মলয় দে নদীয়া:- জন্মের ছ মাস পর থেকেই জটিল রোগ থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হয় ৬ বছরের এক শিশু কন্যা। বাবা পেশায় রাজমিস্ত্রি শ্রমিক, মা সামান্য হাতের কাজ করে কোনরকম সংসার চালান, কিন্তু তাদের একমাত্র শিশু কন্যার চিকিৎসার জন্য জেলার বিভিন্ন হাসপাতালগুলিতে হন্যে হয়ে ঘুরতে হয়েছে। প্রতি মাসে দুবার করে দিতে হয় রক্ত, বিকল্প চিন্তা ভাবনা তে রাতের ঘুম উড়েছিল নদীয়ার শান্তিপুরের এক নম্বর কলোনির রাধাকৃষ্ণ পল্লী এলাকার খোকন দেবনাথের পরিবার। স্ত্রী রাখি দেবনাথ জানিয়েছেন, তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে কোনরকম সংসার চলে তাদের। তার ওপর মেয়ের চিকিৎসার খরচা সবটাই যেন মাথায় বাজ পড়ে যাওয়ার মত।
গত দুদিন আগে মেয়ের জটিল রোগ থ্যালাসেমিয়া সম্পর্কে দ্বারস্থ হয়েছিলেন শান্তিপুরের বিধায়ক ব্রজ কিশোর গোস্বামীর কাছে, তারপরে কূলকিনারা খুঁজে পান তারা। বিধায়কের প্রচেষ্টায় তার শিশুকন্যা মিষ্টু দেবনাথ কে পাঠানো হয় রানাঘাটের একজন বিশেষজ্ঞ থ্যালাসেমিয়া চিকিৎসকের কাছে। বেশ কয়েকদিন ক্যাম্পে চিকিৎসা করানোর পর শিশু কন্যা মিষ্টু দেবনাথ কে পাঠানো হয় কলকাতার এনআরএস হাসপাতালে। সেখানেও হাসপাতালে সুপারকে ফোন করে দেন বিধায়ক ব্রজ কিশোর গোস্বামী। তারপরে শুরু হয় ধাপে ধাপে প্রাথমিক চিকিৎসা। মা রাখি দেবনাথ জানিয়েছেন, বিধায়ক যদি এভাবে পাশে না থাকতো তাহলে তার মেয়ের দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা কোনদিনই হওয়া সম্ভব হতো না। তবে আগামী দিন থেকে মিষ্ঠুর সমস্ত চিকিৎসা পরিষেবা বিনামূল্যে হবে বলেই জানিয়েছেন মা, রাখি দেবনাথ, আর তাতেই বুক চাপা বেদনার ভেতরেও ফুটে উঠেছে একগাল হাসি। অন্যদিকে বিধায়ক এইভাবে পাশে থাকাতে কুর্নিশ জানিয়েছেন শিশুকন্যার মা রাখি দেবনাথ সহ গোটা পরিবার যদিও বিধায়ক ব্রজ কিশোর গোস্বামী বলেন, বিধায়ক হিসেবে আমি মনে করি এটা আমার গুরু দায়িত্ব, মানুষ চেয়েছে বলেই আজকে আমি বিধায়ক। আমার সহযোগিতায় একটা শিশু যদি প্রাণ ফিরে পেতে পারে, এর থেকে ভালো কাজ আমার মনে হয় না আর কিছু আছে। তবে ওই শিশুর শুধু থ্যালাসেমিয়ার চিকিৎসা নয় সমস্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরে চিকিৎসকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বোন ম্যারো পরিবর্তনের যে অস্ত্রোপচারের খরচা তাও বিনামূল্যে করানো হবে। সেই দায়িত্বও নেওয়া হয়েছে।