মলয় দে নদীয়া:- কৃষিপ্রধান বাংলায় প্রধান উৎসবগুলি হয়ে থাকে কৃষিজ ফসল ঘরে ওঠার আনন্দে। তার মধ্যে অন্যতম হলো ধান । চাল থেকে প্রস্তুত মুড়ি চিড়ে পিঠা পায়েস থেকে শুরু করে আধুনা রাইসের নানান উপকরণ। আর সে কারণেই মা লক্ষ্মীর সবচেয়ে প্রিয় গোলাভরা ধান । জাতি ধর্ম এলাকাভিত্তিক বিভিন্নভাবে এই ধান ওঠা কে কেন্দ্র করে নানান উৎসবে মাতোয়ারা থাকে বাঙালি।
যার মধ্যে অন্যতম নবান্ন। সাধারণত অগ্রহায়ণ মাসে আমন ধান পাকার পর এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। কোথাও কোথাও মাঘ মাসেও নবান্ন উদ্যাপনের প্রথা রয়েছে। নবান্ন অনুষ্ঠানে নতুন অন্ন পিতৃপুরুষ, দেবতা, কাক ইত্যাদি প্রাণীকে উৎসর্গ করে এবং আত্মীয়-স্বজনকে পরিবেশন করার পর গৃহকর্তা ও পরিবারবর্গ নতুন গুড় সহ নতুন অন্ন গ্রহণ করেন। নতুন চালের তৈরি খাদ্যসামগ্রী কাককে নিবেদন করা নবান্নের অঙ্গ একটি বিশেষ লৌকিক প্রথা। লোকবিশ্বাস অনুযায়ী, কাকের মাধ্যমে ওই খাদ্য মৃতের আত্মার কাছে পৌঁছে যায়। এই নৈবেদ্যকে বলে “কাকবলী”। অতীতে পৌষ সংক্রান্তির দিনও গৃহদেবতাকে নবান্ন নিবেদন করার প্রথা ছিলো।এই উৎসব উপলক্ষ্যে ঘরে ঘরে তৈরি হয় নতুন চালের পিঠা, ক্ষীর-পায়েস সহ নানা উপাদান। হেমন্ত নতুন ফসল ঘরে তোলার সময় এই উৎসব পালন করা হয়। হাজার বছরের পুরনো এই উৎসবটি যুগ যুগ ধরে একইভাবে পালন হয়ে আসছে নবান্ন উৎসবে গ্রামগঞ্জে আয়োজন।
নদীয়ার শান্তিপুর ব্লকের বাগআঁচড়া পঞ্চায়েতের, করমচাপুলি গ্রামে প্রায় ২০০ পরিবার স্থানীয় বহু প্রাচীন নারায়ন মন্দিরের পুজো দিয়ে থাকেন। এরপর বসু মাতা মন্দির, মনসা তলা মন্দির, ষষ্ঠীতলা মন্দিরে পুজো দিয়ে তারা আনন্দ উৎসব করে থাকেন। এই উপলক্ষে বাড়িতে আত্মীয় স্বজন প্রতিবেশী বন্ধুদের সমাগম ঘটে। এ প্রসঙ্গে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য এবং মন্দিরের পুরোহিত লোকনাথ চক্রবর্তী জানান নদীয়ার রাজ কৃষ্ণচন্দ্র রাজার এক লেঠেল এই গ্রামে বসবাস করতেন, তিনি এই মন্দির স্থাপন করেছিলেন।