এক শিশু এবং মহিলাকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়ে পরিবারের হাতে তুলে দিলেন জনপ্রতিনিধি

Social

মলয় দে নদীয়া:- প্রায় মধ্যরাতে শান্তিপুর নতুনহাটে অবস্থিত শান্তিপুর পৌরসভা পরিচালিত নিরাশ্রয়ীদের সাময়িক আশ্রয়স্থল দিশারীতে দেখা গেলো নদিয়া জেলার শান্তিপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান সুব্রত ঘোষ কে।

জানা যায় এক শিশু এবং মহিলাকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়ে তার পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার জন্যই তিনি এসেছেন।
বর্ধমান সদর থানা মির্জাপুরে বাপের বাড়ি চুমকি মন্ডল আজ থেকে প্রায় চার বছর আগে বিবাহ হয় ওই এলাকার হাট গোবিন্দপুর পলশার বাসিন্দা রমেশ মন্ডল এর সাথে। চুমকি এবং রমেশের দাম্পত্য কলহ প্রায়শই লেগে থাকে। এর আগে একবার আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিল চুমকি, যদিও সেবারও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় প্রাণে বেঁচে ছিল। বড় মেয়ের তিন বছর বয়স সে মামা বাড়িতে থাকে ।

গতকাল দাম্পত্য কলহে অধৈর্য হয়ে দেড় বছরের বাচ্চা সাথে নিয়ে ভাগীরথী পার করে শান্তিপুরে চলে আসে কোনরকম পূর্ব পরিচিত না থাকা সত্ত্বেও। আর কোনোদিনই না ফেরার জন্যই তিনি মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিয়ে রওনা দিয়েছিলেন শ্বশুর বাড়ি থেকে । সারাদিন পথে পথে ঘুরে অবশেষে সন্ধ্যার সময় শান্তিপুর শ্যামচাঁদ মোড় এলাকায় পৌরসভার চেয়ারম্যান সুব্রত ঘোষের বাড়ির পাশাপাশি ভাবে ঘুরতে থাকে । স্থানীয় সেনটু ঘোষ নামে এক ব্যক্তি তার প্রতিবেশী চেয়ারম্যান সুব্রত ঘোষ কে জানান। তিনি শিশুর এবং মহিলার কিছু আহারের ব্যবস্থা করে দীর্ঘ সময় ব্যয় করে ধৈর্য সহকারে তার কাছ থেকে বিস্তারিত শোনেন,। খবর দেন তার বাপের বাড়ি এবং শশুর বাড়ির লোকজন সহ ওই এলাকার জনপ্রতিনিদের। তবে ওই শিশু এবং মহিলাকে নতুন হাটে অবস্থিত দিশারীতে রাখার ব্যবস্থা করেন তিনি। এরপর আনুমানিক রাত এগারোটা নাগাদ ওই মহিলার চার ভাই স্বামী এবং এলাকার মানুষজন এসে পৌঁছান তাদের হাতে সহ ওই মহিলাকে তুলে দেন চেয়ারম্যান। তবে সমস্ত বিষয়টি সেখানকার থানা এবং স্থানীয় থানাকে অবহিত করেন চেয়ারম্যান।

যদিও চুমকি দেবীর ইচ্ছা অনুসারে শ্বশুরবাড়িতে নয় বাপের বাড়িতেই আপাতত থাকার ব্যবস্থা হয় তবে সেখানকার জনপ্রতিনিধি এবং থানার আধিকারিকগনের উপস্থিতিতে আগামীতে একটি সালিশি সভার মধ্য দিয়ে বিষয়টি নিষ্পত্তি করা হবে বলেই জানিয়েছেন ওই মহিলার পরিবার।

তবে একজন পুরসভার চেয়ারম্যান সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ভিন জেলার এক মহিলা এবং শিশুর প্রাণ বাঁচাতে নিয়মিত আলাপচারিতা এবং আত্মহত্যার পথ থেকে তাকে বাড়ির পথে পাঠানোর শুভ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সকলেই।

Leave a Reply