মলয় দে নদীয়া :-দেশ ভাগের আগে নদীয়ার মহকুমা ছিল পাঁচটা রানাঘাট কৃষ্ণনগর মেহেরপুর চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া । দেশভাগের সময় নবদ্বীপ বাদ দিয়ে সমস্ত অংশটাই পড়ে গেছিল পূর্ব পাকিস্তানের মধ্যে । সেই সময়ের নদীয়ার রানী জ্যোতির্ময়ী দেবী, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ,কাবুলাহেরী, ,প্রমথ নাথ শুকুল, সাবিত্রী দাস পন্ডিত লক্ষীকান্ত মৈত্র সহ বিশিষ্ট স্বাধীনতা সংগ্রামীদের লড়াই শুরু হয় । শেষ পর্যন্ত লর্ড মাউন্টব্যাটেন এই আন্দোলনকারীদের সাথে আলোচনায় বসেন এবং তাদের আন্দোলনের কারণ কি জানতে চান।তখন আন্দোলনকারীরা বলেন যে এটা হিন্দু প্রধান জায়গা রানাঘাট শান্তিপুর কৃষ্ণনগর এটা ভারত ভূখণ্ডে থাকার কথা কিন্তু পাকিস্তানের মধ্যে পড়ে গেছে আমরা মানব না । তখন মাউন্টব্যাটেনের নির্দেশে স্যার সিরিল র্যাড় ক্লিক ম্যাপ খুলে দেখেন ভুল তারই হয়েছে এই ম্যাপ অনুযায়ী রানাঘাট এবং কৃষ্ণনগর সদর মহকুমা ভারতে থাকার কথা ।
১৮ই আগস্ট নদীয়ার রানাঘাট এবং কৃষ্ণনগর মহকুমা ভারতের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল তাই ১৮ তারিখ নদীয়ার স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালিত হয় বা ভারতভূক্তি দিবস হিসেবে ‘ | যদিও স্বাধীনতার পূর্ববর্তী সময়ে জেলার নাম ছিল নবদ্বীপ, ১৯৪৮ সালের ২৩ শে ফেব্রুয়ারি নামকরণ করা হয় নদীয়া।
সম্প্রতি নদীয়া ভাগ নামকরণে নদীয়ার কৃষ্ণগঞ্জের শিব নিবাসে সাধারণ নাগরিকরা জেলা ভাগের প্রতিবাদে সোচ্চার হন । তাই বহু বছর ধরে ভারতভূক্তি দিবস পালিত হয়ে আসলেও, এবছরে বাড়তি উন্মাদানা রয়েছে নামকরণ এবং জেলা ভাগ নিয়ে।
অখণ্ডতার লড়াইয়ে আজও তারা অনড়। মহিলাদের নৌকা বাইচ আদিবাসীদের ঝুমুর নৃত্য প্রতিবছরের মতন এ বছরে হলেও, সারাদিন এবং রাত ব্যাপী থাকছে নানান সংস্কৃতি অনুষ্ঠান। বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী হওয়ার কারণে, বিএসএফ পক্ষ থেকে ভাংরা নাচ ,ডগ শো পরিবেশিত হয় দিনের প্রথমার্ধে। সন্ধ্যায় থাকছে সুদূর মেদিনীপুর থেকে আগত সম্পূর্ণভাবে বিশেষভাবে সক্ষমদের দ্বারা পরিচালিত একটি বিচিত্রা অনুষ্ঠান।
বিএসএফের পক্ষ থেকে এই অনুষ্ঠানের অংশগ্রহণ করতে পেরে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন আয়োজক সংস্থার কাছে।
আয়োজক সংস্থার পক্ষ জানানো হয়, বর্তমানে নদীয়ার বিভিন্ন প্রান্তে আজকের দিনে স্বাধীনতা দিবস পালন করার রেওয়াজ বেড়েছে, তবে স্বাধীনত্বর পরবর্তী সময়ে শিবনিবাসে এই দিবস পালন করতে গিয়ে নানা বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছিলো।প্রশাসনিক উপস্থিতিতে আজ স্বপ্ন পূরণ হলো।