পোলাও আরো কত কি ! তবে রসনার এই তালিকায় সকলের পছন্দ অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের মকটেল, কুলপি রাবড়ি আইসক্রিম বিভিন্ন ধরনের ঠান্ডা পানিও কিংবা নানান আইসক্রিম ছাড়া সবকিছুই বেমান। তবে বেশিরভাগ নিরামিষ হওয়ার কারণে বয়োবৃদ্ধ শ্বশুর শাশুড়িরও বেশ পছন্দের হাল ফ্যাশনের এ ধরনের নানান রকমারি আইটেম ।
তবে নদীয়ার শান্তিপুর ডাকঘর এলাকায় একটি আইসক্রিম পার্লারের দোকান জামাই ষষ্ঠীর প্রাক্কালে এখন সোশ্যাল মিডিয়ার তাদের শেয়ার এখন চর্চার বিষয় ।
কর্তৃপক্ষ জানায় সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের জামাইষষ্ঠীর অফার এর পোস্ট শেয়ার করলেই মিলবে আইসক্রিম এবং গিফট! সম্প্রতি কয়েক মাস আগে উদ্বোধন হওয়া সেই দোকানের পক্ষ থেকে এই দুর্বিষহ গরম থেকে জামাই শ্যালক শালিকাদের মুক্তি দিতে চলে এল এক ধামাকাদার অফার, যা ফেসবুকে ইতিমধ্যেই ভাইরাল। শান্তিপুর ডাকঘরে অবস্থিত দ্যা লাভ বার্ডস আইসক্রিম পার্লারের একটি পোস্ট ফেসবুকে শেয়ার করলেই পাওয়া যাচ্ছে এই অভিনব অফারের সুযোগ। শেয়ার করলেই মিলবে আইসক্রিম সহ বিশেষ এক উপহার।
আইসক্রিম মানেই আমরা জানি যে কোনও ভ্রাম্যমাণ দোকানে এক কোণে ফ্রিজে রাখা থাকতো বিভিন্ন ধরনের আইসক্রিম। যেখান থেকে কিনে হয় দোকানে দাঁড়িয়ে কিংবা বাড়িতে নিয়ে এসে খেতে হতো। তবে আইসক্রিম খাওয়ার সেই চিরাচরিত প্রথা বর্তমানে অনেকখানি পরিবর্তন হয়েছে। শহর কিংবা মফস্বলে গড়ে উঠেছে এখন আইসক্রিম পার্লার। যেখানে বসে আপনি নিজস্ব পছন্দের মত আইসক্রিম বানিয়ে পারবেন খেতে। ঠিক তেমনি শান্তিপুরের বাসিন্দা সুমন প্রামানিক পেশায় একটি প্রাইভেট ব্যাংকে কর্মরত তিনি শুরু করেন শান্তিপুরে ,কৃষ্ণনগরের অবস্থিত আইসক্রিম পার্লার the love birds এর franchise নিয়ে। যার একটি রয়েছে কৃষ্ণনগর হাই স্ট্রীটে এবং অন্যটি সম্প্রতি চালু হয়েছে শান্তিপুর ডাকঘরে। আর শান্তিপুরে নিজের দোকানের প্রচার করতেই এই অভিনব অফার নিয়ে এলেন তিনি। ইতিমধ্যেই তারা আইসক্রিম পার্লারে অভূতপূর্ব সারা মিলছে বলে জানান তিনি।
শান্তিপুরে আইসক্রিম পার্লারটি চালু করেন তারা ২৫ মার্চ দোলের দিন। চালু করার পর থেকে এখনো পর্যন্ত সেই অর্থে কোন অনুষ্ঠান না থাকায় সেভাবে কোন অফার তারা দিতে পারেননি। তবে এই জামাইষষ্ঠীর সুযোগ কিছুতেই তারা হাতছাড়া করতে রাজি নন। কারণ জামাইষষ্ঠী বর্তমানে বাঙ্গালীদের এক অন্যতম উৎসবের পরিণত হয়েছে। আর এই উৎসবে জামাইদের শাশুড়িরা দিয়ে থাকেন নানা রকম পদের খাবার, তার মধ্যে বর্তমানে সংযোজন হয়েছে আধুনিক এই ডেজার্ট আইসক্রিম। আর সেই সুযোগ কেই কাজে লাগাচ্ছেন আইসক্রিম পার্লারের কর্মকর্তারা।
