মলয় দে নদীয়া:- নদীয়ার শান্তিপুর মতিগঞ্জ এলাকায় রাজ্য সরকারের ফিশারী দপ্তরের অধীনস্ত সুদীর্ঘ ১৩ একর জায়গা প্রায় পাঁচটি পুকুর দীর্ঘদিন পড়ে থাকা আমূল সংস্কারে বিধায়ক ব্রজ কিশোর গোস্বামী উদ্যোগ নিয়েছিলেন ২০২২ এর এমনই এক শীতকালে। এরপর বেশ কয়েকবার সরকারি আধিকারিকগন তা দেখে গেলেও আজ রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরী এলেন প্রত্যক্ষ করতে। ইকো ফ্রেন্ডলি ট্যুরিজম কেন্দ্র গড়ে তোলার বিষয় সম্মতি জানান তিনি।
এদিন মন্ত্রী বলেন জলের একটা সমস্যা রয়েছে তবে তা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করা হচ্ছে। অন্যদিকে এখানকার একটি কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের দীর্ঘদিন নির্বাচন না হওয়ার কারণে নিষ্ক্রিয় হয়ে রয়েছে। তাদের সাথেও কথা হয়েছে। কারণ এক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। জলাশয়ের সৌন্দর্যায়ন মাছ চাষ ছাড়াও নানা ধরনের সরকারি প্রজেক্ট এর মাধ্যমে সাজিয়ে তোলা হবে সমগ্র এলাকা যার ফলে পর্যটকদের আকর্ষিত করবে। তবে পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন ধরনের দোকান নির্মাণের মাধ্যমেও কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে জানান মন্ত্রী। এর জন্য প্রাথমিকভাবে সরকারি ব্যয় বরাদ্দ করা হয়েছে ৬৪ লক্ষ টাকা।
এদিন মন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করতে উপস্থিত ছিলেন শান্তিপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান সুব্রত ঘোষ ভাইস চেয়ারম্যান কৌশিক প্রামাণিক ,পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যা প্রিয়া গোস্বামী সরকার,
১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রশান্ত গোস্বামী সহ বিভিন্ন জনক জনপ্রতিনিধি এবং দলীয় নেতৃবৃন্দ।
বিধায়ক ব্রজ কিশোর গোস্বামী এবং মন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরী দুজনেই নিরামিষভোজী, কিন্তু ফিশারির মৎচাষ প্রসঙ্গে তারা তৎপর। তিনি বলেন বিভিন্ন পশু প্রাণী পাখি প্রতিপালনে সরকারি ডাক্তার থাকলেও শুধুমাত্র মাছের জন্যই ফিশারী দপ্তর রয়েছে , কারণ মাছে ভাতে বাঙালির একটা বড় অংশ এই পেশার সাথে যুক্ত।
অন্যদিকে নিষ্ক্রিয় হয়ে থাকা মৎস্যজীবীদের কো-অপারেটিভ সদস্যরা শোনান তাদের দুর্দশার কথা, মাঝেমধ্যেই পৌরসভার নিকাশি নোংরা জল ঢুকে পড়ে, মাছের চারা কিংবা জল পরিষ্কারের চুন অথবা পুকুর পরিষ্কারের শ্রমিক অর্থাভাবে কিছুই করতে পারেন না তারা। তবে আজ মন্ত্রী সপারিষদ আসার কারণে, আবারো উদ্দীপনা পেয়েছেন তারা। জানান মন্ত্রীর কথা অনুযায়ী আবারও সকল সদস্যদের দেখে বিষয়টি বোঝানোর চেষ্টা করবেন অনাগ্রহীদের বাদ দিয়ে নতুন করে আগ্রহী মৎস্যজীবীদের নিয়ে আগামীতে সরকারি তত্ত্বাবধানে কোঅপারেটিভ সদস্যরা এ কাজে সহযোগিতা করবেন। অন্যদিকে পৌরসভার পক্ষ থেকে চেয়ারম্যান সুব্রত ঘোষ জানান বর্ষার সময় কিছুটা এ ধরনের সমস্যা হলেও পৌরসভা বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে। নিকাশি ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হয়েছে গোটা শান্তিপুর জুড়ে। রাজ্য সরকারের এই জনমুখী প্রকল্পে আগামীতে যদি পুরসভার কোন সহযোগিতা লাগে তাহলেও তারা প্রস্তুত আছে।
এদিন মন্ত্রী সহ বিধায়ক এবং অন্যান্য সকলে পায়ে হেঁটে সমগ্র এলাকাটি ঘুরে দেখেন। জানা গেছে আগামী মার্চ এপ্রিল থেকেই জোর কদমে মাছের চাষ শুরু হবে। তবে সমগ্র পরিকল্পনা রূপায়ণ করতে লেগে যাবে প্রায় বছর দুয়েক সময়। তবে শান্তিপুরের অন্যান্য আকর্ষণীয় বিষয়ের মতন মতিগঞ্জ ফিশারীও যে একটি আকর্ষণের অন্যতম বিশেষ পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠবে এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই।