ছেলেমেয়েকে পড়ানোর অভ্যাস ! ৩৮ বছর বয়সে ছেলের সাথে উচ্চ মাধ্যমিকে বসবেন মা

Social

মলয় দে নদীয়া:- অভাব এবং সংসারের শত বাঁধা পেরিয়ে আগামী সপ্তাহে ছেলের সাথে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা বসতে চলছে বছর ৩৮ এর লতিকা মন্ডল।

 

নদীয়া জেলার শান্তিপুর হরিপুর অঞ্চলের নৃসিংহপুর নতুন সর্দার পাড়ার বাসিন্দা লতিকার স্বামী অসীম মন্ডল ভিনরাজ্যে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করেন। দুই সন্তানের মা লতিকাদেবীর বড় মেয়ে শীলা শান্তিপুর কলেজ বাংলা বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা তৃতীয় বর্ষে। কানলা মহারাজা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র সৌরভের পরীক্ষাকেন্দ্র পূর্ব বর্ধমান জেলার কালনা অম্বিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে। মা পরীক্ষায় বসতে চলেছে বাড়ির পার্শ্ববর্তী হরিপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে, যদিও তিনি একাদশ দ্বাদশ শ্রেণীতে রেগুলারের ছাত্রী হিসেবে পড়তেন নৃসিংহপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে। তবে গৃহবধূ হওয়ার কারণে স্কুলে যাওয়ার শিথিলতার বিষয়ে সহযোগিতা করেছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা।

লতিকাদেবীর বাবার বাড়ি ধুবুলিয়া‌ তে। মা অসুস্থ থাকার কারণে ষষ্ঠ শ্রেণীর বেশি পড়াশোনা করতে পারেনি তিনি, ২০০১ সালে হরিপুর নতুন সর্দার পাড়ার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বড় সন্তান মেয়েকে নিয়মিত পড়াতে বসিয়ে নিজেই অনুপ্রাণিত হয়ে যান, সাধ জাগে নতুন করে আবারো পড়াশোনা করার। মেয়ের উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর, ছেলের মাধ্যমিক দেওয়ার সাথেই তিনিও শান্তিপুর মিউনিসিপ্যাল উচ্চ বিদ্যালয়ের রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্যালয় থেকে ২০১৯-২০ সালে মাধ্যমিক পাশ করেন তিনি। মনের জোর বেড়ে যায় আরো, নৃসিংহপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে রেগুলারে ভর্তি হন তিনি। আগামী সপ্তাহে ছেলের সঙ্গেই শুরু জীবনের বড় দ্বিতীয় পরীক্ষা। পাশের ব্যাপারে যথেষ্ট আশাবাদী তারা।
ছেলের ইচ্ছা দেশ রক্ষা, মায়ের অবশ্য পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়াই প্রধান লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন।
তবে অসীম মন্ডল এর সামান্য উপার্জনে পরিবারের সংসার খরচের সাথে তিন সদস্যের পড়াশোনার সাথে সংসার খরচ জোগাড় করার সাধুবাদ জানিয়েছেন প্রতিবেশীরা। অনেকেই ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন, আগামীতে এভাবেই নতুনভাবে পড়াশোনার জীবন শুরু করার জন্য।

তবে দর্শন এবং সংস্কৃত ছাড়া বাকি, সব বিষয়ই তাদের দুজনের একই। মেয়েও বসে নেই,ভাই এবং মাকে পড়াশুনোর সহযোগিতা করছে রীতিমতো।
আমরা সংবাদ মাধ্যমের পক্ষ থেকেও তাদের জানাই কুর্নিশ। দৃষ্টান্ত হয়ে উঠুক মা ও ছেলে। অনুপ্রাণিত হোক আরো অনেক গৃহবধূ।

Leave a Reply