কি সেই অফার? সংস্থার তরফ থেকে জানানো যাচ্ছে যে, জামাই কিংবা তার শ্যালক শালিরা সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই অফারের পোস্টটি যদি শেয়ার করেন তাদের মধ্যে করা হবে একটি লটারি। তারপর সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভ সম্প্রচারিত করে শেয়ার করা ব্যক্তিদের থেকে ১০ জনকে বাছাই করা হবে। এবং লাইভ সম্প্রচারণের মাধ্যমে তাদের নাম ঘোষণা করা হবে। এবং সেই লটারির প্রথম ১০ জনকে সংস্থার তরফ থেকে দেওয়া হবে বিনামূল্যে একাধিক উপহার। আর সেই উপহার পেতেই বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ায় হিড়িক লেগে গেছে সেই পোস্টটি শেয়ার করার। শুধু জামাই বা শ্যালক শ্যালিকারা নন, অল্পবয়স্ক শাশুড়ি যারা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করতে পারেন তারাও এই পোস্টটি শেয়ার করছেন।
এ প্রসঙ্গে শাশুড়িরা জানান, আগে আম কাঁঠাল লিচু এই সমস্ত দিয়ে জামাইদের জামাইষষ্ঠী উপলক্ষে বরণ করা হতো। তবে বর্তমানে নতুন এডিশন হয়েছে আইসক্রিম সহ অত্যাধুনিক খাবারের। আইসক্রিম কমবেশি প্রত্যেকেই পছন্দ করেন। সেই জন্যেই বাড়তি একটি খাবারের পথ বেড়েছে মেনুতে। আর এই বাড়তি পথ যদি এভাবে শেয়ার করে বিনামূল্যেই মিলতে পারে, তাহলে মন্দ কোথায়!
জামাইরা বলছেন, আগে আম কাঠাল লিচু কিনে নিয়ে যেতে হতো শ্বশুরবাড়ি তবে বর্তমানে আইসক্রিমের সংযোজন টাও হয়ে গিয়েছে। তবে যদি শেয়ার করার মাধ্যমে সেই আইসক্রিমের খরচা বেঁচে যায় তাহলে অনেকটাই সাশ্রয় হয় পকেটের।
অনেকে জানাচ্ছেন অর্থটা বড় কথা নয় সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া মানে তা ধর্মীয় রীতিনীতি বেড়াজাল ভেদ করে জামাই ষষ্ঠী এসে পৌঁছেছে উৎসবের আঙিনায় ।
কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন আমরা লক্ষ্য করেছি বিশেষ করে এই প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের মধ্যে আইসক্রিম খাওয়ার প্রবণতা অনেকটাই বেশি। বিশেষ করে এখন যা গরম পড়েছে! আর সেই কারণেই এমন একটি অফার রাখ, যাতে আমাদের দোকানের প্রচারের পাশাপাশি তাদের জন্যও একটু সুবিধা হয়। এছাড়াও দোকানের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সামাজিক দায়িত্ব পূরণে ক্রেতাদের চারা গাছ প্রদান, সপ্তাহে একদিন রবিবার আগত ভিক্ষুকের বিনামূল্যে আইসক্রিম বিতরণ করা ইত্যাদি ।
তবে জামাইষষ্ঠী উপলক্ষে অভিনব এই অফারের লাভ ওঠানোর জন্য বর্তমানে হিড়িক লেগে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়!