মলয় দে নদীয়া:-আছে ঢাক ঢোল কাঁসর, আলোর রোশনাই, পাত পেড়ে খাওয়া, পায়ে হেঁটে বরযাত্রী এলেন শান্তিপুর উড়িয়া গোস্বামী বাড়ি থেকে মতিগঞ্জ মোড়ে আতাবুনিয়া গোস্বামী লেনের মুখার্জি বাড়িতে। মুখার্জি বাড়ির কন্যা উড়িয়া গোস্বামী বাড়ির বর। বিগত প্রায় তিনশত বছরের বিরল বিবাহ বার্ষিকী চাক্ষুষ করতে, শান্তিপুরের সকলেই দোল পূর্ণিমার দিন প্রতীক্ষায় থাকেন রাস্তার দুই ধারে। ভাবছেন এত বছরের বিবাহ বার্ষিকী পালন কিভাবে সম্ভব? আসলে তারা দুজনেই ভগবান। বর হলেন মদনমোহন কনে হলেন শ্রী রাধিকা।
বহু পূর্বে, দুটি ধাতব মূর্তি একইসঙ্গে অধিষ্টান করতেন উড়িয়া গোস্বামী বাড়িতে। কোন একবার রাধিকা চুরি হয়ে যাওয়ার কারণে, কোন মন্দিরে কোন শ্রীরাধিকা একা থাকেন তা খুঁজে বের করতে সচেষ্ট হন ভক্তরা। জানা যায় শান্তিপুর মতিগঞ্জ মোড়ে আতা বুনিয়া গোস্বামী লেনে মুখার্জি বাড়িতে , শ্রী রাধিকার সাথে পুনর্বিবাহ দেওয়ার সম্বন্ধের প্রস্তাব আসে উড়িয়া গোস্বামী বাড়ির পক্ষ থেকে। মুখার্জি পরিবার রাজি হয়ে যায় একটিমাত্র শর্তে প্রতিবছর পূর্ণিমার দোলের দিন তাদের কন্যা সম রাধিকাকে, উড়িয়া গোস্বামী বাড়ির জামাতারুপী মদনমোহনকে আসতে হবে। কাটাতে হবে বেশ কিছুটা সময়, এরপর পূজা অর্চনা সেরে খাওয়া দাওয়া করে তবেই বিদায় দেবেন তারা।
তবে, পরবর্তীতে রাধিকার বাড়ির পক্ষ থেকে, মেয়ে জামাই এবং বরপক্ষকে আনতে যাওয়া এবং সকলে একসাথে ফিরে আসা একটি শোভাযাত্রায় পরিণত হয়। যা শান্তিপুরের আর এক ঐতিহ্য।
গতকালকে বিবাহ বার্ষিকীর এই অনুষ্ঠানে দুই পক্ষের মিলিয়ে প্রায় 300 জন লুচি ছোলার ডাল আলুর দম বোঁদে আহার গ্রহণ করেন।
মুখার্জি বাড়ির বর্তমান বয়সজ্যেষ্ঠা বীণাপানি মুখার্জি, বলেন , তার ঠাকুমা শাশুড়ির কাছে সোনা কথা অনুযায়ী ৮০ ৯০ বছর আগে একবার তাদের বাড়ি থেকেও শ্রী রাধিকায চুরি হয়ে যায়, বর্তমান রাধিকাকে প্রতিষ্ঠা করেন তাদের পূর্বপুরুষরা তবে দ্বিতীয়বার হলেও রীতি নিয়ম কাননে কোন পার্থক্য হয়নি এ যাবৎ কাল। পারিবারিক আর্থিক আয় উপায় , কম হয়ে যাওয়ার কারণে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন কতদিন চলবে এই সাপেক্ষ ধারাবাহিকতা।