মলয় দে, নদীয়া: তাঁত শাড়িতে দেশ বরেণ্য ৩৪ জনের অবয়ব এবং ভারতের মানচিত্র সহ আজাদী কা অমৃত মহোৎসব ফুটে উঠলো
রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত হস্তচালিত তাঁত শিল্পীর শিল্প নিপুণতায়
নদীয়ার ফুলিয়ার পদ্মশ্রী বীরেন কুমার বসাক কে হস্তচালিত তাঁত শিল্পের ধারক বাহক হিসাবে এখন সকলেই চেনেন । রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে রাজ্যপাল দেশের প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে রাষ্ট্রপতি সকলেরই প্রশংসিত তিনি। রাষ্ট্রপতির হাত থেকে পদ্মশ্রী সহ বিভিন্ন জাতীয় আন্তর্জাতিক পুরস্কার রয়েছে তার সংগ্রহে।
একসময় তিনি ছিলেন হস্ত চালিত তাঁতি। তার নিজের উৎপাদনের কাপড় কলকাতায় বিভিন্ন অলিগলি ঘুরে বিক্রি করা মানুষটি আজ নদীয়া জেলার সাত হাজার হস্ত চালিত তাঁত শিল্পীর অবলম্বন।
তিনি শুধু একাই এগিয়ে চলেছেন তাই নয়, করনা মহামারী জন্য ২০১৭-১৮ এবং ১৯ সালের জাতীয় পুরস্কার এ বাংলায় ঘোষিত হয় মোট আটজনের নাম যার মধ্যে বীরেন বাবুর ছাত্র পাঁচজন।
সুর সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর, ক্রীড়া জগতের যুবরাজ সৌরভ গাঙ্গুলী, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র দামোদর মোদি সহ বিখ্যাত মানুষদের পোর্ট্রেট হাতে চালানো তাঁতে, জামদানি বুটির আদলে হুবহু ফুটিয়ে তুলেছিলেন অবয়ব। যার মধ্যে বেশিরভাগই তাদের হাতে তুলে দেওয়ার সৌভাগ্য হয়।
অন্যদিকে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এ পি জে আব্দুল কালাম, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জহরলাল নেহরু, জাতির জনক মহাত্মা গান্ধী, সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ , জাতীয় সেবিকা মাদার তেরেসা এরকম বহু মহামানবের প্রতিকৃতি তার অত্যন্ত কর্মদক্ষতা শিল্প নিপুনতা এবং ধৈর্যের ফলে সমাদৃত হয়েছে সারা দেশ জুড়ে।
তবে স্বাধীনতা দিবস হোক বা প্রজাতন্ত্র দিবস সরস্বতী পুজো কিংবা বিশ্ব হস্ত চালিত তাঁত দিবস, কিংবা কোনো মহামানবের জন্ম অথবা মৃত্যু দিন। তিনি শ্রদ্ধা জানান ফাইন আর্ট জামদানি বুননের মাধ্যমে।
এবারে স্বাধীনতার ৭৬ বছর পূর্তি উপলক্ষে ছমাস আগে থেকেই তার সুদক্ষ হস্তচালিত তাঁত শিল্পীদের দিয়ে অসাধারণ শিল্পকর্ম ফুটিয়ে তুলেছেন সিল্ক বারো হাত শাড়ির উপর। যেখানে আঁচলে রয়েছে ভারতবর্ষের মানচিত্র এবং গত বছর ৭৫ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রীয় সরকারের গৃহীত “আজাদি কা অমৃত মহোৎসব” লেখা এবং লোগো ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
অন্যদিকে ৩৪ জন বিভিন্ন স্বাধীনতা সংগ্রামী এবং দেশ বরেণ্য মহামানবের পোর্ট্রেট বুটিক হিসাবে উজ্জ্বল নক্ষত্র হিসাবে বুননের মাধ্যমে সাজানো রয়েছে সমগ্র শাড়িতে।
তবে বীরেন বাবু জানান এই শাড়িটি তিনি বিক্রির উদ্দেশ্যে তৈরি করেননি দেশের ৭৬তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে তার শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। তার ইচ্ছা দিল্লির ন্যাশনাল মিউজিয়ামে এই শাড়িটি সংরক্ষিত হোক সকলের দেখার উদ্দেশ্যে। তিনি বলেন সমগ্র পরিকল্পনা তার হলেও প্রথমে ছবি আঁকার পর থেকে এই মহৎ কর্মকাণ্ড সম্পন্ন হয়েছে তার কাজ থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নদীয়ার বিভিন্ন প্রান্তের হস্ত চালিত তাঁত শিল্পীদের শিল্প উৎকর্ষতায়।