মলয় দে নদীয়া :- কোথায় আছে যে কাটায় মাপ সে কাটাতেই শোধ! যে অন্যের উপকার করে তার কখনো ক্ষতি হয় না। এরকম এক নজিরবিহীন ঘটনা ঘটলো নদীয়ার শান্তিপুরে।
বৃদ্ধের সহযোগিতায় হাত বাড়িয়ে, হারালো টাকা মূল্যবান তথ্য সহ ব্যাগ, টোটো চালকের সততায় মাত্র দু ঘন্টার মধ্যেই ফেরত পেলেন যুবতী।
ফুলিয়া চটকা তলার কলেজ ছাত্রী মৌমিতা বসাক তার অসুস্থতার কারণে চিকিৎসা করাতে এসেছিলেন শান্তিপুর সুত্রাগড় চড়ক তলায়। ডাক্তার দেখিয়ে, শান্তিপুর ডাকঘরের উদ্দেশ্যে হরিপুর মাঝের পাড়ার টোটো চালক অনিমেষ সাধুখাঁর টোটো তে উঠেন তিনি। এই টোটোতেই অন্য আরেক বৃদ্ধ চিকিৎসা করে ফিরছিলেন তারই মতো। দুজনেই এসেছিলেন একা একা। শান্তিপুর নেতাজি মোড়ে, ওই বৃদ্ধকে নামতে সহযোগিতা করেছিলেন তরুণী আর তখনই সিটের উপর রেখেছিলেন তার হাত ব্যাগ, যার মধ্যে ছিল নগদ চার হাজার টাকা তিনটি এটিএম কার্ড এবং একটি প্যান কার্ড সহ বেশ কিছু দরকারি কাগজ । ভাড়া ওঠার পরেই দিয়ে দেওয়ার কারণে এরপর তিনি, ডাকঘর বাসস্ট্যান্ডে নামেন, ফুলিয়া ফেরার বাস ধরতে। টোটো চালক অনিমেষ বাবু, রওনা দেন বাড়ির দিকে। কিছুটা গিয়ে তিন লক্ষ্য করেন সিটের উপর একটি ব্যাগ, সেটা জমা দিতে আসেন ওই চিকিৎসকের কাছে।
অন্যদিকে মৌমতা তার ব্যাগ হারিয়ে যাওয়ার কারণে, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতৃত্ব সম্রাট নামে এক বন্ধুকে ফোন করে, সে ফোন করে শান্তিপুর শহর তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি বৃন্দাবন প্রামাণিক কে, বৃন্দাবন বাবু শান্তিপুর শহর আইএনটিইউসি সভাপতি সমিরন সাহা কে বিষয়টি জানান। অন্যদিকে অনিমেষ বাবু টোটো ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার কারণে নেতৃত্ব সমিরন বাবুকে জানান। এরপর , সকলের উপস্থিতিতে অনিমেষ বাবু মৌমিতা দেবীর হাতে তুলে দেন ওই ব্যগটি। মৌমিতা দেবী জানিয়েছেন তার হারিয়ে যাওয়া সমস্ত কিছুই বুঝে পেয়েছেন ওই ব্যাগ থেকে। সততার জন্য সাধুবাদ জানিয়েছেন টোটো চালক সহ সকল নেতৃত্বকে। তিনি আত্ম উপলব্ধি করেন, বৃদ্ধকে টোটো থেকে নামতে সহযোগিতা করে তিনি যে কাজ করেছেন, ব্যাগ ফেরত পাওয়া হয়তো তারই প্রতিদান।
টোটো চালক অনিমেষ বাবু বলেন, প্রত্যেকের কাছেই তার কষ্টার্জিত অর্থ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, ফেরত দেওয়াটাই স্বাভাবিক। যাত্রীরাই আমাদের ভগবান।এ প্রসঙ্গে শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্ব সমিরন বাবু বলেন , প্রায়শই কারণে-অকারণে টোটো চালকদের সম্পর্কে কটুক্তি করে থাকি আমরা, এই ঘটনা বলে নয়, প্রায়শই এ ধরনের সততার নজির লক্ষ্য করা যায় তাদের কাছ থেকেই।