মলয় দে নদীয়া :- দিন দুপুরে এক বৃদ্ধার ঘরের দরজার তালা ভেঙে, টিনের বাক্সে থাকা লক্ষাধিক টাকা চুরি গেল। অভিযোগের তীর নিজের সন্তানের বিরুদ্ধেই। নদীয়া জেলার শান্তিপুর থানার পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ জন্য থানায় নিয়ে গেলো ছেলে ও ছেলের বউকে।
অদ্ভুত ঘটনাটি ঘটে নদীয়ার শান্তিপুর শহরের চার নম্বর ওয়ার্ডের কামারপাড়া আগমেশ্বরী স্ট্রীটে , অমর দাসের বাড়ি। তবে অমল বাবু এখানে থাকেন না, পঞ্চাশোর্ধ বয়সেও ভিন রাজ্যে থাকেন কর্মক্ষেত্রে। নিজের কোনো বাড়ি না থাকার কারণে বহু কষ্টে দুই মেয়ের বিয়ে দেওয়ার পর, আবারো কাজে যান মাথা গোজার ঠাঁই হিসাবে, কিছুটা জমি অ্যাডভান্স দিয়ে বাকি ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা পেমেন্টের জন্য সময় নিয়েছিলেন বেশ কিছুদিন । অল্প কিছুদিনের মধ্যেই জমির মালিক কে এই টাকাটা দেওয়ার কথা ছিলো, তাই তিনি মাসের শেষে যে টাকা পাঠাতেন এবং এখান থেকে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে ধার করা টাকা এমনকি বৌমার মায়ের কাছ থেকে ধার নেওয়া টাকা ছিল ওই বাক্সে, আনুমানিক এক লক্ষ টাকার কাছাকাছি, এমনটাই জানিয়েছেন অমল বাবুর স্ত্রী শ্যামা দাস। তিনি আরো বলেন, একমাত্র ছেলে কিষান দাস ছেলের বউ রাখি দাস এবং নাতি তাদের জমিতে আলাদা ঘরে থাকে। বেশ কিছুদিন ধরে বাচ্চার জন্মদিন পালন করবে বলে ওই টাকার নেওয়ার জন্য উৎপীড়ন করে। এমনকি তাকে মারধর পর্যন্ত করে। তিনি একটি বিদ্যালয়ের পরিচায়িকার কাজ করেন। আজ দুপুর দুটো নাগাদ কাজ থেকে ফিরে দেখেন ঘরের দরজায় তালা নেই অথচ চাবি তার আঁচলে, ঘরে ঢুকে দেখেন আলমারি তছনছ করা, রূপো বা সোনার সামান্য কিছু গহনাও হাত দেয়নি তবে টাকাটা উধাও!
এরপর পার্শ্ববর্তী পাড়ায় বিয়ে হওয়া মেয়েকে খবর দিলে সে, ভাই কিশান কে চুরির বিষয়ে ফোন করতেই সে উত্তেজিত হয়ে বলে, তাকে সন্দেহ করার কারণ কি! যদিও মা বাড়ি আসার একঘন্টা আগে সে একবার বাড়িতে এসেছিলো, তবে ভাইয়ের বউ বাড়ি ছিলো না সকাল থেকেই।
এরপর শ্যামা দেবী শান্তিপুর থানা লিখিত অভিযোগ জানালে পুলিশ এসে খতিয়ে দেখে যায় বিষয়টি। ছেলের কাছ থেকে বিষয়টি জানতে গেলে বৌমা উত্তেজিত হয়ে, মন্তব্য করেন আদতেও চুরি হয়েছে কিনা সে বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে যথেষ্ট। একথা বলার পরে পুলিশের সামনেই প্রতিবেশীদের সাথে বচসা বেধে যায়। পূর্বেই ছেলের নামে মায়ের লিখিত অভিযোগ এবং পরিস্থিতি সামাল দিতে ছেলে ছেলের বউ দুজনকেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শান্তিপুর থানা আটক করে নিয়ে যায় শান্তিপুর থানার পুলিশ। অন্যদিকে বাড়ির পাশাপাশি দুটি সিসি ক্যামেরা খতিয়ে দেখছে তারা। তবে খুব ঘনবসতিপূর্ণ এবং পাঁচিলবিহীন প্রতিবেশীরা বসবাস করার কারণে তারাও হতবাক, অন্য কেউ এ বাড়িতে প্রবেশ করে দিনের আলোয় এ ধরনের চুরি করাটা অসম্ভব। তাই তাদেরও সন্দেহের তীর ছেলের দিকেই।