মলয় দে নদীয়া:- আগামীকাল শ্রাবণ মাসের শেষ সোমবার। আর সেই উপলক্ষেই হাজার হাজার ভক্তের দল নদীয়া জেলার নবদ্বীপে গঙ্গা থেকে পুণ্য স্নান করে সেই জল সংগ্রহ করে বাকে করে নিয়ে চলল কৃষ্ণগঞ্জের শিবনিবাস মন্দির এর উদ্দেশ্যে। শিবনিবাস মন্দির বহু প্রাচীন এক জাগ্রত মন্দির। এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শিবলিঙ্গ রয়েছে এই মন্দিরে। প্রতিবছর শ্রাবণ মাসে হাজার হাজার ভক্তরা বাঁকে করে জল নিয়ে গিয়ে শ্রদ্ধা ও ভক্তি সহকারে সেই জল শিবনিবাস মন্দিরে শিবলিঙ্গে অর্পণ করে।
এদিন সকাল থেকেই আকাশ ছিল মেঘলা, মাঝেমধ্যেই ঝিরিঝিরি বৃষ্টিপাত লক্ষ্য করা যাচ্ছিল। কিন্তু সমস্ত কিছুর বাধা অতিক্রম করে হাজার হাজার ভক্তরা কেউ পিঠে ব্যাগ কিংবা কেউ কাঁধে বাঁক নিয়ে এসে জড়ো হয় নবদ্বীপ স্বরূপগঞ্জ ঘাটে। এরপর সেখান থেকেই নৌকা পার করে তারা চলে যায় গঙ্গার ওপার নবদ্বীপে। সেখান থেকেই পূর্ণ স্নান করে ঘটে জল সংগ্রহ করে সেই জল বাঁকে করে নিয়ে মন্দিরের উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছে হাজার হাজার ভক্তরা। ৩৫ কিলোমিটারের দীর্ঘ এই পথ সকলেই খালি পায়ে হেঁটেই পার হবেন। সকলের মুখে একই বুলি “ভোলে বাবা পার করেগা, লম্বা রাস্তা পার করেগা” ।
এদিন প্রশাসনের ভূমিকাও ছিল যথেষ্ট তৎপর। হাজার হাজার ভক্তদের ভিড় সামাল দিতে এদিন সরবগঞ্জ ফেরিঘাটের বেশ কিছুটা আগেই খোলা হয়েছে অস্থায়ী টিকিট কাউন্টার। রাস্তার মোড়ে মোড়ে সিভিক ভলেন্টিয়ার এবং পুলিশ আধিকারিকেরা সামাল দিচ্ছেন ভিড়। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনাকে সরুপগঞ্জ জেটিতেও করা হয়েছিল পুলিশ মোতায়েন। পুলিশ এবং সিভিক ভলেন্টিয়ার্সরা ধীরে ধীরে যাত্রীদের নৌকা পারাপারের ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন।
গঙ্গার ঘাট সংলগ্ন এলাকায় একাধিক স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা দূর দূরান্ত থেকে আগত ভক্তদের জন্য ব্যাগ ঘট কৌটো ইত্যাদি নিয়ে বসে রয়েছেন কিছু মুনাফা লাভের আশায়। এছাড়াও পথের চারিধারে স্থানীয় বাসিন্দারা বাঁশের মাচা করে ভক্তদের বিশ্রামের ব্যবস্থা করেন এবং জল ও আহারেরও বন্দোবস্ত করেন তাদের। সবমিলিয়ে শ্রাবণ মাসের এই অন্তিম লগ্নে শিবনিবাস মন্দিরে যাওয়ার জন্য শিব ভক্তদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো।