মলয় দে, নদীয়া:- নিম্নচাপ, ঘূর্ণাবর্ত বা প্রবল বৃষ্টিমানে শহর, শহরতলী মফস্বলে জমা জল নয়। জেলার একটা বড় অংশ দীর্ঘদিন জল বন্দি হয়ে পড়ে। ঘরবাড়ি ভেঙে পড়া, রাস্তায় ধস, লোকালয়ে জমা জল নেমে গেলেও জলে ডোবা মাঠের ফসল ঘরে তুলতে পারে না কৃষকরা। প্রত্যেকবার সর্বস্ব জোগাড় করে মাথার ঘাম জমিতে ফেলে যেটুকু চাষ আবাদ করেন তাঁর সবটুকুই ভেসে যায় বৃষ্টির জলে। আর তাঁর সঙ্গে যোগ হয় ব্যারেজের ছাড়া জল। টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতে যখন জেরবার জনজীবন ঠিক তখনই জল ছাড়তে শুরু করে ডিভিসি। ডিভিসির এই ছাড়া জলে প্লাবিত হয় বাংলার বিভিন্ন জেলার একটা বড় অংশ। ঠিক এই পরিস্থিতির শিকার হয়েছে নদিয়ার নবদ্বীপের প্রাচীন মায়াপুর মালোপাড়া এলাকার কৃষকরা। ভাগীরথীর জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় প্লাবিত হয়েছে জমি। বিঘের পর বিঘে চাষের জমি এখন জলের তলায়। এর আগের বারেও চাষের জমি জলে ডুবে যাওয়ার ধাক্কা এখনো সামলে উঠতে পারেননি কৃষকরা। নতুন করে এই প্লাবনে আবার মাথায় হাত অধিকাংশ কৃষকদের। এবারে সেখানকার কৃষকরা তিল চাষ করেছিলেন। আপাতত জলের তলায় তিল চাষের জমি। ঠিক এর আগের প্রবল বর্ষায় গঙ্গার জল বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছিলেন সবজি চাষীরা। কোনরকমে ঘুরে দাঁড়িয়ে কেউ তিল, কেউ ভুট্টা চাষ করেছিলেন, এই আশায় যে এবার ভালো ফলন হলে ক্ষতি পুষিয়ে যাবে। কিন্তু ডিভিসি জল ছাড়ায় আবার জলের তলায় তাঁদের চাষের জমি। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মধ্যে কেউ কেউ চাষ আবাদের জন্য ব্যাংক ঋণ নিয়েছিলেন, তাঁরা কিভাবে কিস্তি শোধ করবেন এখন সেই আশঙ্কায় রয়েছে। এই দুর্দশাগ্রস্ত মানুষগুলির দিকে সরকার কি একবারও ফিরে তাকাবে?