যৌনকর্মকে পেশা হিসেবে স্বীকৃতি দিল সুপ্রিম কোর্ট

Social

মলয় দে, নদীয়া:স্বেচ্ছায় কেউ দেহ ব্যবসায় যুক্ত হলে তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করতে পারবে না পুলিশ৷ কোনও ভাবে আইনি হস্তক্ষেপও করা যাবে না৷ গতকাল এমনই তাৎপর্যপূর্ণ রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট৷ শীর্ষ আদালত এই সংক্রান্ত একটি মামলায় রায় দিতে গিয়ে বলেছে, দেহ ব্যবসাও একটি পেশা এবং যৌনকর্মীদেরও সম্মান এবং সমান নিরাপত্তা প্রাপ্য৷

বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাও , বিচারপতি বিআর গভই , এবং বিচারপতি এএস বোপান্নার ডিভিশন বেঞ্চ যৌনকর্মীদের জন্য বেশ কিছু নির্দেশিকা বেঁধে দিয়েছে। ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, কোনও যৌনকর্মী কর্মক্ষেত্রে হেনস্তার শিকার হলে, তাঁকে সবরকম আইনি সহায়তা দিতে হবে।শীর্ষ আদালত এই নয়া নির্দেশিক দেশের প্রায় ৯ লক্ষ যৌন অনুমোদন উপকৃত হবে। এই আইনের জেরেই বহু যৌন নিরাপত্তা দিতে গিয়ে যৌনকর্মীদের নিয়ে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন দুর্বার হেনস্তার শিকার হয়েছে বহুবার। বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনে শুভাকাঙ্ক্ষী মানুষদের সহযোগিতায় সামাজিক প্রতিষ্ঠা এখন অনেকটাই সহজ হয়েছে। দীর্ঘ লকডাউনে তাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলো অনেকেই, রাজ্য সরকারের ক্ষেত্রেও তাদের সচিত্র পরিচয় পত্র এবং রেশন কার্ড ভোটার কার্ড প্রদান চিকিৎসা এবং বিভিন্ন রকম সচেতনতা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাদের সহযোগিতা করেছে।

রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় যৌনকর্মীরা একসাথে বসবাস করলেও কলকাতার সোনাগাছি, বর্ধমানের কানলা, এবং নদীয়ার একমাত্র শান্তিপুরে যৌনকর্মীদের সংখ্যা লক্ষণীয়। তবে নদিয়ায় কৃষ্ণনগর নবদ্বীপেও যৌনকর্মীদের লক্ষ্য করা যায়।

১৯৯২ সাল থেকে প্রত্যেকটি যৌনকর্মী পল্লীতেই দূর্বার মহিলা সমিতি তাদের সংগঠনের অফিস স্থাপন করে বিভিন্ন সেবা দিয়ে থাকে। ১৯৯৮ সালে শান্তিপুরে শাখা অফিস সূচনা হয়। গতকালকে এই সিদ্ধান্তের ফলে, খুশির জোয়ার শান্তিপুরের যৌনকর্মীদের মধ্যে। অন্যান্য পেশায় কায়িক পরিশ্রমের বদলে সহজেই অর্থ উপার্জনের প্রবণতা বাড়তে পারে এমন এক প্রশ্নে শান্তিপুর দুর্বার মহিলা সমিতির এমনি একাউন্টেন্ট কান্তি ঘোষ জানান, সম্মান মহিলাদের গর্ব যা রক্ষা করার জন্য অনেক কিছু ত্যাগ করতে পারেন। স্বেচ্ছায় কোন মহিলা এই এই পেশায় আসেন না, স্বামী পরিবার অথবা সমাজের সর্বতম লাঞ্ছনা অপমান গঞ্জনা নিয়ে বাঁচার উদ্দেশ্যেই বাধ্য হন এই পেশার সাথে যুক্ত হতে।
বিভিন্ন নেশা দ্রব্য যেমন হাতের নাগালে পাওয়ার জন্য সাধারণ মানুষ আসক্ত হন , তেমনই যৌনপল্লী থাকলে যৌন কামনা নিয়ন্ত্রণহীন অনেক পুরুষ পারিবারিক অশান্তি করেও সেখানে আসক্ত হন।

এ প্রসঙ্গে তুষার বাবু বলেন, সামাজিক ভারসাম্য রক্ষা করে যৌনপল্লী, উল্টো দিক থেকে যদি ধরা যায় তাহলে বিপত্নীক, এবং নিয়ন্ত্রণ বিহীন যৌনকামনামুক্ত পুরুষ প্রায়শই সমাজে যৌন লাঞ্ছনা এবং শ্লীলতাহানী করে থাকেন। সেক্ষেত্রে বলা যায় সমাজে মহিলারা যৌনকর্মীদের জন্যই অনেকটা সুরক্ষিত আছেন।

Leave a Reply