উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার দুদিন আগে বাবার চিরবিদায় ! প্রতিকূলতা কাটিয়ে NEET পরীক্ষায় নজির গড়লো বড়রাঙ্কুয়ার শুভাঙ্গী

Social

সোশ্যাল বার্তা: একটা কথা প্রচলিত আছে ” জীবনে সফল হতে চাইলে দুটি জিনিস প্রয়োজন- জেদ আর আত্মবিশ্বাস। এই দুটো জিনিসকে সঙ্গী করতে পারলে সমস্ত প্রতিকুলতার সাথেই লড়াই করা যায়”। সেই কথাটিকে যেন আরও একবার সত্যি প্রমান করলেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার রামনগর থানার অন্তর্ভুক্ত বড়রাঙ্কুয়া গ্রামের বাসিন্দা শুভাঙ্গী দে।

দিনটা ছিলো ১২ মার্চ; ২০২৩। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ঠিক দুদিন আগের সকালে হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মাত্র ৫৫ বছর বয়সে মৃত্যু হয় তার বাবার। বাবার এই আকস্মিক মৃত্যুতে পরিবারের সকলের মতো কান্নায় ভেঙে পড়ে শুভাঙ্গী। কিন্তু হাল ছেড়ে দেয়নি সেই মেধাবী ছাত্রী…..চোখের জল মুছে নিজের মনের জোরকে পাথেয় করে প্রত্যেকটা পরীক্ষা দেয় সে। আর এভাবেই প্রতিকূলতাকে জয় করে নিজের স্কুলে (রামনগর বালিকা বিদ্যালয়) প্রথম স্থান অধিকার করে শুভেঙ্গী। তার প্রাপ্ত নম্বর ছিলো ৪৬৭। ছোটো থেকেই বাবার স্বপ্ন ছিলো মেয়ে ডাক্তার হোক। বাবার মৃত্যুর আগের দিনও বাবার সাথে ভালো সময় কাটিয়েছিলো সে। বাবা বলেছিলেন ” নিজের লক্ষে এগিয়ে যা;কখনো কোনো কিছু নিয়ে চিন্তা করবি না; আমি সবসময় তোর পাশে আছি।”

বাবার সেই স্বপ্ন পুরন করার জন্য ১ বছর কঠোর পরিশ্রম করে এবারে সর্বভারতীয় মেডিক্যাল প্রবেশিকা পরীক্ষায় (NEET) বসে সে। আর এবারে শত প্রতিকুলতাকে হারিয়ে NEET পরীক্ষায় অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করে নজির গড়লো বড়রাঙ্কুয়ার শুভাঙ্গী দে। মোট ৭২০ নম্বরের মধ্যে তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৯৬।ছোটোবেলা থেকেই মেধাবী শুভাঙ্গী পড়াশুনোর পাশাপাশি ছবি আঁকাতেও অসাধারণ প্রতিভার অধিকারী। তার এই সাফল্যে খুশি পরিবার থেকে শুরু করে পাড়া প্রতিবেশী সহ সকল শিক্ষক শিক্ষিকারা। আসলে স্বপ্ন পূরণ করার জেদ এবং অদম্য ইচ্ছা থাকলে কোনও প্রতিকূলতাই যে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না, তা আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলো শুভাঙ্গী। নিটে সফল হয়ে এখন অনেকেরই অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছে এই মেধাবী তরুণী।

Leave a Reply